জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
গত এপ্রিলে বিশ্ব ব্যাঙ্ক একটি রিপোর্টে বলেছিল, ২০১১-১২ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের মধ্যে বহু মানুষকে দারিদ্রসীমার বাইরে আনতে পেরেছে ভারত। এর ঠিক তিন মাস পরে সেই রিপোর্টকে অস্ত্র করে প্রচারে নেমেছে মোদী সরকার। দাবি করেছে, আর্থিক সমতার দিক দিয়ে ভারত এখন বিশ্বে চতুর্থ স্থানে। কংগ্রেসের অভিযোগ, দীর্ঘ চিন্তাভাবনা করে রিপোর্টের একটি অপব্যাখ্যা খাড়া করেছে কেন্দ্র। এই সরকার ‘প্রতারক’ ও ‘অসৎ’। কংগ্রেসের বক্তব্য, বেকারত্বের পরিস্থিতিকে ঢাকা দেওয়ার জন্যও পরিসংখ্যানের বিকৃতি ঘটাচ্ছে কেন্দ্র।
গত রবিবার কেন্দ্রীয় সরকারের সংবাদ সংস্থায় বৈষম্য কমার দাবি করা হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিশ্ব ব্যাঙ্কের পুরো রিপোর্টের ব্যাখ্যা না দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু তথ্য তুলে এনেছে কেন্দ্র। তুলনা করা হয়েছে ভারতে ক্রয়ক্ষমতার বৈষম্য এবং অন্যান্য দেশের আয়ের অসাম্যের মধ্যে। অথচ এই দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন মাপকাঠি। এ দেশে আয় এবং সম্পদের বৈষম্য ক্রমাগত বাড়ছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘ভারতে আয়ের বৈষম্য বিপুল। ২০১৯ সালে ২১৬টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১৭৬। আর্থিক সমতার ক্ষেত্রেও ভারত চতুর্থ নয়। বরং বৈষম্যের নিরিখে ৪০তম। মোদী সরকারের আমলে আয়ের অসাম্য বেড়েছে।’’ বিরোধী দলটির আরও অভিযোগ, গত ১১ বছরে জিডিপি-তে শিল্পের অনুপাত কমেছে। ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির রাশ আলগা হয়ে শিল্পের উপরে বৃহৎ গোষ্ঠীগুলির নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে। তাতে বাড়ছে জিনিসপত্রের দাম। যার জেরে মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুলেছে। এটাও আর্থিক অসাম্যের অন্যতম কারণ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী অবশ্য ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, তাঁদের সরকার কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, সপ্তাহে এক দিন কাজ করলেই বেকারত্বের হিসাবের বাইরে— এই মাপকাঠির উপরে দাঁড়িয়ে হিসাব কষেছে পরিসংখ্যান মন্ত্রক। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেকারত্বের হার উদ্বেগজনক। আর্থিক কর্মকাণ্ডে মহিলাদের যোগদানের হার উদ্বেগজনক ভাবে কম। শহরাঞ্চলে তা ২৩%। পুরুষদের যেখানে ৭০.৫%।