‘অজয়নগর’ একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল যেখানে সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ, মুকুন্দপুর-অজয়নগর, দু’দিকের দু’টি সার্ভিস রোড এবং ই এম বাইপাসের চার-পাঁচটি রাস্তা আড়াআড়ি ও লম্বালম্বি এসে মিশেছে। কিন্তু এখানে সঠিক ভাবে সিগন্যাল মেনে যানবাহন চলাচল করে না। তাই নিত্যদিন দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। অথচ প্রশাসনের তা নিয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। মাসখানেক আগে এই মোড়ে দাঁড়িয়ে কুড়ি থেকে ত্রিশ জন পুলিশকর্মী হেলমেট ছাড়া বাইক আরোহীদের জরিমানা করতেন। কিন্তু সিগন্যাল না-মেনে চলার ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা তাঁরা করেননি। এখানে শুধুমাত্র বাইপাসের দুটো প্রধান সিগন্যাল মানা হয়। সেখানে এক জন মাত্র ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে দেখেছি তাঁর কথা অনেকেই শোনে না, তাই হয়তো তিনি কিছু বলেনও না। স্বাভাবিক ভাবেই টুকটাক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
কিন্তু আজকাল রাত বাড়লেই এই অজয়নগর মোড়ে অদ্ভুত দৃশ্য চোখে পড়ে। বাইপাস থেকে সন্তোষপুর অ্যাভিনিউতে ঢোকার মুখে ইউকো ব্যাঙ্কের ঠিক আগে যানবাহন, বিশেষ করে চার চাকার গাড়ি ও বাইক আরোহীদের দাঁড় করিয়ে পুলিশ মদ্যপান পরীক্ষা (অ্যালকোহল টেস্ট) করে। তাতে কারও কোনও সমস্যা হওয়ারও কথা নয়। কিন্তু সমস্যা হল কোনও রকম সতর্কতামূলক চিহ্ন ছাড়া বা রাস্তার সব থেকে অন্ধকার জায়গাটি বেছে নিয়ে শুরু হয় এই পুলিশি তল্লাশি। বাইপাস থেকে সন্তোষপুর অ্যাভিনিউতে ঢোকার সময় গাড়িচালকরা বুঝতেই পারেন না সামনে পুলিশ রয়েছে। পুলিশের পোশাকও প্রায় অন্ধকারে স্পষ্ট দেখা যায় না। কেউ কেউ আবার সাধারণ পোশাক পরে থাকেন, ফলে চালকদের মধ্যে আরও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। হঠাৎ করে অন্ধকারে কাউকে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ব্রেক চাপা ছাড়া উপায় থাকে না। এতে দুর্ঘটনা ঘটার প্রবল সম্ভাবনা থেকে যায়।
প্রশ্ন হল, এই তল্লাশির প্রকৃত উদ্দেশ্য যদি হয় মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তা হলে সেই প্রক্রিয়া আরও পরিকল্পিত, দৃশ্যমান ও সুশৃঙ্খল হওয়া উচিত নয় কি?
শিবশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা-৭৫
জলমগ্ন রাস্তা
প্রতি বছরের মতো এ বছরও বৃষ্টি হলেই কলকাতার বেশির ভাগ রাস্তা জলে ডুবে যাচ্ছে। একই অবস্থা ভি আই পি রোডেও। সম্প্রতি সামান্য বৃষ্টিতেই ভি আই পি রোডে হলদিরাম, কৈখালি থেকে সোজা এয়ারপোর্ট পর্যন্ত জল থৈ থৈ করছে। কোথাও হাঁটুজল, কোথাও কোমর পর্যন্ত। ফলে সাধারণ মানুষকে খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তার উপর কয়েক বছর ধরে মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলার ফলে চলাচলের রাস্তা অনেক সরু হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া, রাস্তার গর্ত, পাশের নালা জলে ভরে থাকার ফলে পথচারীরাও সেগুলি ঠিকমতো ঠাহর করতে পারছেন না। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে।
ওই জমা জল একটু বেশি দিন থাকলেই সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, কীটপতঙ্গ, মশার উপদ্রব বাড়তে থাকে। আজকাল আবহাওয়া দফতর উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে আগে থেকেই বলে দেয় কবে কোন দুর্যোগ আসছে। সে ক্ষেত্রে বৃষ্টির পূর্বাভাস জেনে আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে মানুষের অসুবিধা কম হবে। নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি, পথঘাটের খানাখন্দ ভরাট, চার পাশ থেকে ময়লা সরিয়ে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে জল জমার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা যেতে পারে। এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
গীতিকা কোলে, কলকাতা-৫২
টোটো-রাজ
ইদানীং অবৈধ টোটো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকারি প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এই পদক্ষেপটি খুবই জরুরি। আগে এই যানগুলি লুকিয়ে-চুরিয়ে প্রধান সড়ক এড়িয়ে চলাফেরা করত। কিন্তু এখন এগুলি সব রাস্তায় বিনা বাধায় বিচরণ করছে, এমনকি বিশ্ব বাংলা সরণি দিয়েও। বাসন্তী হাইওয়েতে মোট যানবাহনের অর্ধেকের বেশি মনে হয় এরাই। গাড়িগুলি কখনও প্রচুর যাত্রী, কখনও ইট, কাঠ, বালি, সিমেন্ট, লোহা-লক্কড় বহন করে নিয়ে যায়। এদের কোনও লাইসেন্স নেই, নেই কোনও দায়িত্ববোধ, বিশেষ করে দুর্ঘটনা ঘটলে। কখনও-কখনও প্রকাশ্যে ট্র্যাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই কালো ধোঁয়া উড়িয়ে এরা চলে যায়।
নিউ টাউনের অনেক রাস্তায় এদের চলাচল বন্ধ করার বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কে করে তার পরোয়া? তা ছাড়া, সার্ভিস রোড থাকতে মেন রোডই এদের যেন বেশি পছন্দের। কর্তৃপক্ষের উচিত, এই টোটোগুলিকে অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা এবং প্রকৃত ট্র্যাফিক আইন অনুযায়ী চালনা করা।
তপন বিশ্বাস, কলকাতা-১৩৫
শব্দত্রাস
প্রায় তিন বছর হতে চলল আমরা কসবার রুবি পার্কে বাড়ি কিনে এসেছি। বাড়িটি তিনটি রাস্তার সংযোগ স্থলে অবস্থিত। আসার পর থেকেই দেখছি বাড়ির সামনে দক্ষিণ দিকে বারো ফুটের রাস্তার মুখে স্কুলের বাচ্চাদের কারপুলের ডিউটি করা একটা পুরনো টাটা সুমো দাঁড়িয়ে থাকে। প্রত্যেক দিন খুব সকালে সেই গাড়ির ইঞ্জিনের বিকট আওয়াজে আমাদের ঘুম ভাঙা এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে উঠেছে। ইদানীং মাস ছয়েক হল তাতে যোগ হয়েছে গাড়ি স্টার্ট নেওয়ার আগে মিনিট দশেক ধরে ক্রমাগত সশব্দে গাড়িটির দরজা খোলা এবং বন্ধ হওয়া। এর কারণটা যা-ই হোক না কেন, গোটা ব্যাপারটাই এখন বেশ বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। অথচ, বাড়িতে থাকা বয়স্কদের ঘুমের অসুবিধার কথা চালকদের বার বার বলেও এই সমস্যার কোনও সুরাহা হচ্ছে না। তাদের উদাসীনতা দেখে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, কর্পোরেশনের রাস্তায় তাদের ভাড়া নেওয়া বাড়ির সামনে ব্যবসায়িক কারণে ব্যবহৃত গাড়ি রেখে প্রায় গ্যারাজের মতো ব্যবহার করার পূর্ণ অধিকার আছে।
ইদানীং এমন অসংবেদনশীল আচরণই জল-ভাত হয়ে গিয়েছে। অসুস্থ, প্রবীণদের সমস্যাকে গুরুত্ব না-দেওয়াই রেওয়াজ। আমাদেরও হয়তো এই সমস্যা থেকে পাকাপাকি ভাবে অব্যাহতি মিলবে না। গাড়ির চালকের সদিচ্ছার উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে।
আনন্দ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৭৮
অশুভ শক্তি
গোটা ভারতে এখন গভীর ফাটল দেখা দিয়েছে। একটু একটু করে সবটাই তলিয়ে যাবে সমুদ্রের গহ্বরে। এখনও যদি সচেতন, সঙ্ঘবদ্ধ না হই, তবে চিরতরে আমরা হারিয়ে যাব। আজ যে দিকে তাকাই শুনতে পাই, বুঝতে পারি— বিভেদের শব্দ আমাদের অনবরত নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু-মুসলমান, মন্দির-মসজিদ, ওয়াকফ সংশোধনী বিল, আরও কত কী বিষয় নানা ভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে আমাদের সামনে।
গোটা ভারত মেতে উঠেছে ধর্মের খেলায়। সুপরিকল্পিত ভাবে আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিষ। পরস্পরের মধ্যে করে দেওয়া হচ্ছে বিভাজন। একে অপরকে আমরা এখন দেখি সন্দেহের চোখে। সেই সঙ্গে ক্রমশ বিবেকহীন, মনুষ্যত্বহীন হয়ে পড়ছি আমরা। আমরা ভারতের শান্তিপ্রিয় পরিবেশকে অশান্ত করে ধর্মযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য থেকে শুরু করে ভারতের প্রতিটি মানুষ সমস্ত দিক থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ছে। রান্নার গ্যাস, ওষুধপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের দাম আজ আকাশছোঁয়া। এ সব নিয়ে যাতে আমরা প্রতিবাদ না করতে পারি, সেই কারণে খুব সু-পরিকল্পিত ভাবে আমাদের সকলের দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর যোগ্য জবাব হল এখন থেকেই সচেতন ভাবে এর প্রতিবাদ করা।
মুরসেলিম সেখ, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ