আদালতের সরকার অনুমোদিত আইনজীবী (পিপি) পদে ইসলামপুর আদালতের আইনজীবী মুক্তার আহমেদ যোগ দিলেও তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ইসলামপুর আদালতের সদ্য দায়িত্ব থেকে অপসৃত পিপি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী করিম চৌধুরীর ভাই কাইজার চৌধুরীর কাছ থেকে সমস্ত দায়িত্ব বুঝে পাওয়ার কথা ছিল মুক্তারবাবু। তবে আদালত সূত্রে খবর, এ দিন আদালতেই যাননি সরকারি পক্ষের ওই আইনজীবী কাইজার চৌধুরী। কাজেই এ দিনও আদালতে গিয়েই দায়িত্ব বুঝে পান নি মুক্তার আহমেদ।
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরই ইসলামপুর আদালতে সরকারি পক্ষের আইনজীবী (পিপি) হন তৎকালীন জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রীর ভাই কাইজার চৌধুরী। তারপর থেকেই সেখানেই সরকারি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন তিনি। তবে নেতৃত্বের একাংশের দাবি, সরকারি আইনজীবী হলেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি প্রাক্তন মন্ত্রী করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কাইজার চৌধুরীর ছেলে আলতামাস চৌধুরী। এরপরই সম্প্রতি কাইজারবাবুকে সরিয়ে সেখানে দায়িত্ব পান গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রীর এক আত্মীয় তথা ইসলামপুর আদালতের আইনজীবী মুক্তার আহমেদ। দুর্গাপুজোর পরই তিনি কাজে যোগ দিলেও তার পর থেকে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
মুক্তারবাবুর দাবি, পুজোর ছুটি চলাকালীন আদালত (ভ্যাকেশন কোর্ট) সময় তিনি কেস ডাইরি বাইরে থেকে গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় আদালতের কাজও করতে পেরেছিলেন তিনি। কিন্তু ২ নভেম্বর দায়িত্ব দেওয়ার কথা থাকলেও কাইজারবাবু আসেননি। এর ফলে মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হন তিনি।
তবে ইসলামপুর আদালতের আইনজীবীদের অনেকেই জানিয়েছেন, আদালতের ওই দায়িত্ব নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে তাদের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকী এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে সাধারণ মানুষের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে। মুক্তারবাবুর দাবি, ‘‘ওঁনার কাছে অনেক গুরত্বপূর্ণ মামলার কেস ডায়রি রয়েছে। যা পাওয়াটা খুবই জরুরি। সরকারি ভাবে অনুমতি ছাড়া কোথাও যাওয়া উচিত নয় সরকারি আইনজীবীদের।’’
অপর দিকে বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার কাইজার চৌধুরীকে ফোন করা হলেও তিনি নিজের ফোনটি বন্ধ রাখায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে কাইজার চৌধুরীর ছেলে আলতামাস বাবুর বলেন, ‘‘বাবা বাইরে রয়েছেন। ৭ নভেম্বর তাঁর ফেরার কথা রয়েছে। সেই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।’’ তবে সরকারি ভাবে নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের জেলা শাসক আয়েশা রানি বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে ইতিমধ্যে মহকুমা শাসকের মাধ্যমে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওঁর সঙ্গেও ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে ফোন বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।’’