—প্রতীকী চিত্র।
চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসে দেশে ক্রমাগত কমেছে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি (এফডিআই)। অন্য দিকে বিদেশে সরেছে ভারতীয় উদ্যোগপতিদের বিনিয়োগ। এর ফলে নিট হিসাবে ভারতে মাথা নামিয়েছে এফডিআই-এর অঙ্ক। বরং ওই তিন মাসে তার তুলনায় বিদেশে ভারতীয় সংস্থাগুলির লগ্নি ১৫০ কোটি ডলার বেড়েছে বলে জানিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট। এ নিয়ে বুধবার কেন্দ্রকে আক্রমণ করলেন বিরোধীরা।
এ দিন এক্স-এ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের তোপ, ‘‘এটা যে হবে, তা আগে থেকেই বোঝা গিয়েছিল। মোদী সরকার যে অর্থনীতি চালু করেছে, তার সব থেকে বড় ক্ষতিকর দিক হল তাদের শাসনকালে দেশে চাহিদা কমা। যার অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবেই দেশে এক দিকে কমেছে এফডিআই, অন্য দিকে ভারতীয় উদ্যোগপতিরাও হারিয়েছে এখানেলগ্নির উৎসাহ। তাই তাঁরা বিদেশে যাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, উড়তে অক্ষম উটপাখির মতো মোদী সরকার বাস্তব সত্যকে না স্বীকার করে উল্টে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য চালু থাকা একশো দিনের প্রকল্পকে শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে।’’
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক রিপোর্টে জানিয়েছে, ভারতে বিদেশি লগ্নি হঠাৎ এক দিনে কমেনি। বরং বেশ কিছু দিন ধরেই তা টানা কমছে। অক্টোবরে এফডিআই-এর অঙ্ক ছিল ৬৫০ কোটি ডলার। গত বছরের ওই সময়ের থেকে যা ৮.৮% এবং চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের থেকে ৬.৬% কম। উল্টো দিকে, অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী বিদেশে ভারতীয়দের লগ্নির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১০ কোটি ডলার। গত বছরের অক্টোবর থেকে যা ৬৩.১% বেশি। যদিও সেপ্টেম্বরের থেকে ২৪% কম। পাশাপাশি, রিপোর্ট জানিয়েছে ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ পর্যন্ত ভারতের শেয়ার এবং বন্ডের বাজারে নিট হিসাবেও বিদেশি লগ্নি কমেছে ২৩০ কোটি ডলার।
ভারতে বিদেশি লগ্নি কমার জন্য একাধিক কারণকে চিহ্নিত করেছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তাদের বক্তব্য, আগে যে সব বিদেশি লগ্নি এসেছিল, তার একটা বড় অংশই ভারত থেকে চলে গিয়েছে। তাদের অর্ধেকই বেছে নিয়েছে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও আমেরিকার মতো দেশকে। অন্য দিকে, শেয়ার বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগ কমেছে মূলত ভারতীয় পণ্যে আমেরিকার চাপানো ৫০% শুল্কের কারণে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে ঠিকই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা সইয়ের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তার উপরে চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা মিলছে না। এই কারণেই এ দেশের অনিশ্চিত বাজারে আগ্রহ হারাচ্ছে ওই সব সংস্থা।