মিতা মণ্ডল।
পেরিয়ে গিয়েছে পাঁচ দিন। কিন্তু উলুবেড়িয়ার গৃহবধূ মিতা মণ্ডলকে খুনে অভিযুক্ত তাঁর শাশুড়ি এবং দেওরকে এখনও গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। সঠিক তদন্ত এবং ওই দু’জনকে গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার গড়িয়ায় মিছিল করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিতার প্রাক্তন সহপাঠীরা। গড়িয়ার শান্তিনগরে মিতার বাপের বাড়ি।
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। সুরতহাল এবং ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দ্রুত পাওয়ার জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পলাতক দুই অভিযুক্তকেও শীঘ্রই ধরা হবে।’’
দশমীর ভোরে ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে উলুবেড়িয়ার কুশবেড়িয়ার বাসিন্দা, বছর চব্বিশের মিতার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মাস ছয়েক আগে কুশবেড়িয়ার রানা মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। মিতার দাদা খোকন দাস পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, বোনকে খুন করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মিতার স্বামী রানা ও শ্বশুর বিজেন্দ্রবাবুকে সে দিনই গ্রেফতার করলেও ধরতে পারেনি শাশুড়ি এবং দেওরকে। রানারা খুনের অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছিলেন, মিতা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হতে গিয়েছিলেন। তাঁরাই তাঁকে তারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, নবমীর রাতে স্বামীর সঙ্গে ঠাকুর দেখাকে কেন্দ্র করে বিবাদ হয় মিতার। তবে খুন না আত্মহত্যা— কী ভাবে মিতার মৃত্যু হয় সে বিষয়ে এখনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি পুলিশ। যদিও ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে পুলিশ জেনেছে, মিতার শরীরে বহু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু চুড়ান্ত রিপোর্ট হাতে না আসায় তদন্তের অভিমুখ ঠিক করতে পারছে না পুলিশ। মিতার শ্বশুরবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি বলে আগেই দাবি করেছিল পুলিশ। কিন্তু মিতার জেঠশ্বশুর জয়দেব মণ্ডলের দাবি, ‘‘মিতার সুইসাইড নোট আমাদের কাছে রয়েছে। তার প্রতিলিপি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। আসল নোটটি আইনজীবীর মাধ্যমে পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হবে।’’ পুলিশ কিন্তু কোনও সুইসাইড নোটের প্রতিলিপি পাওয়ার কথা মানেনি।