Reliance-BP

প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ, রিলায়্যান্স-বিপির কাছে ২.৭ লক্ষ কোটি ক্ষতিপূরণ চায় কেন্দ্র

সূত্রের খবর, প্রতিশ্রুতির তুলনায় কম গ্যাস উৎপাদন এবং প্রাথমিক পরিকল্পনার তুলনায় বেশি পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য রিলায়্যান্স-বিপির কাছে ৩০০০ কোটি ডলার (প্রায় ২.৭০ লক্ষ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সরকার।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২১

—প্রতীকী চিত্র।

বঙ্গোপসাগরের কৃষ্ণা-গোদাবরী (কেজি) অববাহিকার গ্যাস ক্ষেত্রে উৎপাদন নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রিলায়্যান্স-বিপির বিবাদ প্রায় দেড় দশকের। ৭ নভেম্বর তিন সদস্যের সালিশি ট্রাইবুনালে বিবাদের শুনানি শেষ হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রতিশ্রুতির তুলনায় কম গ্যাস উৎপাদন এবং প্রাথমিক পরিকল্পনার তুলনায় বেশি পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য রিলায়্যান্স-বিপির কাছে ৩০০০ কোটি ডলার (প্রায় ২.৭০ লক্ষ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সরকার। নতুন বছরে ট্রাইবুনাল রায় ঘোষণা করতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, ফলাফল যা-ই হোক না কেন, মামলা সুপ্রিম কোর্টে গড়াবে।

রিলায়্যান্সের অবশ্য বক্তব্য, কেন্দ্র তাদের বা বিপির থেকে ৩০০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে এমনটা মোটেই বলা যায় না। সরকার সালিশি কমিটির সামনে একটি আর্থিক হিসাব পেশ করেছে। কমিটি দাবিদারের পক্ষে রায় দিলে তবেই এই দাবিকে সরকারি তকমা দেওয়া যাবে।

প্রায় ২০ বছর আগে কেজি-ডি৬ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনের জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়। ভারতীয় সংস্থাটির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে ব্রিটেনের বিপি। চুক্তির শর্ত হিসেবে ধীরুভাই-১ এবং ধীরুভাই-৩ গ্যাস ক্ষেত্রের উত্তোলন থেকে আয়ের ৭০% পাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের। বাকি ৩০% দুই ঠিকাদার সংস্থার জোটের। দেখা যায়, ২০১০ সাল থেকেই পূর্বাভাসের তুলনায় উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। তার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে কমে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হয়ে যায়।

প্রকল্পের গোড়ায় রিলায়্যান্স জানিয়েছিল, তারা ২৪৭ কোটি ডলার লগ্নি করবে। দৈনিক উৎপাদন হবে ৪ কোটি ঘন মিটার গ্যাস। কিন্তু ২০১১ সালের মার্চে প্রকল্পে সংশোধন এনে ৮১৮ কোটি ডলার খরচের কথা জানায় তারা। প্রতিশ্রুতি দেয় ৩১টি কূপ থেকে উৎপাদনের। যাতে ঘাটতি পুষিয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ, শেষ পর্যন্ত ২২টি কূপ খনন করেছিল তারা। উৎপাদন হয়েছিল ১৮টি থেকে। ২০১৬ সালের পরিকল্পনায় দাবি করা হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ১০.০৩ লক্ষ কোটি ঘন ফুট গ্যাস রয়েছে। কিন্তু পরে সেই অনুমানও ৩.১০ লক্ষ কোটিতে নামিয়ে আনা হয়। এর ভিত্তিতেই উৎপাদন ঘাটতির হিসাব কষে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সরকার। রিলায়্যান্স-বিপি অতিরিক্ত দামে গ্যাস বিপণন করায় তার অংশ এবং সুদও চাওয়া হয়েছে। ঠিকাদার সংস্থা দু’টি অবশ্য সালিশিতে দাবি করেছে, এই ধরনের প্রকল্প ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রেই পূর্বাভাস অনুযায়ী ফল পাওয়া যায় না। ঠিকাদার সংস্থাকে খরচ তোলার জন্য বিকল্প পদক্ষেপ করতেই হয়। সারা পৃথিবীতেই এমন ঘটে।


গ্যাস উৎপাদন

কেজি-ডি৬ ক্ষেত্র থেকে দৈনিক ৮ কোটি ঘন মিটার গ্যাস উত্তোলনের কথা ছিল রিলায়্যান্স-বিপির।

২০১১-১২ অর্থবর্ষে তা হয় ৩.৫৩ কোটি ঘন মিটার।

২০১২-১৩ সালে হয় ২.০৯ কোটি ঘন মিটার।

২০১৩-১৪ সালে ৯৭.৭ লক্ষ। তার পর আরও কম।

আরও পড়ুন