Online Principal Meet at CU 2025

দাবি পেশ, ডিজিলকার নিয়ে বৈঠকে যোগ দিয়েও বেরিয়ে এলেন কলেজের অধ্যক্ষেরা

অধ্যক্ষদের সংগঠনের তরফ থেকে বৈঠকের আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে। চিঠিতে একাধিক দাবির উল্লেখ রয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:৩৪
Calcutta University

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সংগৃহীত ছবি।

পড়ুয়াদের তথ্য সংরক্ষিত রাখতে ডিজিলকার ব্যবহারে জোর দিতে চাইছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ সব কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন রেজিস্ট্রার-সহ অন্য আধিকারিকেরা। তবে অনলাইন বৈঠকে যোগ দিয়েও নিজেদের বক্তব্য পেশ করে বেরিয়ে এলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কলেজের ৯০ জন অধ্যক্ষ। মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক ডাকতে চলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

অধ্যক্ষদের বক্তব্য, আগের বহু দাবি রয়েছে যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও মীমাংসা করেননি। আমরা ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে ডিজিলকারের বিরোধী নই। তবে সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষের মতামত নিয়ে এই ব্যবস্থা চালু করা উচিত, তাই আমরা এর বিরোধিতা করছি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সিন্ডিকেটে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কলেজগুলি আমাদের প্রাণকেন্দ্র। কলেজের অধ্যক্ষরা সম্মানীয় ব্যক্তি। তাঁরা যখন কলেজের উন্নতিসাধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সাক্ষাৎকারের সময় চাইছেন, তা মান্যতা দিয়ে আলোচনায় বসা উচিত। সিন্ডিকেটের প্রতিনিধি হিসাবে তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে এই বিষয়ে আমি অনুরোধ করেছি। আশা করি, উনি এই অনুরোধ রাখবেন।"

উল্লেখ্য, অনলাইন বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য ডিজিলকার চালুর পাশাপাশি তাঁদের জন্য অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট (এবিসি) আইডি তৈরি করা নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল বৈঠকে। ডিজিলকার ব্যবহারের বিরোধিতা না করলেও পূর্বতন একাধিক দাবির সমাধান না হলে নয়া সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন অধ্যক্ষেরা। সারা বাংলা অধ্যক্ষ পরিষদ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (এবিপিসিসিউ) কমিটির সম্পাদক মানস কবি বলেছিলেন, ‘‘আমরা এই নয়া পদ্ধতি চালুর বিরোধিতা করছি না। কিন্তু, অনলাইনে নয় সশরীরে মিটিং ডাকতে হবে। আগে থেকেই অনেক দাবি পূরণ হয়নি, সেগুলি আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কলেজগুলির উপর চাপিয়ে দিলে হবে না।’’

অধ্যক্ষদের সংগঠনের তরফ থেকে বৈঠকের আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে। চিঠিতে একাধিক দাবির উল্লেখ রয়েছে। যেমন, পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্র নির্বাচনের ক্ষেত্রেও অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে। বিশ্ববিদ্যালয় নিজের ইচ্ছেমতো বিভিন্ন খরচ চাপিয়ে দিচ্ছে কলেজগুলির উপর, সে দিকেও নজর দিতে হবে। এগুলি ছাড়াও আরও একাধিক দাবি রয়েছে। সেই সব পূরণ করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। না হলে নতুন প্রকল্প নয়, এমনই দাবি অধ্যক্ষদের। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা না করেই পিএম (প্রধানমন্ত্রী) ইন্টার্নশিপ স্কিম-এ কলেজগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাতে ছোট ও মাঝারি কলেজগুলি যথেষ্ট সমস্যায় পড়ছে।

উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্নাতকত্তোর স্তরে পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কোনও কাজই করতে পারবেন না স্টেট এডেড কলেজ টিচার (সিএসআর) বা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা। এর পরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট থেকে চার জন অধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, বেশির ভাগ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হচ্ছে না। কাজ চলছে অতিথি শিক্ষক এবং রাজ্য সরকারি সাহায়তাপুষ্ট কলেজ শিক্ষক দিয়ে, সেখানে এমন বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া কী ভাবে হল! পাশাপাশি, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেটের কোনও অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেননি বলেও অভিযোগ। যদিও এই সংক্রান্ত ‘সিএসআর’ সংশোধন করতে চলেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই নিয়মের সংশোধন না হওয়ায় বিরোধিতায় অধ্যক্ষেরা।

Advertisement
আরও পড়ুন