মন্ত্রী চার, কিন্তু নজরে দুই

এক শহর, চার মন্ত্রী। সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে এমনই চার ভিভিআইপি-কে ঘিরে সরগরম শিলিগুড়ি। এক মন্ত্রীকে আনতে এনজেপি ছুটছে হুটার বাজানো গাড়ি। অন্য জন বিমানবন্দর থেকে সোজা গেলেন উত্তরকন্যায়। কোচবিহার থেকে তৃতীয় মন্ত্রী সাইরেনের অভিঘাত ছড়িয়ে দিয়ে ঢুকে পড়লেন শিলিগুড়িতে। পৌঁছে গেলেন চতুর্থ মন্ত্রীও। তার পর কখনও উত্তরকন্যায় টানা বৈঠক, কখনও বা মৈনাক টুরিস্ট লজে। এই চমক-দমকে দিনভর মানুষের সব থেকে বড় কৌতূহল ছিল, নতুন আর প্রাক্তনে কি দেখা হবে? প্রহর গড়িয়ে যখন প্রায় রাত ন’টা, এক সংবর্ধনা সভায় এসে মঞ্চে উঠে শিলিগুড়িবাসী মন্ত্রী গৌতম দেবকে জড়িয়ে ধরলেন কোচবিহারের দীর্ঘদেহী মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। ব্যস্ত থাকলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও জেমস কুজুরও। দিনভর এই ব্যস্ততা, মানুষের প্রশ্ন এবং মন্ত্রীদের জবাব শুনলেন কিশোর সাহাএক শহর, চার মন্ত্রী। সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে এমনই চার ভিভিআইপি-কে ঘিরে সরগরম শিলিগুড়ি। এক মন্ত্রীকে আনতে এনজেপি ছুটছে হুটার বাজানো গাড়ি। অন্য জন বিমানবন্দর থেকে সোজা গেলেন উত্তরকন্যায়। কোচবিহার থেকে তৃতীয় মন্ত্রী সাইরেনের অভিঘাত ছড়িয়ে দিয়ে ঢুকে পড়লেন শিলিগুড়িতে। পৌঁছে গেলেন চতুর্থ মন্ত্রীও। তার পর কখনও উত্তরকন্যায় টানা বৈঠক, কখনও বা মৈনাক টুরিস্ট লজে। এই চমক-দমকে দিনভর মানুষের সব থেকে বড় কৌতূহল ছিল, নতুন আর প্রাক্তনে কি দেখা হবে? প্রহর গড়িয়ে যখন প্রায় রাত ন’টা, এক সংবর্ধনা সভায় এসে মঞ্চে উঠে শিলিগুড়িবাসী মন্ত্রী গৌতম দেবকে জড়িয়ে ধরলেন কোচবিহারের দীর্ঘদেহী মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। ব্যস্ত থাকলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও জেমস কুজুরও। দিনভর এই ব্যস্ততা, মানুষের প্রশ্ন এবং মন্ত্রীদের জবাব শুনলেন কিশোর সাহা

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৬ ০৭:৫৯
Share:

প্রাক্তন ও বর্তমান। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ছেড়ে পর্যটনে আসা গৌতম দেব ও দফতরের নতুন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক ।

কথায় কথায়

Advertisement

উত্তরকন্যায় সিদ্ধান্ত

Advertisement

১। অসুস্থতা, পারিবারিক কারণে এক-দু’দিন অনুপস্থিত থাকলেও চা শ্রমিকদের প্রাপ্য রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা হবে।

২। চা শ্রমিকদের রেশনে নিম্নমানের চাল মেশালে কড়া ব্যবস্থা। আগামী মাস থেকে চা বাগানে গমের পরিবর্তে আটা দেওয়া হবে।

৩। চা শ্রমিকদের সমস্যার সমাধানের জন্য চা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইন বদলের জন্য দাবি জোরালো করা হবে।

৪। বাগানে রেশন বিলির কাজে আরও বেশি সংখ্যক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে নিযুক্ত করা হবে।

৫। ২৫ জুন থেকে সহায়ক দামে ধান কেনা শুরু হবে। লক্ষ্য ৪৫ লাখ মেট্রিক টন। ইতিমধ্যেই ৩৫ লাখের মতো কেনা হয়েছে। বাকিটা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

(হাজির ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও জেমস কুজুর)

মৈনাক ট্যুরিস্ট লজে সিদ্ধান্ত

১। কোচবিহার, মালদহ, দুই দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ারকে নিয়ে নতুন পর্যটন সার্কিট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

২। জঙ্গলমহল এবং অযোধ্যা পাহাড়কে ঘিরে নতুন পর্যটন সার্কিট।

৩। বাগডোগরা বিমানবন্দর এবং শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড় এলাকায় পর্যটন দফতরের অব্যবহৃত জমিতে ওয়েসাইড ইন, রেস্তোরাঁ, রেস্টরুম, যোগ সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা। দু’টি এলাকাই জাতীয় সড়কের পাশে।

৪। মৈনাক অতিথি নিবাসের সংস্কার, খাবারের মান বাড়ানো, বিয়ের হলের ভাড়া কমানো, ল্যান্ডস্কেপিং ছাড়াও সমস্ত লজ পেশাদার মনোভাব নিয়ে চালানো হবে।

(হাজির গৌতম দেব)

এক জন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী। অন্য জন বর্তমানে দায়িত্বে। দু’জনে একই শহরে। তবু গৌতম-রবির দেখা হতে এত রাত হল কেন?

সূত্র বলছে, উত্তরকন্যার চা সংক্রান্ত বৈঠকে আমন্ত্রিত হননি পর্যটনমন্ত্রী। তবে পরে গৌতমবাবুর কলেজপাড়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। সেই মতো সন্ধ্যায় প্রায় ৪০ মিনিট অপেক্ষা করেন গৌতমবাবু। রবীন্দ্রনাথবাবু মিটিঙে ব্যস্ত তাকায় সময়ে যেতে পারেননি। পরে তিনি সেখানে যান। তত ক্ষণে গৌতম চলে গিয়েছেন সংবর্ধনা সভায়। সেখানে গিয়ে প্রাক্তনের সঙ্গে দেখা করেন বর্তমান।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তৈরি করিয়েছিলেন উত্তরকন্যা। পর্যটনমন্ত্রী হয়ে শহরে ফিরে সেখানে পা দিলেন না কেন?

‘উত্তরকন্যায় প্রাথমিক ভাবে ২৩টি দফতরকে ঘর দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ঠিক করে। সেই তালিকায় পর্যটন দফতর ছিল না। এ বার পর্যটন দফতরের জন্য জায়গা চাওয়া হবে।’

গৌতম দেব। পর্যটনমন্ত্রী

চা বাগান নিয়ে বৈঠক। অথচ মালিকপক্ষের কোনও প্রতিনিধিকেই ডাকা হল না কেন?

‘এটা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে সব পক্ষকেই ডাকা হবে। সকলকে নিয়েই চলব আমরা।’

রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী

চা বাগানের অর্থনীতি জোরদার করতে ‘টি-ট্যুরিজম’ নিয়ে সরকার উদ্যোগী। তা হলে উত্তরকন্যার সঙ্গে পর্যটন দফতরের সমন্বয় থাকবে না কেন?

উত্তরকন্যার সূত্র বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে টি-ট্যুরিজম নিয়ে বৈঠক ডাকা হবে।

গৌতম দেবের নিজের শহর শিলিগুড়িতে তৃণমূল হেরেছে। জেলায় একটি আসনও পায়নি। তার পরে মন্ত্রীকে ঘিরে বাইক মিছিল, সংবর্ধনায় ভিড়। এতই যদি উদ্দীপনা, তা হলে ভোটে জেতা যায়নি কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলেই।

‘শিলিগুড়ি তথা দার্জিলিং জেলায় ভোটে কাঙ্ক্ষিত ফল হয়নি। এখন ‘ডু অর ডাই’ মনোভাব নিয়ে আমাদের চলতে হবে। তবে মানুষকে নিয়ে চলব। চটহাট থেকে সান্দাকফু, সর্বত্রই যাব।’

গৌতম দেব। পর্যটনমন্ত্রী

সহ-প্রতিবেদন কৌশিক চৌধুরী, সৌমিত্র কুন্ডু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement