Ankush Hazra birthday

অঙ্কুশ লড়াই করতে ভয় পায় না, ওর সততাকে শ্রদ্ধা করি

১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরার জন্মদিন। বিশেষ দিনে অভিনেতাকে নিয়ে লিখলেন ঐন্দ্রিলা সেন।

Advertisement
ঐন্দ্রিলা সেন
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৯
Bengali actress Oindrila Sen writes about Ankush Hazra on his birthday which is Valentine’s Day

ঐন্দ্রিলার সঙ্গে অঙ্কুশ। ছবি: সংগৃহীত।

আজ অঙ্কুশের জন্মদিন। আপনারা সকলেই ভাবছেন, রাত থেকেই হয়তো ও জন্মদিনের উদ্‌যাপনে মেতেছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, কাল রাত থেকে এ রকম কিছুই হয়নি। বরং বলতে পারি, আমরা এবং আমাদের টিম প্রায় সারা রাত জেগে কাজ করেছি।

Advertisement

শুক্রবার অঙ্কুশের জন্মদিনেই ওর প্রযোজনা সংস্থার তরফে নতুন ছবির ঘোষণা করা হবে। তাই এ বার আলাদা করে জন্মদিন পালন করার কোনও উদ্যোগ আমরা নিইনি। শেষ মুহূর্তে ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। সকাল থেকেই অঙ্কুশ একের পর এক মিটিং করে চলেছে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তাই এখনই নতুন ছবি নিয়ে কিছু লিখতে চাইছি না। বরং অঙ্কুশকে নিয়ে কিছু কথা ভাগ করে নিই।

জন্মদিন মানে আলাদা উদ্‌যাপন এবং উপহার, এই বিষয়গুলো নিয়ে মাথা ঘামান অনেকেই। তার উপর প্রেম দিবসে অঙ্কুশের জন্মদিন! কিন্তু অনেকগুলো বছর আমরা সম্পর্কে রয়েছি। এখন দু’জনের জীবনের লক্ষ্যগুলো আরও বড় হয়েছে। তাই এখন আর জন্মদিন বলে আলাদা কিছু দেওয়া— এই বিষয়গুলো আমাদের দু’জনের মধ্যেই সচেতন ভাবে কাজ করে না। জন্মদিনে ওকে কিছু উপহার দিলে ও খুশি হবে, সেটা জানি। কিন্তু পাশাপাশি এটাও জানি, নতুন গেমিং কনসোল লঞ্চ করলে সেটা ওকে উপহার হিসেবে দিলে, অঙ্কুশ আরও বেশি খুশি হবে। এ বার সেটা হয়তো বছরের এমন একটা সময়ে হল, যখন ওর জন্মদিন ধারেকাছেও নেই। তাতে অবশ্য ওর কোনও সমস্যা নেই।

কিন্তু তার মানে এ-ও নয় যে, আমরা কারও জন্মদিন উদ্‌যাপন করি না। এমনও হয়েছে, ওর জন্মদিনে আমরা সারপ্রাইজ় পার্টির আয়োজন করেছি। অনেকে একসঙ্গে ডিনারে গিয়েছি। সেই আনন্দটা ওর মুখে আমি দেখতে পাই। কিন্তু কাজের সময়ে এ রকম কোনো উদ্‌যাপনে অঙ্কুশ বিরক্ত হয়। তাই আজকে আলাদা কোনও উদ্যোগ নিলে ও একটু রেগে যেত। কারণ, এই মুহূর্তে ওর ধ্যানজ্ঞান পরবর্তী ছবির কাজ।

আজকে যে হেতু নতুন ছবির ঘোষণা রয়েছে, এ দিকে আমার বোনও এসেছে, তাই তিন জনে একটা সিনেমা দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। তবে আরও একটা বিষয় জানিয়ে রাখি, অঙ্কুশ কিন্তু ওর অনুরাগীদের কখনও হতাশ করে না। কারণ ও সব সময়েই বলে, ‘‘এই মানুষগুলোর জন্যই আমরা টিকে রয়েছি।’’ গত কাল রাতেই অনেক দূর থেকে বেশ কিছু অনুরাগী কলকাতায় এসেছেন। তাঁরা বিভিন্ন হোটেলে রয়েছেন আজ শুধুমাত্র ওকে এক বার দেখার জন্য। তাই কাজের মাঝেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করবে অঙ্কুশ, কেক কাটবে।

Bengali actress Oindrila Sen writes about Ankush Hazra on his birthday which is Valentine’s Day

‘মির্জ়া’ ছবির একটি দৃশ্যে অঙ্কুশ এবং ঐন্দ্রিলা। —ফাইল চিত্র।

নায়ক থেকে প্রযোজক— ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকটা সময় পেরিয়ে এসেছে অঙ্কুশ। ওর এই যাত্রাপথের অনেকটা অংশ জুড়ে আমিও রয়েছি। আজ একটাই কথা বলতে চাই, ওর সততা আমাকে মুগ্ধ করে। কারণ, ডেডিকেশন অনেকেরই থাকে, কিন্তু সেখানে সততা অনেক সময়ে দেখতে পাই না। এখানেই অঙ্কুশ অনেকের থেকেই আলাদা। একটা ছবি করতে গেলে অনেকের সম্মতি প্রয়োজন পড়ে। অনেককেই দেখেছি, নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ পর্যন্ত পূরণ করতে পারেন না। অঙ্কুশ কিন্তু মিথ্যা বলে নিজের জায়গা তৈরি করতে নারাজ। ও নিজের সীমাবদ্ধতা এবং কী কী করতে পারবে, সেটা স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়। আমাকে স্পষ্ট বলে, ‘‘অন্তত এটা জেনে শান্তি পাব যে, আমি কাউকে ঠকাইনি।’’ এই সততাকে আমি শ্রদ্ধা করি। ‘মির্জ়া’ ছবিটা আমরা কী পরিমাণ কষ্ট করে তৈরি করেছিলাম, তা অনেকেই জানেন। স্ট্রাগল করতে ভয় পায় না অঙ্কুশ। তাতে যদি ওর লক্ষ্যে পৌঁছতে পাঁচ বছরের পরিবর্তে দশ বছর সময় লাগে, ওর কোনও আপত্তি নেই।

এই মুহূর্তে নতুন ছবির কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকবে অঙ্কুশ। এই মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রিতে বাণিজ্যিক ছবি নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অঙ্কুশও চেষ্টা করেছে। আগামী দিনে ও আর ওর প্রযোজনা সংস্থা যেন আরও ভাল ভাবে দাঁড়িয়ে যায়। দর্শকও যেন ওর থেকে যা চাইছেন, অঙ্কুশ যেন তা ফিরিয়ে দিতে পারে। জন্মদিনে এটাই চাই, ঈশ্বর যেন ওর ইচ্ছেগুলো পূরণ করেন।

(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত।)

Advertisement
আরও পড়ুন