দুর্গাপুর কেমিক্যালস।ফাইল চিত্র।
সংস্থা থেকে লাভ হচ্ছে না। তাই দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেড বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। বুধবার ক্যাবিনেটে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর তা জানার পরেই আশঙ্কায় পড়েছেন কারখানার শ্রমিক-কর্মীরা। যদিও এ দিন বিকেল পর্যন্ত সরকারি ভাবে এই খবর তাঁরা পাননি বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান।
দুর্গাপুরকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব করে তোলার লক্ষে অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে রাজ্য ১৯৬৩ সালে দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেড গড়ে তোলে। ১৯৬৮ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। ফেনল, কস্টিক সোডা, ক্লোরিন-সহ বেশ কয়েকটি দ্রব্য তৈরি হতো এখানে। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালের পরে এই কারখানায় আর কোনও স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। পাঁচ বছরের চুক্তিতে কর্মী নিয়োগ হয়ে থাকে। তবে তার আগে যাঁরা যোগ দিয়েছেন তাঁরা সকলেই স্থায়ী কর্মী।
এ দিন ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তের খবর মেলার পরে খানিকটা আশঙ্কায় পড়েন কর্মীরা। এখানকার কর্মীদের অন্য কোনও সরকারি সংস্থায় পাঠানো হবে, নাকি এই কারখানা বেসরকারি সংস্থার হাতে দিয়ে কর্মীদের সেখানে কাজে লাগানো হবে, সেই প্রশ্ন ওঠে তাঁদের মধ্যে। স্থায়ী ও অস্থায়ী, দুই ধরনের কর্মীদের নতুন ভাবে কী করে কাজে লাগানো হবে, সে নিয়েই তাঁরা ভাবনায় রয়েছেন বলে দাবি এক কর্মীর। গৌতম বিশ্বাস নামে এক স্থায়ী কর্মী অবশ্য বলেন, ‘‘বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ কারখানায় খবরটি জানতে পারি। অনেকেই এ নিয়ে চর্চা করছিলেন। তবে ঠিক তথ্য এখনও যেহেতু কারও কাছে এসে পৌঁছয়নি, তাই এখনই দুশ্চিন্তার কারণ দেখছি না।’’ কারখানার ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানি না। তাই কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’’
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন নানা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সিটুর বর্ধমান জেলা সভাপতি বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘কারখানাটি কোনও দিনই সে ভাবে লাভজনক হয়ে ওঠেনি। কর্তৃপক্ষের অপদার্থতা ও দূরদৃষ্টির অভাবে কোনও দিনই উৎপাদন ঠিক মতো হয়নি। এখনও কারখানাটিকে লাভজনক করে তোলা সম্ভব। রাজ্য সরকার চাইলে আমরা পরামর্শ দেব।’’ শহরের আইএনটিইউসি নেতা উমাপদ দাসের বক্তব্য, ‘‘এখানে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা রয়েছে বাজারে। তা এই কারখানাকে বিলগ্নিকরণের রাস্তায় না গিয়ে কিছু অর্থ ব্যয় করে আধুনিকীকরণ করা যেতে পারত।’’ শিল্পাঞ্চলের আইএনটিটিইউসি নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘‘বিষয়টি আমি এখনও পুরোপুরি জানি না। খোঁজ নিয়ে তবেই বলতে পারব।’’