প্রতীকী ছবি।
টিকিট নিয়ে দলের মধ্যে অসন্তোষ, একই আসনে দলের একাধিক লোকের প্রার্থী হয়ে যাওয়ার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের হয়ে ধৈর্য ধরার বার্তা দিলেন জেলা পরিষদের এক বিদায়ী সদস্য। জানালেন, তিনিও বিদায়ী সদস্য হলেও এ বারে টিকিট পাননি। কিন্তু তাতে ধৈর্যহারা নন। দল তাঁকে সংগঠনের কাজ করতে বলেছে। তিনি তাই করবেন।
আর তৃণমূলের নাগরাকাটা ব্লক সভাপতি অমরনাথ ঝায়ের এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে এখন জলপাইগুড়িতে তুঙ্গে চর্চা। অমরনাথ দাবি করেছেন, দলের এই সিদ্ধান্তে তাঁর রাগ নেই। উল্টে তিনি লিখেছেন, রাগ দেখিয়ে যাঁরা নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন, তাঁরা দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি করছেন। তিনি লিখেছেন, “আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ, রাগ দেখিয়ে দলের ভাবমূর্তি খারাপ
করবেন না। আসুন সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করি।”
এখানে দু’টি প্রশ্ন উঠেছে দলের লোকের মধ্যেই। প্রথমত, কেন অমরনাথকে এমন বার্তা দিতে হচ্ছে? জবাবে পরিসংখ্যান দেখাচ্ছেন দলের কেউ কেউ। বলছেন, জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ১৯টি আসনে তৃণমূলের টিকিটের দাবিদার ৩১ জন। গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’হাজারের কিছু বেশি আসনে দলের
প্রার্থী সংখ্যা তিন হাজারেও বেশি। পঞ্চায়েত সমিতির ৪২৩ আসনে ঘাসফুলের দাবিদার ৭৫৪ জন। বিক্ষুব্ধদের নিয়ে দলের মাথাব্যথা এতটাই যে, সোমবার মনোনয়নের বাড়তি দিনে ময়নাগুড়ি, রাজগঞ্জ, মালবাজার বিডিও অফিসে তাঁদের ঢোকা আটকাতে যুবকের দল হাজির ছিল বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় শান্তির বার্তা না দিয়ে উপায় কি?
দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই বার্তার আড়ালে অমরনাথ কি নিজেই বিক্ষুব্ধ? তৃণমূলের একাংশের তেমনই দাবি। অমরনাথ পোস্টের শুরুতেই লিখেছেন, “দলের জেলা সভাপতি আমাকে জেলা পরিষদের টিকিট না দিয়ে দলের কাজ করতে বলেছেন। আমি তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে দলের ভাবমূর্তি খারাপ করিনি।”
অমরনাথের অনুগামীদের দাবি, পোস্টে নিজের টিকিট না পাওয়ার কথা লিখে ঘুরিয়ে আসলে ক্ষোভই জানিয়েছেন। অমরনাথ অবশ্য বলেন, “দল হয়তো মনে করে, আমি ব্লকের নেতৃত্ব ভাল দিচ্ছি। ভোট চুকে গেলে নিশ্চয়ই আরও দায়িত্বশীল, সম্মানজনক পদ দেবে। এতে রাগের কি আছে!”
তৃণমূল জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “দলের নানা কৌশল থাকে। হয়তো একাধিক কেন্দ্রে একাধিক ব্যক্তিকে মনোননয়ন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রত্যাহারের সময়ে দলের নির্দেশে অনেকে মনোনয়ন ফিরিয়ে নেবেন। আমাদের দলে বিক্ষুব্ধ কেউ নেই।”