প্রতিবন্ধীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের বিভিন্ন কাজ শিখিয়ে সমাজের মূলস্রোতে ফেরাতে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা দু’জন। ওই দম্পতির উদ্যোগেই বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে হাসনাবাদের বরুণহাটে ১৭১ জন প্রতিবন্ধীর হাতে তুলে দেওয়া হল ট্রাই সাইকেল, হুইল চেয়ার, হিয়ারিং এড, ক্র্যাচ এবং লাঠি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরুণহাট পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান মাদার আলি গাজি, বাজার কমিটির সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, সুন্দর আলি গাজি, প্রভাত হাজরা-সহ বিশিষ্টরা। কলকাতার দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও প্রতিবন্ধীদের নানা সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্যের লক্ষ্যে এ দিন হাজির ছিল।
বিপদে পড়লে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছিল নেশা। সুন্দরবন এলাকায় দর্জির কাজে যুক্ত সুন্দর আলি গাজি সেই সূত্রেই প্রতিবন্ধী মানুষের সাহায্যের খাতিরে গড়ে তোলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত ২০১১ সালে গড়ে ওঠা ওই সংগঠনের কাজ ছিল মূলত প্রতিবন্ধী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের শংসাপত্র এবং সরকারি কার্ড পেতে সাহায্য করা। পরে প্রতিবন্ধী শিশু জন্মানোর কারণ সম্পর্কে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে থাকেন তাঁরা, হাতে-কলমে কাজ শিখিয়ে স্বনির্ভর প্রকল্পের মাধ্যমে কর্ম সংস্থানেরও চেষ্টা করা হয় সংগঠনের পক্ষে। আর এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন স্ত্রী তসলিমা বিবি।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় যোগ দেয় প্রতিবন্ধী শিশুরা। সফল প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কারও তুলে দেওয়া হয়। কবিতা, গান, আবৃত্তি, নাচ-সহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনটি জেলা থেকে আসা প্রতিবন্ধী শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যোগ দেন। সুন্দর আলি ও তসলিমা বলেন, “সুন্দরবন এলাকায় বহু প্রতিবন্ধী মানুষ আছেন। তাঁদের অসহায়তা আমাদের এই পথে নিয়ে এসেছে। নিজেদের সাধ্য মতো তাঁদের পাশে থাকার লক্ষ্যে শিবির করে তাঁদের সনাক্ত করতে শুরু করি। কী ভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রোধ করা যায়, সে বিষয়ে এলাকার মানুষকে সচেতন করতে থাকি। ওঁদের স্বাবলম্বী করে তোলাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”