Bhangar

গ্রিডে তালা দিয়ে ভাঙড়ে অশান্তির গোয়েন্দা ইঙ্গিত

দক্ষিণ ২৪ জেলা প্রশাসন ও বারুইপুর পুলিশ-জেলা সূত্রের খবর, করোনা আবহে কর্মীদের সঙ্গে ফোনে ভার্চুয়াল বৈঠক করছেন কমিটির নেতারা।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৬:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনার জন্য ভাঙড় আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বসে নেই বলেই গোয়েন্দা সূত্রের খবর। ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পকে ফের হাতিয়ার করে দাবি আদায়ের পরিকল্পনা করছে জমি, জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। চিঠিচাপাটি ছাড়াও ফের রাস্তায় নেমে আন্দোলন, এমনকি গ্রিডের দরজায় তালা লাগিয়ে আন্দোলন জোরদার করার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ জেলা প্রশাসন ও বারুইপুর পুলিশ-জেলা সূত্রের খবর, করোনা আবহে কর্মীদের সঙ্গে ফোনে ভার্চুয়াল বৈঠক করছেন কমিটির নেতারা। সেই সব বৈঠকেই গ্রিডের দরজায় তালা লাগিয়ে আন্দোলনের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ওই সব বৈঠকের কিছু ভয়েস রেকর্ডিং গোয়েন্দাদের কাছে পৌঁছেছে। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, কমিটিরই কিছু সদস্য ওই সব ভয়েস রেকর্ডিং তাঁদের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন।

সম্প্রতি এলাকার উন্নয়ন ও বিভিন্ন ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন কমিটির মুখপাত্র অলীক চক্রবর্তী। তিনি লিখেছেন, কমিটির সঙ্গে সরকারের চুক্তি অনুযায়ী যে-ভাবে চলার কথা ছিল, বেশ কিছু দিন ধরে তা হচ্ছে না। সরকার যে-সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেগুলো কার্যকর হচ্ছে না। চুক্তির অন্যান্য বিষয় তো বকেয়া রয়েছেই। জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে-কাজটা সব চেয়ে সহজে করা সম্ভব, সেটাও হচ্ছে না। কমিটির নেতারা বলে বলে ক্লান্ত। কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বিডিও জানিয়েছিলেন, ক্ষতিপূরণ কবে দেওয়া হবে, ২ জুলাই সেটা তিনি জানিয়ে দেবেন। কিন্তু এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ, পঞ্চায়েতের কাজ এবং অন্য কোনও বিষয়েই জমি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করছেন না বিডিও। কমিটির দেওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করছে বলে অলীকবাবুর অভিযোগ। তাঁর দাবি, আমপানে সব ক্ষতিগ্রস্তকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পঞ্চায়েতের সব বিষয়ে কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাওয়ার গ্রিড সমস্যার সমাধানের সময় সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক ও ক্ষতিপূরণের চুক্তি হয়েছিল। তার কিছু অংশ এখনও রূপায়ণ করা হয়নি। অবিলম্বে তা রূপায়ণ করতে হবে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গ্রিডের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। কয়েক মাসের মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে। ফের তা বন্ধ করার জন্য কমিটি পরিকল্পনা করে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, ওই এলাকার উন্নয়ন, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বেশ কয়েক দফায আলোচনা হয়েছে। কোনও সমস্যা থাকলে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দফতরে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা), আইজি (দক্ষিণবঙ্গ), ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) ও বারুইপুর পুলিশ-জেলার সুপারকে ওই আন্দোলনের বিষয়ে সজাগ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। শনিবার সকাল থেকে পাওয়ার গ্রিডের দরজার সামনে থেকে ওই আন্দোলন সংগঠিত করা হবে বলে পুলিশকর্তাদের সতর্ক করেছেন রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের অফিসারেরা।

কমিটির নেতা অলীকবাবু বলেছেন, ‘‘আন্দোলন শুরু হলে হয়তো অনেক কিছুই হতে পারে। মানুষ বঞ্চিত এবং ক্ষুব্ধ। আন্দোলন কোন পথে যাবে, তা সময়ই বলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন