এক বছরে বদলে গিয়েছে ছবি

গত বছর ১৫ জানুয়ারি শিলিগুড়ি মহিলা কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেয়েরা তাঁকে ঘিরে মারধর করে। যাঁদের হাতে সে বার মার খেতে হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে নিয়েই তিনি এ বার এসএফআই-এর মেয়েদের মারধর করলেন, শাসালেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:১০
Share:

জানুয়ারি ২০১৪। টিএমসিপি সমর্থকরদের মার ইন্দ্রাণীকে (বাঁ দিকে)।- ফাইল চিত্র।

গত বছর ১৫ জানুয়ারি শিলিগুড়ি মহিলা কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেয়েরা তাঁকে ঘিরে মারধর করে। যাঁদের হাতে সে বার মার খেতে হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে নিয়েই তিনি এ বার এসএফআই-এর মেয়েদের মারধর করলেন, শাসালেন বলে অভিযোগ। তিনি শিলিগুড়ি মহিলা কলেজের ইংরেজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইন্দ্রাণী সরকার। বর্তমানে তিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ওই কলেজের অন্যতম সদস্য। অভিযোগ, তাঁর হাতে মারধরে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী এসএফআই নেত্রী তথা কলেজের ছাত্র সংসদের বিদায়ী কমিটির সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা রায়, জয়া বিশ্বাস এবং পল্লবী মোদক। সন্ধ্যায় তাঁদের হাসপাতাল থেকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

ইন্দ্রাণীর অবশ্য দাবি, এসএফআই-এর ওই ছাত্রীরা কলেজের সামনে এসেই তাঁকে শাসাতে থাকে। কেন তিনি এসএফআই ছেড়ে চলে এসেছেন সেই প্রশ্ন তুলে মারধর করতে থাকে। তিনি বলেন, “প্রথম বর্ষের ছাত্রীরা যাতে মনোনয়ন তুলতে পারে তার জন্য আমরা কয়েকজন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তদারকি করছিলাম। সেই সময় প্রিয়ঙ্কা এবং অন্যরা এসে আমি কেন এসএফআই ছেড়েছি তার জন্য মারধর শুরু করে। নিজেকে বাঁচাতে আমি হাত চালিয়ে ওদের সরাতে চেষ্টা করেছি।”

জানুয়ারি, ২০১৫। টিএমসিপির হয়েই এসএফআইয়ের মেয়েদের
সঙ্গেই মারধরে জড়ালেন তিনি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

Advertisement

জখম এসএফআই-ছাত্রীদের অভিযোগ, এ দিন তাঁরা মনোনয়ন তুলতে গেলে তাদের প্রাক্তন সদস্য ইন্দ্রাণী লোকজন নিয়ে গিয়ে বাধা দেয়। প্রিয়ঙ্কা-সহ জনা ছয়েক ছাত্রীকে গেটে আটকে দেয় তারা। তৃণমূলের লোকজন ‘ধর ধর মারমার’ করে তেড়ে আসে বলে অভিযোগ। প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, জলের বোতল দিয়ে ইন্দ্রাণী তাঁর মাথায় মারেন। চশমা খুলে তা দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেয়েদের নিয়ে এসএফআই-এর অন্য ছাত্রীদের উপর ওরা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মাটিতে ফেলে প্রিয়ঙ্কাকে তাঁরা বেধড়ক পেটায়। কোনও রকমে তাদের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে কলেজের ভিতরে ঢুকতে গেলে প্রিয়ঙ্কা, জয়াদের ফের টেনে এনে মারধর শুরু করা হয়। পরে মহিলা কনস্টেবলরা গিয়ে প্রহৃত এসএফআই ছাত্রীদের টেনে হিঁচড়ে কোনও রকমে কলেজের ভিতরে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। তাতে ইন্দ্রাণী পায়ে চোট লেগেছে বলে দাবি করেন।

কী ভাবে ঘটল এই পরিবর্তন? সংগঠন সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বছর কলেজ নির্বাচনেও এসএফআই’য়ের সক্রিয় কর্মী ছিল ওই ছাত্রী। গত বছর কলেজ নির্বাচনে তাকে মারধরের পর তা নিয়ে হইচই পড়ে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় তাঁকে নানা ভাবে হুমকিও দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর পাড়াতেই বাড়ি নির্ণয়বাবুর। এর পর ক্রমশই পরিস্থিতি বদলায়। তৃণমূলে যোগদান করে ওই ছাত্রী। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অন্যতম নেত্রী হয়ে ওঠেন ওই ছাত্রী। নির্ণয়বাবু বলেন, “ইন্দ্রাণীই আক্রমণের শিকার হয়েছে। সে কাউকে মারতে যায়নি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement