Sudhir Mishra In Kolkata

‘মাছ মিষ্টি মোর’ আর গান্ধীজি! কলকাতায় ছবি করবেন সুধীর মিশ্র, পথের কাঁটা কি সেই ফেডারেশন?

কথা দিয়েছিলেন, বাংলায় এসে তিনটি ছবির শুটিং করবেন। তারই একটির জন্য সরেজমিনে শহরে পরিদর্শন করে গেলেন সুধীর মিশ্র। কলকাতায় আসবেন, মাছ খাবেন না? মিষ্টিও ছিল পাতে।

Advertisement
উপালি মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৫ ১৯:৩৬
কলকাতায় সুধীর মিশ্র।

কলকাতায় সুধীর মিশ্র। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলায় শুটিং? এখানে যে রয়েছে ফেডারেশনের দাদাগিরি, পরিচালকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, কলাকুশলীদের হঠাৎ বেঁকে বসার রোগ!

Advertisement

সবই জানেন তিনি। সব দিক সামলেই বাংলায় তিনটি হিন্দি ছবির শুটিং করবেন, কথা দিয়েছিলেন। কথা রাখতে সোমবার শহর কলকাতায় সুধীর মিশ্র। আগামী তিনটি ছবির একটির জন্য সরেজমিনে শহর পরিদর্শন সারলেন তিনি। যাত্রা শুরু আনন্দবাজার ডট কমের অফিসের সামনে থেকে। সেখান থেকে সোজা বেলেঘাটা, গান্ধী ভবনে। তা হলে কি এ ছবি গান্ধীকে নিয়েই? প্রশ্ন রাখতেই জবাব এল, “আমার মায়ের জীবনে গান্ধীজির প্রভাব প্রবল। আমার দাদু ছিলেন স্বাধীনতাসংগ্রামী। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, গান্ধীজির সঙ্গে নিত্য ওঠাবসা। ওঁদের গল্প শুনতে শুনতে বড় হয়েছি।”

পরিচালকের মায়ের ইচ্ছে ছিল, ছেলে তাঁর ছেলেবেলা, তাঁর আদর্শ নিয়ে ছবি বানাবেন। সেই ইচ্ছেই পূরণ করতে চলেছেন তিনি। ছবির পটভূমিকায় মা-ছেলের কথোপকথন। সেখানেই আসবেন গান্ধীজি। সুধীরের তিনটি ছবির প্রযোজক তাঁর প্রিয় বন্ধু প্রীতিময় চক্রবর্তী।

ঘড়ির কাঁটা তখন বেলা আড়াইটে। গাড়ি এগোচ্ছে শিয়ালদহের দিকে। রাস্তা দেখতে দেখতে পরিচালক আনমনা। দুপুরের মেনুতে ভাত, মাছ, পোস্ত ছিল? পাশে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন। এলোমেলো লম্বা চুলে আঙুলের চিরুনি বোলাতে বোলাতে বললেন, “জানেন তো বাঙালি বৌ আমার। বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। আমি মুক্তিপণ নিয়েছি তাঁর বাঙালি রাঁধুনিকে! বাঙালি সব খাবার আমি জানি।” তবে এ দিন তিনি কন্টিনেন্টাল মাছের পদ দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন।

তিনটি ছবির একটিতে তাঁর বাবার ছেলেবেলা আর একটি বিশুদ্ধ প্রেম জায়গা করে নেবে। মাকে নিয়ে যে ছবিটি বানাতে চলেছেন তাঁর দ্বিতীয় কিস্তিতে চিত্রনাট্য লেখা শেষ। বললেন, “আমি সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় কিস্তিতে চিত্রনাট্য বানাই। আজ গান্ধী ভবন দেখলাম মানেই কাল শুটিং নয়। কাজ শুরু হবে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে।” বলতে বলতেই গন্তব্যের সামনে সুধীরের গাড়ি। নেমে এ দিক-ও দিক চাইছেন তিনি, কোনটা গান্ধী ভবন? পথচলতি এক তরুণী সুধীরকে নির্দিষ্ট বাড়ি চিনিয়ে দিয়ে একটু থমকে গেলেন।

চিনতে পারলেন নাকি ‘হাজ়ারোঁ খোয়াইসে অ্যায়সি’র পরিচালককে?

সুধীরের সে দিকে মন নেই। তিনি মূল ফটক খুলিয়ে ভিতরে ঢুকলেন। পায়ে পায়ে ঘুরলেন প্রত্যেকটি ঘর। ছবি তোলার অনুমতি নেই। পরিচালকের চোখই যেন ক্যামেরা! খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে জানালেন, একদিন ছবির শিল্প নির্দেশককে নিয়ে আসতে হবে। তিনি কিছু ছবি এঁকে নিয়ে যাবেন। ঘুরেফিরে দেখা শেষ। আধ ঘণ্টার মধ্যে ‘রেকি’ সেরে তিনি ফের গাড়িতে। এলাকার কাকপক্ষী টের পেল না, জাতীয় স্তরের এক পরিচালক বেলেঘাটা ঘুরে গেলেন!

অলস বিকেল। ততোধিক অলস পরিচালক। রাতেই রওনা হবেন মুম্বই। বললেন, “যাওয়ার আগে কলকাতার চা আর সুগার ফ্রি মিষ্টি খাব।” ঘুরে তাকিয়ে বললেন, “কলকাতার এই প্রজন্মের প্রেম নিয়ে কী ধারণা আপনার?” একই প্রশ্ন ফিরে তাঁকে করাতে রাস্তার দিকে উদাসীন দৃষ্টি মেলে বললেন, এই প্রজন্ম অনেক বেশি প্রতিবাদী। তারা প্রশ্ন করে। বিনা বিপ্লবে কিছুই মানে না। প্রেমের ক্ষেত্রেও। সে সব নিয়েই গল্প এগোবে। নাসিরুদ্দিন শাহ নাকি গান্ধী চরিত্রে? “তাই নাকি? জানতাম না তো! ভাল বলেছেন। ভেবে দেখতে হবে।” আশ্বস্ত করলেন, বাংলার অভিনেতারাও থাকবেন।

ফেডারেশন, স্বরূপ বিশ্বাসের বিষয়টি? এ বার মুখ খুললেন প্রযোজক। বললেন, “প্রাথমিক কথা হয়েছে। স্বরূপ বলেছেন, সব রকম সহযোগিতা করবেন। উনিও চান, বাংলায় বাণিজ্য আসুক। বাংলায় বলিউড আসুক।”

Advertisement
আরও পড়ুন