—প্রতীকী চিত্র।
ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পেয়েছিল বাংলার দুর্গাপুজো। যার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িয়ে প্রতিমা গড়ার পীঠস্থান কুমোরটুলি। এ বার সেই কুমোরটুলিতে তৈরি সব ধরনের প্রতিমার জন্য ভৌগোলিক স্বীকৃতি (জিআই) চেয়েই আবেদন জমা পড়ল কেন্দ্রের কাছে। সম্প্রতি বাংলার চানাচুর ও পানের জিআই তকমার আবেদনও জমা পড়েছে। যা গ্রাহ্য করেছে কেন্দ্র।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার জমা পড়েছে কুমোরটুলির প্রতিমাকে জিআই দেওয়ার আবেদন। তবে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে কিছু বিতর্কও। এই জিআই চেয়েছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের সাহায্য করছে কৃষি এবং গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যাঙ্ক নাবার্ড। রাজ্য সরকার বিষয়টির মধ্যে নেই। ফলে যে প্রতিমা শিল্পীদের সুবিধার জন্য এই আবেদন, তাঁদের আখেরে কতটা সুবিধা হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, এই নিয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। রাজ্য কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুলের স্বীকৃতির জন্য আবেদন করেছে। দফতরের পক্ষে জিআই সংক্রান্ত ক্ষেত্রের নোডাল অফিসার মহুয়া হোম চৌধুরীর অবশ্য আশঙ্কা, ‘‘সরকার এর মধ্যে না থাকলে সকলের স্বার্থ রক্ষা হবে কি না, প্রশ্ন থাকে।’’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির সম্পাদক সোনালী চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘আমরা ২২ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তিক শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করছি। কুমোরটুলির শিল্পীরাও আছেন তার মধ্যে। নাবার্ডের সহযোগিতায় জিএআই পাওয়ার এই আবেদন করেছি নভেম্বরের শেষ দিকে।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর থেকে রাজ্য সরকার পুজোর প্রচার করছে। সেখানে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই আবেদন কতটা মূল লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে সংশয় রয়েছে। একই প্রশ্ন রাজ্যের মন্ত্রীরও। তবে সোনালীর মতে, জিআই তকমা পেলে কুমোরটুলির শিল্পীদের হাল ফিরবে। কিন্তু সব মৃৎশিল্পীকে তাঁরা সঙ্গে নিয়েছেন কি না, তার উত্তর স্পষ্ট দেননি তিনি।
অন্য দিকে, মিষ্টি উদ্যোগের তরফে চানাচুরের জন্য জিআই-এর আবেদন করা হয়েছে। সংগঠনের পক্ষে ধীমান দাশ জানান, এর পরে মিষ্টি দই এবং রসমালাইয়ের জন্য আবেদন করা হবে। তার জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মিষ্টি দইয়ের জিআই-এর কথা খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। সূ্ত্রের খবর, শীঘ্রই জিআই তকমা পেতে চলেছে চন্দননগরের জলভরা সন্দেশ, বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ, বাংলার নলেন গুড়, কলকাত্তি জুয়েলারি, বাংলার শোলার তৈরি জিনিস ইত্যাদি। মহুয়া জানান, এগুলি ছাড়পত্র পাওয়ার চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছে গিয়েছে।