ফলক ভাঙা, পথ খুঁজে ফেরে শহর

জরুরি দরকারে দুর্গাপুরের জেএম সেনগুপ্ত রোডের ৮ নম্বর স্ট্রিটে চিকিৎসকের বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন পানাগড়ের বিমল শ্যাম। তন্নতন্ন করে খুঁজেও ৮ নম্বর স্ট্রিট না পেয়ে ভেবেছিলেন, ঠিকানাটাই হয়তো ভুল। অবশেষে এক রিকশাওয়ালার থেকে তিনি জানতে পারেন তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেটাই ৮ নম্বর স্ট্রিট।

Advertisement

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৪ ০৭:৩১
Share:

জরুরি দরকারে দুর্গাপুরের জেএম সেনগুপ্ত রোডের ৮ নম্বর স্ট্রিটে চিকিৎসকের বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন পানাগড়ের বিমল শ্যাম। তন্নতন্ন করে খুঁজেও ৮ নম্বর স্ট্রিট না পেয়ে ভেবেছিলেন, ঠিকানাটাই হয়তো ভুল। অবশেষে এক রিকশাওয়ালার থেকে তিনি জানতে পারেন তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেটাই ৮ নম্বর স্ট্রিট। ওই রিকশাওয়ালাই তাঁকে জানান, শুধু ওই রাস্তাই নয়, জেএম সেনগুপ্ত রোড থেকে বের হওয়া প্রায় সব কটি রাস্তারই নামফলকগুলি হয় ভেঙে গিয়েছে, না হয় মুখ ঢেকেছে বিজ্ঞাপনে অথবা ঝোপঝাড়ে। শহরের অন্য বড় রাস্তাগুলিরও একই অবস্থা। ফলে দুর্গাপুর শহরে এসে নিজের চেষ্টায় অজানা রাস্তা খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে দুর্গাপুরের বিভিন্ন রাস্তার পাশে কংক্রিটের ফলক দিয়ে নামকরণ করা হয়েছিল। শুধুমাত্র সিটি সেন্টার ও বিধাননগর এলাকাই নয়, শহরের বিভিন্ন গলির রাস্তার পাশেও বসানো হয়েছিল নামফলক। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রাস্তার নামকরণই করা হয়েছিল মনীষী, বিজ্ঞানী, মহাকাশযাত্রী-সহ বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে। শুধু নামই নয়, ইস্পাত নগরীর প্রধান রাস্তা বাদে অন্য রাস্তাগুলিতে নম্বর উল্লেখ করে পোঁতা রয়েছে ফলক। কিন্তু বছরের পর বছর, পুরসভার এলাকা অথবা ইস্পাতনগরী কোনও জায়গাতেই ফলকগুলি ঝাড়পোঁছ করা হয়নি। হয়নি সংস্কারও। ফলে বেশির ভাগ জায়গাতেই ফলকগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যেগুলি টিকে রয়েছে সেগুলির অবস্থাও খুব খারাপ। রোদ-জলে ক্ষয়ে গিয়ে উঠে গিয়েছে ফলকের লেখা।

শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গিয়েছে, সমস্যা প্রায় সর্বত্র। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন শহরের বাইরে থেকে আসা মানুষ। বি-জোনের জয়দেব রোডের ধারে রাস্তার ফলকটি একটি মন্দিরের রেলিংয়ের ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। ফলে বাইরে থেকে হঠাৎ করে সেটি খুঁজে পাওয়া কঠিন। একই অবস্থা বিধাননগরের একটি পরিচিত ক্লাবের সামনে। সেখানে রাস্তার নামফলকটাই ভেঙে পড়েছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশের আংশিক ভেঙে পড়া বেশ কিছু ফলক ঢেকে গিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পোস্টারের সৌজন্যে। সিটি সেন্টারের নন কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা রজতশুভ্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুধু বাইরের লোকেরা নয়। আমরাও সমস্যায় পড়ি। সব কি আর মাথায় থাকে! নাম ফলক থাকলে সহজেই চেনা যায় জায়গাটি।”

Advertisement

সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন দুর্গাপুরের মেয়র তথা স্থানীয় বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যে দফতর নামফলক লেখার কাজ করে তাদের সঙ্গে কথা বলে এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।”

কোথাও লেখা প্রায় অদৃশ্য। কোথাও সাঁটা পোস্টার। ছবি: বিকাশ মশান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement