ভোররাতে ভস্মীভূত ৫টি দোকান

তুলাপট্টির বেশিরভাগ দোকান টিনের ও কাঠের। দোকানগুলোর উপর দিয়ে মাকড়শার জালের মতো বিদ্যুতের তার চলে গিয়েছে। পোস্ট থেকে বিভিন্ন দোকানে বিদ্যুত সংযোগের তার ঢুকেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৯
Share:

ভয়াবহ: পুড়ে গিয়েছে দোকান। শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ভোররাতের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বিধান মার্কেটের পাঁচটি দোকান। রবিবার ভোর ছ’টা নাগাদ শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটের তুলাপট্টির ঘটনা। দমকলের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

এ দিন ভোরে মার্কেটের এক নিরাপত্তারক্ষী এক দোকান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। চিৎকার শুরু করতেই ছুটে আসেন আশেপাশের লোকজন। টেলিফোন করে খবর দেওয়া হয় ব্যবসায়ীদের ও দমকলকে। চারটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ।

তুলাপট্টির বেশিরভাগ দোকান টিনের ও কাঠের। দোকানগুলোর উপর দিয়ে মাকড়শার জালের মতো বিদ্যুতের তার চলে গিয়েছে। পোস্ট থেকে বিভিন্ন দোকানে বিদ্যুত সংযোগের তার ঢুকেছে। তারের জটলা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন দমকল কর্মীদের কেউ কেউ। শিলিগুড়ি দমকল কেন্দ্রের আধিকারিক ডিবি থাপা জানান, বিধান মার্কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। তিনি জানান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। সবদিক খতিয়ে দেখা হবে।

Advertisement

লীলাকান্ত সাহা দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করেন তুলাপট্টিতে। দোকানে ১২ লক্ষ টাকারও বেশি মূল্যের কাপড় ছিল। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর পুজোয় ভাল ব্যবসা হয়নি। শীতের কাপড় তুলেছিলাম। সমস্ত মাল পুড়ে গিয়েছে। কী ভাবে সংসার চালাব ভাবতে পারছি না।’’ তুলাপট্টিতেই সুমিত আগরওয়াল, লিটন সাহার পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা। তাঁরা জানান, দোকানে ৩০ লক্ষ টাকারও বেশি কাপড় ছিল। আগুনে পুড়ে গিয়েছে সৌগত চট্টোপাধ্যায়ের দোকানও। তিনি বলেন, ‘‘চলতি বছরে বিধান মার্কেটে চারবার আগুল লাগল। তারপরও বাজার কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’

বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি সাহা জানান, বাজারের দোকানগুলো বহু পুরনো। পার্কিং ব্যবস্থা নেই, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও নেই। তিনি বলেন, ‘‘অন্য সমস্যা নিয়ে এসজেডিএকে জানানো হয়েছে। কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসারদের ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে থাকা তারও দেখানো হয়েছিল।’’

বিধান মার্কেট এসজেডিএ-র অধীনে রয়েছে। এসজেডিএ-র আধিকারিকদের একাংশ জানান, বাম আমল থেকে গোটা বাজারটি ভেঙে নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তৃণমূল আমলেও তার চেষ্টা হয়েছিল। একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রী, আমলা’রা পরিদর্শন করেছেন। আধিকারিকদের দাবি, ব্যবসায়ীদের নানা দাবি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। নকশা নিয়েও আপত্তি ছিল ব্যবসায়ীদের একাংশের, এমনই দাবি আধিকারিকদের। যদিও ব্যবসায়ীদের পাল্টা দাবি, যে নকশা দেখানো হয়েছিল, তাতে পরে ব্যবসা করা নিয়ে সমস্যা হতে পারে।

এসজেডিএ মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক এস পুন্নম বলম বলেন, ‘‘বিধান মার্কেটে আগুন লাগার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নিয়ম অনুসারে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে দোকান সংস্কার করা যেতে পারে।’’ এ দিকে পুলিশ জানিয়েছে আগুন লাগার কারণ জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement