জল ঠেলে: বাসে উঠতে ভরসা ভ্যান। শনিবার আমহার্স্ট স্ট্রিটে। ছবি: সুমন বল্লভ।
বর্ষার প্রথমার্ধ কার্যত বৃষ্টিহীন কাটার পরে বলাই যায়, দক্ষিণবঙ্গে ‘ওস্তাদের মার’ দেখা গেল শেষ ভাগে। শ্রাবণের একেবারে শেষেই দিনের হিসেবে বছরের সব থেকে বেশি বৃষ্টির স্বাদ মিলেছে কলকাতায়।
বর্ষার মাঝপর্ব পার করে বৃষ্টির এই ঝোড়ো ব্যাটিংয়েই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বর্ষার বৃষ্টি ঘাটতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে ফেলা সম্ভব হচ্ছে। আজ, রবিবারও বৃষ্টির রমরমা এই তল্লাটে জারি থাকবে বলে জানাচ্ছেন আবহবিজ্ঞানীরা।
আলিপুরের আবহাওয়া অফিসের দাবি, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ, ১৪ সেন্টিমিটার। ২৪ ঘণ্টায় এতটা বর্ষণের বহর এই বর্ষায় দেখা যায়নি। এর পরে শনিবারও বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আলিপুরে বৃষ্টির পরিমাণ, ৫.৪ সেন্টিমিটার।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার বলেন, বৃষ্টিপাত জারি থাকার দু’টি লক্ষণ এখনও সুস্পষ্ট। প্রথমত, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭.৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে থাকা একটি ঘূর্ণাবর্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও লাগোয়া বাংলাদেশের উপরে অবস্থান করছে। দ্বিতীয়ত, ডাল্টনগঞ্জ, বাঁকুড়া, কৃষ্ণনগর হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত মৌসুমি অক্ষরেখাও এ দিন বহাল রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও একটি নিম্নচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন সঞ্জীববাবু। তাঁর দাবি, ‘‘রবিবারও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বীরভূম, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামে বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা।’’ আলিপুর আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসও কলকাতায় আরও এক দফা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখছেন। তবে সোমবার থেকে বৃষ্টির ভাগ কমবে।
এ দিনের বৃষ্টির ধাক্কায় দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি ঘাটতি ৩১ শতাংশে (শনিবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত) এসে দাঁড়িয়েছে। তবে কলকাতার নাগরিক-যন্ত্রণাও অব্যাহত। বালিগঞ্জ কিংবা বেহালা, ঠনঠনিয়া বা তেঘরিয়া— দীর্ঘক্ষণ জল দাঁড়িয়েছে অনেক এলাকাতেই। সুতরাং শ্রাবণের শেষে শহরের চেনা জল-ছবি ফিরে এসেছে। শ্রাবণ শেষ হলেও খাতায়-কলমে বর্ষার মেয়াদ ৮ অক্টোবর পর্যন্ত। তা আরও দীর্ঘায়িতও হতে পারে।