Advertisement
Durga Puja 2020

কোভিড-হীন তাইওয়ানে পুজোয় সামিল বাঙালিরা

দুর্গাপুজোয় মিলেমিশে যান তাইওয়ানিজ থেকে বাঙালি- অবাঙালিরা।

অনিন্দ্য সরকার
তাইওয়ান শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ০২:৩২
Share: Save:

শরতের নির্মল আকাশ, কাশফুল বা শিউলির গন্ধ তাই ওয়ানে পাওয়া যায়না বটে, তবে পুজো এলেই ঢাকের তালে দুলে ওঠে এদেশের প্রবাসী বাঙালি মন। তাইওয়ানের কোভিডকে হারানোর গল্প সারা পৃথিবীতে আজ রূপ কথার মতো। ঠিক তেমনই সুন্দর বিভিন্ন ভাষা-সংস্কৃতিকে এদেশের আপন করে নেওয়ার রীতি। তাই ‘Umang@TW’-এর সবচেয়ে পুরনো দুর্গাপুজোয় মিলেমিশে যান তাইওয়ানিজ থেকে বাঙালি- অবাঙালিরা।

২০০৯ সালে থার্মোকলের প্রতিমায় পথচলা শুরু উমঙ্গের পুজোর। বহুবার চেষ্টা করেও মাটির প্রতিমা আনাতে পারেননি উদ্যোক্তারা। “অবশেষে এই কোভিডের বছরে মায়ের আশীর্বাদে আমরা প্রথমবার চারফুটের ফাইবারের প্রতিমা আনতে পেরেছি। প্রতিমা শিল্পী কুমোর টুলির সুবল পাল,”বললেন দিন রাত এক করে পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত কর্মকর্তারা। তাঁদের কথায়,“বিকাশ, দেবেন্দ্র, হিমাংশুর মতো সিনিয়রদের অভিজ্ঞতা; বিপুল,স্মৃতিজিৎ, অনিরুদ্ধ, সৌমেন্দ্র, কৃষ্ণপ্রসাদ, সিম্ফনি, বিপাশা, উত্তম, ঋতিকা, সন্দীপ, শমীক, অমিতাভ, মুকেশ, সুচিত্রা, বোধিসত্ত্ব, সৌম্য, সুদীপের মতো একঝাঁক তরুণ-তরুণী এবং উমঙ্গের সদস্যদের অফুরন্ত উৎসাহের মেলবন্ধনই এই পুজোর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছে।”এঁদের কেউ একাডেমিয়াসিনিকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

প্রতি বারের মতোই এবারও দু’দিন পুজো হবে এক বুদ্ধ মন্দিরে।

দেশের মতো চারদিন ধরে পুজো এখানে হয়ে ওঠেনা জায়গা আর ছুটির অভাবে। তাতে কী? প্রতি বারের মতোই এবারও দু’দিন পুজো হবে এক বুদ্ধ মন্দিরে। ২৫ তারিখ পুজো আর পয়লা নভেম্বর দশমী।

আরও পড়ুন: মিলেমিশে উৎসবে মাতা হচ্ছে না সিডনির

আরও পড়ুন: নবি মুম্বইয়ে পুজোর বড় হলঘরটা এখন কোভিড সেন্টার!

অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো না? “নানা সারা বছর তো এই দু’দিনের জন্যেই বসে থাকি। পুজো, সেই সঙ্গে দেদার ভূরিভোজ। খিচুড়ি, লুচি-আলুরদম, শিঙাড়া, নারকেল নাড়ু থেকে শুরু করে খাসিরমাংস- সবই থাকে। আর থাকে গান, কবিতা, নাটকে ভরপুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।” বললেন উমঙ্গের সদস্যরা।

থাকে গান, কবিতা, নাটকে ভরপুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এবার অবশ্য সকলেরই একটু মন ভার। কোভিড পরিস্থিতি আর দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে। সেই কবে ১২৯১ সালে বঙ্কিমচন্দ্রের প্রচার পত্রিকায় ‘কাঙালিনী’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন- “আনন্দময়ীর আগমনে/আনন্দে গিয়েছে দেশ ছেয়ে/হেরো ওই ধনীর দুয়ারে/ দাঁড়াই য়াকঙালিনী মেয়ে”। “কত পরিচিত মানুষ হারিয়েছেন কাজ। লকডাউনের জন্যে যেতে পারিনি মায়ের মৃত্যুর সময়েও। মা দুর্গার কাছে এবার প্রার্থনা করব ২০২১ সাল যেন সবার মুখে হাসি ফিরিয়ে দেয়,” বলতে বলতে চোখের কোণ চিকচিক করে উঠল উমঙ্গের এক সদস্যার।

ছবি সৌজন্য: লেখক (পেশায় অধ্যাপক)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE