রাজ্য সড়ক অবরোধ

দুর্ঘটনা দেখেও নির্লিপ্ত পুলিশ, দাবি কাঁকসায়

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২৭
Share:

অবরোধের জেরে যানজট। নিজস্ব চিত্র।

দুর্ঘটনায় এক যুবককে আহত হতে দেখেও পুলিশের টহলদার ভ্যান তাঁকে তুলে হাসপাতালে পৌঁছে না দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে, এই অভিযোগ অশান্তি বাধল কাঁকসার রঘুনাথপুরে। মঙ্গলবার সকালে ঘণ্টা দুয়েক পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে রাখেন বাসিন্দারা। তীব্র যানজট তৈরি হয়। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু গাড়ি। পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন রঘুনাথপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বাগদি। তিনি বন দফতরের বসুধা বিট অফিসের রঘুনাথপুর কার্যালয়ের ঠিকাকর্মী। সাইকেলে করে রাস্তা পেরনোর সময়ে ইলামবাজার একটি গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যান বিশ্বজিৎ। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েক জন যাচ্ছিলেন কাজে। তাঁরা দাবি করেন, সেই সময় একটু দূরেই দাঁড়িয়েছিল পুলিশের একটি টহলদার গাড়ি। দুর্ঘটনা দেখেও গাড়িটি চলে যায়। সাহায্যের জন্য কোনও পুলিশকর্মীই এগিয়ে আসেননি। এলাকাবাসীই একটি গাড়িতে করে আহতকে কাঁকসা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জন্য পাঠান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে আহতকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই দুর্ঘটনার খবর চাউর হতেই রঘুনাথপুর, মাজুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে হাজির হন। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। রাজ্য সড়ক অবরোধ শুরু করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, এই রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় সারা রাত ধরে তোলা আদায় করে পুলিশকর্মীদের একাংশ। তার জেরে মাঝেমধ্যে তীব্র যানজট হয়। এ দিন গাড়িটি সেই যানজট কাটিয়ে তাড়াতাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করার সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু পুলিশের গাড়ি আহতের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করেই পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা যাদব বাগদি, হারু বাগদিদের অভিযোগ, ‘‘চোখের সামনে এই রকম ঘটনা দেখেও পুলিশ আসেনি।’’

Advertisement

এই রাস্তায় আগেও পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে নানা সময়ে বিক্ষোভ-অবরোধ করেছেন বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে অনেক লরি বেপরোয়া ভাবে যায়। তার জেরে দুর্ঘটনা। মাস সাতেক আগে বেলডাঙার কাছে এমনই একটি লরি তিন যুবককে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। তখনও রাস্তা অবরোধ করেন বাসিন্দারা। বছরখানেক আগে মাজুড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছেও পুলিশের তাড়া খেয়ে একটি গরুর লরি উল্টে যায় বলে অভিযোগ। তাতে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক জনের। এ দিন মাজুড়িয়ার বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় ভট্টাচার্য, কাজল রুইদাসেরা বলেন, ‘‘বিপদে পুলিশ যদি মুখ ফিরিয়ে চলে যায়, সাধারণ মানুষের কী হবে!’’

অবরোধ তুলতে কাঁকসা থানার পুলিশ পৌঁছয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সরতে চাননি। পরে পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের অবশ্য দাবি, ধাক্কা দিয়ে পালানো গাড়িটি ধরার চেষ্টা করছিল টহলদারি গাড়িটি। তবে সেটি ধরা যায়নি। পরে যখন ঘটনাস্থলে ফিরে আসে, তখন বাসিন্দারা আহতকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে চলে গিয়েছেন। তোলাবাজির কথাও পুলিশ মানতে চায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement