কংগ্রেস পরিচালিত বসিরহাট পুর-প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপোষন এবং উন্নয়ন না করার অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব আনল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের পক্ষে ৯ জন কাউন্সিলরের সই করা অনাস্থা প্রস্তাবের প্রতিলিপি তুলে দেওয়া হয় পুরপ্রধানের হাতে।
কংগ্রেসের পুরপ্রধান কৃষ্ণা মজুমদার বলেন, ‘‘এই পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের প্রতি কাউন্সিলরকে তাঁর এলাকা উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে ৪৫-৫০ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের জন্য এখনও ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা আছে। আসলে যাঁরা নিজের এলাকায় উন্নয়নের কাজ করতে পারেননি, তাঁরাই এখন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে অভিযোগ তুলছেন।’’
সম্প্রতি রবীন্দ্রভবনে বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিস আলির উপস্থিতিতে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বসিরহাট পুরসভার উপ-পুরপ্রধান অমিত দত্ত। সে প্রসঙ্গ তুলে কৃষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘কংগ্রসের টিকিটে জিতে উনি এখন তৃণমূলে যোগ দিলেন। পারলে জিতে দেখান, কত ক্ষমতা।’’
অমিতবাবু বলেন, ‘‘পুরসভার উপ-পুরপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়ে মানুষের কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দল আমাকে সেই কাজের ছিটে ফোঁটাও করতে দেয়নি। এ জন্য আমি পুরবাসীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। মানুষের কাজ করার জন্যই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’
২০১০ সালের পুরনির্বাচনে বসিরহাট পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস ১০টি, তৃণমূল ৭টি, সিপিএম ৪টি এবং সিপিআই একটি আসনে জয়ী হয়। পুরপ্রধান হন কংগ্রেসের কৃষ্ণা মজুমদার এবং উপ-পুরপ্রধান হয়েছিলেন অমিত দত্ত। পরে কংগ্রেসের এক কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এবং অমিতবাবুর দল ত্যাগ করায় বর্তমানে বসিরহাট পুরসভায় কংগ্রেসের ৮টি এবং তৃণমূলের ৯টি আসন রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের আনা অনাস্থায় কারা জিতবেন, তা অনেকটাই নির্ভর করছে বাম কাউন্সিলরদের উপর।
এ দিন অনাস্থাপ্রস্তাব জমা দেওয়ার পর বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের পার্থসারথি বসু বলেন, “দুর্নীতি, স্বজনপোষন ছাড়া কোনও রকম উন্নয়নের কাজই করেনি কংগ্রেস পরিচালত বসিরহাট পুরবোর্ড। বসিরহাটের ইছামতী নদীর পাশে থাকা তিনটি পার্কে শিশুদের খেলার সরঞ্জাম বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। খুলে নেওয়া হয়েছে ফোয়ারা। রাস্তাঘাট এবং আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের অবস্থাও তথৈবচ। একটু বৃষ্টি হলেই সর্বত্র জল জমে। এসব কারণেই এই বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে।’’