Coronavirus in West Bengal

রাজ্যে সুস্থতার হারে উন্নতি হলেও করোনায় এক দিনে মারা গেলেন ৬০ জন

স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা রাজ্যের মধ্যে কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি, ২২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:০৭
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০ জন মারা গেলেন করোনা-আক্রান্ত হয়ে। সংক্রমণের জেরে মৃত্যুর সংখ্যায় আশঙ্কা জাগালেও বেড়েছে সুস্থতার হার। সেই সঙ্গে সামান্য হলেও উন্নতি হয়েছে সংক্রমণের পরিসংখ্যানে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যাও গোটা রাজ্যে বুধবারের তুলনায় নিম্নমুখী। তবে কলকাতাকে ছাপিয়ে ফের দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে উঠে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা রাজ্যে সবচেয়ে বেশি কোভিড-রোগীর মৃত্যু হয়েছে এ শহরেই।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা রাজ্যে মোট ৬০ জন কোভিড-রোগী মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি, ২২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। সেখানে এক দিনে ১৮ জন সংক্রমিত মারা গিয়েছেন। পাশাপাশি, হুগলিতে ৪, হাওড়া ও মুর্শিদাবাদে ৩ জন করে, কোচবিহার ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ জন করে এবং আলিপুরদুয়ার, মালদহ, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমানে ১ জন করে কোভিড-রোগীর মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে মারা গিয়েছেন ৪ হাজার ১৮৩ জন।

মৃত্যুর পরিসংখ্যান শঙ্কা জাগালেও গত ২৪ ঘণ্টায় গত কালের থেকে কম সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৯৭ জন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৮০-তে। তবে এর মধ্যে সেরে উঠেছেন ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ৬১ জন। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৯৪৮ জন সংক্রমিত। ফলে এই মুহূর্তে সংক্রিয় কোভিড-রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৩৩৬।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

গোটা রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুর পরিসংখ্যান আশঙ্কা জাগালেও ভরসা জোগাচ্ছে সুস্থতার হার। গত কালের থেকে তা সামান্য ঊর্ধ্বমুখী। এ দিন তা দাঁড়িয়েছে ৮৬.৭৭ শতাংশে। অন্য দিকে, দৈনিক সংক্রমণের হার বা পজিটিভিটি রেট-ও খানিকটা হলেও কমেছে। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, তা হল ৭.০২ শতাংশ। প্রতি দিন যত জনের কোভিড টেস্ট করানো হয় এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এই হার যত নিম্নমুখী হবে, ততই স্বস্তিজনক হবে করোনা-পরিস্থিতি।

আরও পড়ুন: ৩৩ শতাংশ দিল্লিবাসীর দেহে মিলেছে কোভিডের অ্যান্টিবডি, দাবি সেরো-সমীক্ষায়

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

সামগ্রিক ভাবে গোটা রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার আশা জাগালেও শঙ্কা বাড়াচ্ছে জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যাটা। কলকাতায় বরাবরই সংক্রমিতের সংখ্যা বেশি লক্ষ করা গিয়েছে। তবে দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে মাঝেমধ্যেই কলকাতাকে সরিয়ে শীর্ষে চলে এসেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। এ দিনও রাজ্যের সবচেয়ে বেশি ৫০৭ জন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ওই জেলায়। এর পরেই রয়েছে কলকাতা। এ শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪৭৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ৯৭৮৯৪ নতুন করোনা সংক্রমণ, মোট সুস্থ ৪০ লক্ষ পেরলো

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

এ ছাড়া, বাঁকুড়া (১০৭), পশ্চিম মেদিনীপুর (২৪০), পূর্ব মেদিনীপুর (১২২), পশ্চিম বর্ধমান (১৩৯), হাওড়া (১৮৪), হুগলি (১৫৩) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা (২৬৩)— এই সব জেলাতেই একশো বা তার বেশি করোনা-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হলসেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দুদিনের সংখ্যা এবং তার পরের দুদিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবেদৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দুদিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)


(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন