হাসনাবাদের নারায়ণপুরে ভস্মীভূত সেই বাড়ি।—নিজস্ব চিত্র।
রান্নার সময় অসাবধানতায় উনুনের আগুন ছিটকে ভস্মীভূত হল তিনটি ঘর ও একটি পোলট্রি ফার্ম। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে এক শিশুকন্যার। বৃহস্পতিবার রাতে বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার আশাড়িয়া-নারায়ণপুর গ্রামে ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। স্থানীয় মানুষজনই জল ঢেলে আগুন নেভান। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারা এগিয়ে না এলে আরও বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারত। অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর জখম ইরিনা খাতুনকে (২) বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুর গ্রামে দরমার বেড়া ও প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া মাটির ঘরে স্ত্রী ও তিন মেয়েকে নিয়ে থাকতেন পেশায় দিনমজুর মজিজুল গাজি। পাশেই একটি ঘরে থাকতেন তাঁর ভাই। অন্য পাশে ছিল রওশন আলির পোলট্রি ফার্ম। ঘরের মধ্যেই রান্নার জন্য জ্বালানি হিসাবে শুকনো সরষের গাছ জড়ো করে রেখেছিলেন মজিজুলের স্ত্রী শেহনাজ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে রান্না করছিলেন শেহনাজ। কাছেই জলসা দেখতে গিয়েছিলেন বাড়ির পুরুষেরা। ঘরে মশারির মধ্যে ঘুমিয়েছিল ইরিনা। বাকি দুই মেয়ে সাবিকুন ও সানিয়া ঘরের সামনে বারান্দায় পড়ছিল। রান্নার সময় হঠাৎই আগুন ছিটকে গিয়ে ঘরে জড়ো করে রাখা শুকনো সরষে গাছে আগুন ধরে যায়। মূহূর্তের মধ্যে তা দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে। শেহনাজ বলেন, “আগুন জ্বলতে দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ি। কোনওরকমে সাবিকুন ও সানিয়াকে সরিয়ে দিয়ে ছোট মেয়েকে ঘর থেকে বের করতে যাই। কিন্তু তখন আগুন এতটাই ছড়িয়ে গিয়েছে যে ঘরে ঢোকা যাচ্ছিল না। আশপাশের লোকেরা ছুটে এসে আমাকে সরিয়ে নিয়ে যায়। চোখের সামনে পুড়ে গেল মেয়েটা। বাঁচাতে পারলম না।’’ আর কান্না চাপতে পারলেন না শেহনাজ।