WBBSE

রেজিস্ট্রেশনে দেরিতে জরিমানা স্কুলগুলিকে, হস্তক্ষেপে নারাজ রাজ্য

বজবজের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁদের স্কুলের ১৮৯ জনের মধ্যে চার পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:২৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন করাতে দেরির জন্য একাধিক স্কুলকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই বিষয়ে শিক্ষা দফতর কোনও হস্তক্ষেপ করবে না বলে সোমবার জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের ছাত্রপিছু পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা চাওয়া হচ্ছে জানতে পেরে আমি এ নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলাম। পর্ষদ জানিয়েছে, এই জরিমানা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায় ছিল, যে সব স্কুল দেরি করেছে, তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করতে হবে। বোর্ড সেটা কমিয়ে ছাত্রপিছু জরিমানা পাঁচ হাজার টাকা করেছে। এই জরিমানা স্কুলকেই দিতে হবে। এ বার মাত্র ৫০টি স্কুল হয়েছে। এটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিষয়। দফতর এখানে হস্তক্ষেপ করবে না।’’

এ দিকে, জরিমানার কোপে পড়া স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগামী বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে তাঁরা স্কুলের বিভিন্ন তহবিল থেকে কোনও ভাবে টাকা জোগাড় করে জরিমানা দিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে যাঁরা জরিমানা দিলেন, তাঁদের অধিকাংশের বক্তব্য, রেজিস্ট্রেশন করতে দেরি হওয়ার পিছনে তাঁদের তরফে গাফিলতি ছিল না। ঘাটালের এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের এক জনেরই রেজিস্ট্রেশন দেরিতে হয়েছে। ওই ছাত্রী অন্য স্কুল থেকে আমাদের স্কুলে জুলাই মাসে ভর্তি হয়েছিল। এ দিকে, রেজিস্ট্রেশনের সময় পেরিয়ে গিয়েছিল ৩১ মার্চ। যদিও পরে সময়সীমা বাড়ানো হয়।

তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ‘‘ওই ছাত্রীর পুরনো স্কুলে যে রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল, সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর সে আনতে পারেনি। আমরা তার পরে পর্ষদ থেকে ওই ছাত্রীর ডুপ্লিকেট রেজিস্ট্রেশন নম্বর চাই। পর্ষদ তা দিতেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ৭ নভেম্বর ফের ওই ডুপ্লিকেট রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে আবেদন করি। কিন্তু তত দিনে রেজিস্ট্রেশন করার শেষ তারিখ, অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর পেরিয়ে গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কুলের কী দোষ? জরিমানার টাকা মকুব করতে বার বার অনুরোধ করলেও পর্ষদ মানতে রাজি হয়নি।’’

বজবজের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তাঁদের স্কুলের ১৮৯ জনের মধ্যে চার পড়ুয়ার রেজিস্ট্রেশন হয়নি। ওই চার জনের রেজিস্ট্রেশন বাবদ যে জরিমানা, তা তাঁরা দিয়ে দিয়েছেন। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘যে চার জনের রেজিস্ট্রেশন হয়নি, তারা দীর্ঘদিন স্কুলে আসেনি। স্কুলে এসে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য তাদের বাড়িতে বার বার খবর দেওয়া হয়েছে। তার পরেও তারা আসেনি। কিন্তু দেখা গেল, টেস্টের সময়ে তারা স্কুলে হাজির হয়েছে। নিয়ম মতো ওদের টেস্টে বসতে দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু ওরা কাকুতি-মিনতি করতে থাকায় মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরীক্ষায় বসতে দিই। ওরা টেস্টে বসার পরেই রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করে। কিন্তু তত দিনে রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। এখানে স্কুলের গাফিলতি কোথায়? আমাদের গাফিলতি হলে ১৮৯ জনের রেজিস্ট্রেশন সময় মতো হল কী ভাবে?’’

‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলি কী ভাবে চলে, তার খবর কি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ রাখে? অনেক স্কুলে করণিক নেই, গ্রুপ-ডি কর্মী নেই। শিক্ষক অপ্রতুল। যারা স্কুলে আসছে না, তাদের ফোন করে শিক্ষকদেরই ডাকতে হয়। রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা যে বাড়ানো হয়েছে, তা স্কুলগুলিকে ইমেল করে জানানো হয়নি। শুধু পর্ষদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কারও হয়তো সেই বিজ্ঞপ্তি চোখ এড়িয়ে গিয়েছে। অনেক সময়ে তো পর্ষদের ওয়েবসাইটই খোলে না। স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের ইমেল করে সময়সীমা বাড়ানোর কথা জানানো হলে তা তাঁদের নজর এড়াত না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন