চার বছর আগের কথা মনে করলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
৬ মার্চ। এই দিনটা এলেই মন ভার হয় পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের। ঠিক চার বছর আগে এই দিনেই তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল জেট্। সে খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন পরিচালক। নিজেই সমাজমাধ্যমে সেই স্মৃতি ভাগ করে নিলেন কৌশিক।
জেট্ ছিল পরিচালকের প্রিয় পোষ্য সারমেয়। পোষ্যপ্রেমীদের কাছে চারপেয়েরা ঠিক কখন সন্তানসম হয়ে ওঠে, তা তাঁরা নিজেও টের পান না। তাই জেট্-এর মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছিলেন কৌশিক। চার বছর আগে সেই দিনে কাজের চাপে জেট্-এর পাশেও থাকতে পারেননি তিনি। সমাজমাধ্যমে প্রিয় পোষ্যের একটি ছবি ভাগ করে নিয়ে কৌশিক লিখেছেন,“চার বছর কেটে গিয়েছে। এই দিনে সাড়ে ১৩ বছরের জেট্ আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল। আমি শহরে ছিলাম না। বারাণসীতে শুটিং করছিলাম। সকালেই শুটিং করার সময় ফোনে খবর পেয়েছিলাম ওর চলে যাওয়ার।”
বারাণসীতে সেই দিন জেট্-এর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরে ঠিক কী হয়েছিল, লেখেন কৌশিক। তাঁর কথায়, “মনে পড়ে না, কবে ওই রকম ছোটবেলার মতো কেঁদেছিলাম! বারাণসীর একটা অতি সরু গলির লাগোয়া মন্দিরের সিঁড়িতে বসে ছিলাম হতবুদ্ধি হয়ে! পুরো ইউনিট গলির অন্য একটা বাঁকে চুপ করে অপেক্ষা করে থাকল। তার পর শেষ করলাম শুটিং।”
জেট্-এর সঙ্গে শেষ দেখা হয়নি পরিচালকের। তাই বারাণসীর গঙ্গায় প্রিয় পোষ্যের জন্য প্রার্থনা করে প্রদীপ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন কৌশিক। পরিচালক লিখেছেন, “বিকেলে সূর্যাস্তের ঠিক আগে কলকাতা ফেরার পালা। নৌকো নিয়ে অন্য একটা ঘাটে যাওয়া, তারপর সেখান থেকে এয়ারপোর্ট। নৌকোতে সবাই আমরা চুপ করে বসে। একটা চ্যাপটা শালপাতার থালায় জেটের ছবি, ফুল, আর প্রদীপ জ্বালিয়ে ভাসিয়ে দিলাম বেনারসের গঙ্গায়!”
চার বছর কেটে যাওয়ার পরেও জেট্ রয়ে গিয়েছে মনের মণিকোঠায়। তাই আজও শোকাচ্ছন্ন হয়ে কৌশিক সেই দিনের প্রসঙ্গে লিখেছেন, “সূর্য ডুবছে বলে আকাশের রং প্রদীপের শিখার মতো। আমার নৌকো বাড়ি ফিরছে, আর উল্টো স্রোতের টানে আমাদের আদরের জেট্ ফুলের ভেলায় ভাসতে ভাসতে প্রদীপটা নিয়ে ক্রমশ আমার থেকে দূরে, আরও দূরে চলে গেল!” কৌশিকের এই পোস্টে আবেগঘন হয়ে পড়েছেন তাঁর অনুরাগীরা।