এত দিন শুধু পুজোর ভিড় নিয়েই মাথা ঘামাত পুলিশ। এ বার থেকে লালবাজারের মাথায়ও ঢুকছে পুজোর থিম। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, থানার ওসিদের শহরের পুজোর থিমের উপর নজর রাখতে বলেছেন শীর্ষকর্তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই নয়া নির্দেশের পিছনে রয়েছে গত বছরের ‘বড় দুর্গার’ শিক্ষা। গত বছরের পুজোয় জনমানসে আকর্ষণ ছিল দেশপ্রিয় পার্কের বড় দুর্গা। সেই সুবাদে এমন ভিড় হয়েছিল যে ষষ্ঠীর রাতে দক্ষিণ কলকাতা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। শেষমেশ বাধ্য হয়ে ওই মণ্ডপে দর্শকদের ঢোকা বন্ধ করে দেয় লালবাজার। এমনকী ওই পুজো যে নির্দিষ্ট নিয়ম মানেনি, সে কথাও জানিয়ে দেন পুলিশকর্তারা।
পুজোর শহরে গাড়ি ও লোকের ভিড় সুষ্ঠু ভাবে সামাল দিতে কলকাতা পুলিশের কৃতিত্ব দেশের মধ্যে স্বীকৃত। কিন্তু গত বছর দেশপ্রিয় পার্কের ভিড় সামলাতে কলকাতা পুলিশ যে ভাবে নাকানি-চোবানি খেয়েছিল, তাতে সেই সুনামে কালির ছিটে লেগেছিল। পুলিশকর্তাদের অবশ্য যুক্তি ছিল, পরিস্থিতি যে এত খারাপ হবে, তা আঁচ করতে পারেননি তাঁরা। প্রশ্ন উঠেছিল, অগস্ট মাস থেকে বড় দুর্গার বিজ্ঞাপন-প্রচার চলতে থাকলেও লালবাজার আঁচ করতে পারল না কেন? কী ভাবেই বা নিয়ম না মেনেও মণ্ডপ তৈরি করতে পারল ওই পুজো কমিটি? সরাসরি সদুত্তর দিতে না পারলেও পুলিশকর্তাদের অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, থিম কী হচ্ছে, তা নিয়ে সচেতন ছিলেন না স্থানীয় থানা বা ডিভিশনের অফিসারেরা।
লালবাজারের খবর, শুক্রবার ক্রাইম বৈঠকে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি নিয়ে কথা উঠতেই গত বছরের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ পাড়েন শীর্ষকর্তারা। তবে নির্দিষ্ট কোনও পুজোর নাম না করেই বলা হয়, গত বছরের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য সক্রিয় হতে হবে। ইতিমধ্যেই শহর জুড়ে নানা পুজোর ব্যানার-ফ্লেক্স পড়তে শুরু করেছে। প্রায় প্রতি রবিবারই খুঁটিপুজো হচ্ছে শহরের নানা প্রান্তে।
এই পরিস্থিতিতে কোন ক্লাব কী থিম করছে, কী ভাবে সেই মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে, সবই নজরে রাখতে হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওসিদের থেকে
এই ‘থিম চর্চা’র বার্তা ইতিমধ্যেই
পৌঁছে গিয়েছে নীচুতলার কর্মীদের কাছেও। স্বাধীনতা দিবস পেরোলেই থিমের খবর সংগ্রহে কোমর বেঁধে নেমে পড়বেন পুলিশকর্মীরা।