Veeran Actress Basanti Chatterjee's Death Reaction

‘মা’কে হারালেন ভাস্বর! ‘উপার্জনের তাগিদে অসুস্থ বাসন্তীদিকে শুটিংয়ে আসতেই হত’, জানালেন রূপসা

টেলিপাড়া শোকস্তব্ধ বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে। ওঁর জীবনযুদ্ধকে কুর্নিশ করেছেন সকলে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১২:১৪
রূপসা চক্রবর্তী, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

রূপসা চক্রবর্তী, ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ছবি: ফেসবুক।

গত ছ’মাস শয্যাশায়ী। বিছানা ছেড়ে ওঠার ক্ষমতা ছিল না। ফলে, শুটিংয়েও যেতে পারেননি বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাত ১০টায় চিরকালের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। তাঁর মৃত্যুর খবর আর্টিস্ট ফোরামে পৌঁছতেই শোকের ছায়া টেলিপাড়ায়। কারণ, তাঁর ৮৮ বছরের জীবনযুদ্ধ খুব কাছে থেকে দেখেছেন সহ-অভিনেতা, কলাকুশলীরা। তাঁদের আফসোস, নিজের খরচ জোগাতে শরীরে না পোষালেও শুটিংয়ে আসতেই হত তাঁকে!

Advertisement

ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় যেমন আনন্দবাজার ডট কমের কাছে দুঃখ করেছেন। বলেছেন, “ধারাবাহিক ‘গীতা এলএলবি’তে বাসন্তীদি আমার মা হয়েছিলেন। মনে হচ্ছে যেন সত্যিই মাতৃবিয়োগ হল। কিছু দিন আগেই ধারাবাহিকে আমার ‘বাবা’র চরিত্রাভিনেতা নিলাদ্রি লাহিড়িকে হারালাম।” পর্দার সূত্রে বাসন্তী-ভাস্বরের মধ্যে বাস্তবে মা-ছেলের আত্মিক টান গড়ে উঠেছিল। যত বার বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অসুস্থ হয়েছেন তত বার তিনি সমাজমাধ্যমে তাঁর চিকিৎসার খরচের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। সে প্রসঙ্গ তুলতেই অভিনেতার দাবি, “দিদি যে কী কষ্ট করেছেন, কতটা কষ্ট পেয়েছেন— সব দেখেছি। বিশেষ করে শেষ দিকে বড্ড বেশি যন্ত্রণা সহ্য করে গেলেন।” স্নেহাশিস চক্রবর্তীর ধারাবাহিকে কাজ করে একটা প্রাপ্তি ঘটেছে সদ্যপ্রয়াত অভিনেত্রীর। তবে বড়পর্দা তাঁকে কখনও ‘আইনজীবী’র চরিত্রে ভাবেনি। ‘গীতা এলএলবি’ তাঁকে সেই চরিত্র দিয়েছে। “দিদি এই তৃপ্তি নিয়ে চলে গেলেন”, বললেন ভাস্বর।

বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় তখন প্রায় নিঃস্ব। ক্যানসার, কিডনির সমস্যা তাঁকে শয্যাশায়ী করে দিয়েছে। শুটিংয়ে যেতে পারছেন না। চিকিৎসাও প্রায় বন্ধ। সেই সময় যাঁরা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রযোজক স্নেহাশিস। তিনি নিঃশব্দে অভিনেত্রীর চিকিৎসা এবং জীবনধারণের প্রয়োজনীয় ব্যয় বহন করেছিলেন। স্নেহাশিসের অভিনেত্রী স্ত্রী রূপসা চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের প্রযোজনায় অনেক ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন দিদি। দেখে খুব খারাপ লেগেছে, শরীর না দিলেও রোজ দমদম পার্ক থেকে আসতেন টালিগঞ্জে। শুটিং করতেন। ক্যামেরার মুখোমুখি হলে অবশ্য অসুস্থতার কথা মনে থাকত না তাঁর। অত সমস্যা নিয়েও কী সাবলীল ভাবে প্রত্যেকটা চরিত্র ফুটিয়ে তুলতেন।”

শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। প্রায় ২০ হাজার টাকার ওষুধ খেতে হত তাঁকে প্রতি মাসে। সাড়ে ৪ হাজার টাকা খরচ হত ইনজেকশনে। এক গৃহসহায়িকার সঙ্গে দমদম পার্কের বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। অভিনেত্রীর মেয়ে থাকেন অন্যত্র।

Advertisement
আরও পড়ুন