Jadavpur University Student Death

‘যাদবপুর ফেরাক আমার ছেলেকে, ফিরিয়ে দিক অনামিকাকেও’, হাহাকার দু’বছর আগে সন্তান হারানো বাবার

ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় বার বার কাঠগড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২৩-এর ঘটনায় মৃত ছাত্রের বাবার নিশানায় কর্তৃপক্ষ। এমনকি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের শাস্তিও দাবি করেছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০১

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বছর দুয়েক আগে তিনি হারিয়েছেন নিজের সন্তানকে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে বড় ছেলেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু সেটাই যেন কাল হল! ভর্তির কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরল ছেলের মৃতদেহ। ১৮ বছর হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল এক তরুণের স্বপ্ন। এ বার ফের এক পড়ুয়ার মৃত্যু। যাদবপুরের ঘটনায় চুপ করে থাকতে পারলেন না দু’বছর আগে মৃত তরুণের বাবা। তাঁর কণ্ঠে হাহাকার, ‘যাদবপুর আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিক, ফিরিয়ে দিক ওই মেয়েটিকেও তার বাবা-মায়ের কোলে’।

Advertisement

২০২৩-এর পর ২০২৫। বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা ফের কাঠগড়ায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ক্যাম্পাসের চার নম্বর গেটের সামনের পুকুর থেকে ওই রাতেই উদ্ধার করা হয় তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন তাঁকে। অস্বাভাবিক মৃত্যু। শুরু হয়েছে তদন্ত।

২০২৩-এর ৯ অগস্ট রাতে মেন হস্টেলের নীচ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বাংলা প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকেও মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। শুক্রবার অনামিকার খবর জানার পর থেকেই যেন নতুন করে শোক ঘিরে ধরেছে পুত্রহারা পিতাকে। কাঁপা গলায় তিনি বলেন, “সন্তান হারানোর বেদনায় আমরা প্রত্যেক মুহূর্তে জ্বলছি। আবার সেই একই ঘটনা। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিক ওরা।”

অনামিকার মৃত্যুর জন্য সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন তিনি। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “পড়াশোনার থেকে বেশি নেশায় মন পড়ুয়াদের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উৎসাহেই এ সব চলে। তাঁদের উদাসীনতাই একের পর এক পড়ুয়ার জীবন অন্ধকারের পথে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সমস্ত গাইডলাইন, থানা, সরকার— সবাইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়।”

নদিয়ার বগুলা থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিল তাঁর ছেলে। বাবার অভিযোগ, যাদবপুরের র‌্যাগিং-সংস্কৃতির শিকার হয়েছিল সে। তাঁর গলায় আক্ষেপের সুর, “আমার ছেলের মৃত্যুর পর দু’বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বদলায়নি কিছুই। পর্যাপ্ত পরিমাণে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়নি। যেগুলি রয়েছে সঠিক ভাবে কাজ করে কি না— তা খতিয়ে দেখা হয় না। কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছাও নেই তাতে।” তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের শাস্তি দেওয়া হোক।

Advertisement
আরও পড়ুন