বাঁশঝাড়ে আশ্রয় নিল গন্ডার। সোমবার আলিপুরদুয়ারের পূর্ব সিমলাবাড়িতে। ছবি: নারায়ণ দে।
রবিবার বিকেল থেকেই চেষ্টা শুরু হয়েছিল। কিন্তু জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের চারটি গন্ডারকে সোমবার রাত পর্যন্ত জঙ্গলে ফেরাতে পারল না বন দফতর। তোর্সা নদীর দুই ধারে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের যে বিস্তীর্ণ এলাকা রবিবার প্লাবিত হয়েছিল, সেখানে থাকা বাকি বন্যপ্রাণীরা কী অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়েও চিন্তায় বনকর্তারা। উত্তরের বনাঞ্চলের পরিস্থিতি দেখতে পৌঁছন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা।
জলদাপাড়া এবং বক্সার জঙ্গলে পর্যটন সংক্রান্ত সব কর্মকাণ্ড আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। গরুমারা জাতীয় উদ্যান থেকে রবিবার একাধিক বন্যপ্রাণী ভেসে যায়। একটি গন্ডারের মৃত্যুও হয়েছিল। গরুমারা জঙ্গলে তৃণভোজী প্রাণীদের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি। বন্যায় তাদের খাদ্যসঙ্কটের আশঙ্কা রয়েছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি বন দফতরের।
বন দফতর সূত্রে খবর, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের অনেক জায়গায় জল নামলেও পলি জমে রয়েছে। ফলে, হাতির পিঠে চেপে সেখানে টহলও দেওয়া যাচ্ছে না। তবে তোর্সা নদীর দুই পাশে জলদাপাড়ার যে সব এলাকা প্লাবিত হয়েছিল বা এই মুহূর্তে পলি জমে রয়েছে, সেখানে এ দিন দু’টি ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালায় বন দফতর। উত্তরবঙ্গের বনপাল জে ভি ভাস্কর বলেন, “জলদাপাড়ার যে সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে, সেখানে নজরদারি চলছে। মঙ্গলবার থেকে এই কাজে গতি আরও বাড়ানো হবে।”
বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে বন দফতরকে চিন্তায় রেখেছে চোরাশিকারের সম্ভাবনাও। বনাঞ্চল থেকে প্রাণীরা বেরিয়ে আসছে, সে খবর ছড়িয়েছে চারদিকে। তাই জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় অচেনা গতিবিধির উপরেও নজরদারির নির্দেশ এসেছে। রবিবার জলমগ্ন বিভিন্ন এলাকায় হাতির দল আটকে পড়েছিল। বন দফতর সূত্রে খবর, হাতির দলও এখনও জঙ্গলে ফেরেনি। জঙ্গল লাগোয়া এলাকাতেই রয়েছে।
এ দিন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে যান মন্ত্রী বিরবাহা। তিনি বলেন, “জলদাপাড়া বা গরুমারায় বন্যপ্রাণীরা কী অবস্থায় রয়েছে, সেটাও দফতরের কর্মীরা খতিয়ে দেখছেন। এখনও পর্যন্ত গরুমারায় একটি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। নদীতে জলস্ফীতির জেরে কয়েকটি গন্ডার বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। দ্রুত তাদের জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তোর্সা নদীর জলে জলদাপাড়া জঙ্গল থেকে ভেসে যাওয়া চারটি গন্ডারের একটি এই মুহূর্তে কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি এলাকায় রয়েছে। বাকি তিনটি রয়েছে আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের শিলবাড়িহাট, মেজবিল ও কাঠালবাড়ির কাছে পূর্ব শিমলাবাড়ি এলাকায়। তার মধ্যে তিনটি গন্ডারই রয়েছে লোকালয়ে। ফলে, সে সব এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কও রয়েছে।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে