এখানেই কাজ শুরু হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র।
মৎস্যজীবী প্রধান পাথরপ্রতিমার সীতারামপুর এলাকায় ছোট মৎস্য বন্দর, বরফকল, জাল সারানোর কেন্দ্র তৈরির জন্য জমি চিহ্নিত করার কাজ শুরু করল প্রশাসন। সম্প্রতি সরকার অধীনস্থ বেনফিসের কর্তারা এলাকা ঘুরে দেখে জমি চিহ্নিত করে গিয়েছেন। পুরো প্রকল্পটি রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে বেনফিস।
স্থানীয় বিধায়ক সমীর জানা বলেন, ‘‘একটি ছোট মৎস্য বন্দর, বরফকল এবং জাল সারানোর কেন্দ্র তৈরির জন্য কিছু খাস জমি পাওয়া গিয়েছে। পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতি ‘নো অবজেকশন’–সহ সমস্ত নথি বেনফিসের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। আশা করছি কাজ ঠিক সময়েই শুরু হবে।’’
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাথরপ্রতিমার সীতারামপুর ঘাট থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান প্রচুর মৎস্যজীবী। সীতারামপুরে প্রায় আড়াইশো ট্রলার এবং অনেকগুলি দাঁড় টানা নৌকা রয়েছে। সীতারামপুর ঘাট সমুদ্র থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। তাই কাকদ্বীপ এবং রায়দিঘির অনেক ট্রলারও ঝড়-জল হলে এই ঘাটে এসে আশ্রয় নেয়। সব মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার মৎস্যজীবী সীতারামপুর ঘাটের উপর নির্ভরশীল। ওই এলাকায় মৎস্য বন্দরের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
এলাকা ঘুরে দেখে বেনফিসের এমডি বিধানচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘জমি চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া অনেক এগিয়ে গিয়েছে। সীতারামপুরে একটি ৫০ মেট্রিক টনের বরফকল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। যেটাকে প্রয়োজনে ১০০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন করাও সম্ভব। তৈরি হবে মাছ নিলাম কেন্দ্র। প্রয়োজনীয় নথি পাওয়া গিয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’ বর্তমানে ট্রলারের তেল নেওয়া, মাছ নামানো এবং বরফ নেওয়ার জন্য সীতারামপুরের সব ট্রলারকে হয় কাকদ্বীপ, না হলে নামখানায় যেতে হয়।
ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতা জয়কৃষ্ণ হালদারের দাবি, ‘‘সীতারামপুর থেকে সত্যদাসপুর পর্যন্ত ভাল রাস্তা আর সত্যদাসপুর-পাথরপ্রতিমার মধ্যে একটি সেতু হলে বিপণন সহজ হবে।’’ তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত মৎস্যবন্দর এবং তার সঙ্গে কিছু অনুসারী প্রকল্প যেমন বরফকল, জাল সারানোর জায়গা, জেটি তৈরি করা হবে। জেটি হওয়ার কথা স্থানীয় জগদ্দল নদী সংলগ্ন এলাকায় ইন্দ্রপুর খালের দিকে। সেগুলি তৈরির পরে সেতুর কথা ভাবা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সীতারামপুরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ বন্দর হিসেবে তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। তাতে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন বাড়বে।’’