Vidya Balan Diet

শত চেষ্টাতেও যে ওজন ঝরেনি তা একটি বিশেষ ডায়েটে কমেছিল বিদ্যা বালনের! কী খেয়েছিলেন

বিদ্যা বালনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, হঠাৎ রোগা হলেন কী করে? শরীরচর্চায় কোনও বদল এনেছেন নাকি খাওয়াদাওয়ায় পরিবর্তন এনেছেন? জবাবে বিদ্যা বলেছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন গত এক বছরে আমি শরীরচর্চা সে ভাবে করিইনি।’’

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৫ ১০:০৯
কোন ডায়েটে তন্বী হলেন বিদ্যা বালন?

কোন ডায়েটে তন্বী হলেন বিদ্যা বালন? ছবি : সংগৃহীত।

বলিউডের অন্যান্য অভিনেত্রীদের থেকে বরাবরই একটু আলাদা বিদ্যা বালন। বিশেষ করে চেহারার নিরিখে। কেরিয়ারের একেবারে শুরুর দিকে তাঁর চেহারা খানিক রোগা ছিল বটে কিন্তু পরের দিকে ওজন ধীরে ধীরে বেড়েছে এবং সম্প্রতি কমেওছে। বিদ্যা কোনও দিনই তাঁর ভারী চেহারা নিয়ে হতাশার কথা বলেননি। কিন্তু ভিতরে ভিতরে যে তিনি ওই চেহারার সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তা জানা গেল এত দিনে। সম্প্রতি এক পডকাস্টে তিনি বলেছেন সেই লড়াইয়ের কথা এবং লড়াই শেষের স্বস্তির গল্পও। বলেছেন, ‘‘হাজার শরীরচর্চা করে যা হয়নি, তা এক দিন খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস বদলে ফেলে হয়ে গেল!’’

Advertisement

গত এক বছর হল বেশ ঝরঝরে দেখাচ্ছে বিদ্যাকে। ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ছবিতে মাধুরীর সঙ্গে নাচের দৃশ্যে তাঁর নব অবতার দেখে চমকে গিয়েছিলেন ভক্তেরা। তার পর থেকে বিদ্যা নানা সাজে চমক দিয়েই চলেছেন বলিউডপ্রেমীদের। রোগা হওয়ার পর নানা রকম পোশাক এবং লুক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কী করে এমন রোগা হলেন? শরীরচর্চায় কোনও বদল এনে নাকি খাওয়াদাওয়ায় পরিবর্তন করে? জবাবে বিদ্যা বলেছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন গত এক বছরে আমি শরীরচর্চা সে ভাবে করিইনি। তবে এক বিশেষ ধরনের ডায়েট মেনে চলেছি।’’

‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ছবির দৃশ্যে বিদ্যা বালন।

‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ছবির দৃশ্যে বিদ্যা বালন। ছবি: সংগৃহীত।

বিদ্যা জানিয়েছেন, একটি যাপন সংস্থার সদস্য হিসাবে তাদের বিভিন্ন কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি জানতে পারেন, তাঁর মোটা হওয়ার নেপথ্য কারণ। বিদ্যা বলছেন, ‘‘আমার ওজন বৃদ্ধির কারণ ছিল ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ। ওঁরাই আমাকে সেটা বলেন। এ-ও জানান যে, স্থূলত্ব আসতে পারে প্রদাহের সমস্যা থেকেও। সেক্ষেত্রে শরীরচর্চা করেও কাজ হবে না।’’

ওই সংস্থার তরফেই বিদ্যাকে একটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি ডায়েট চার্ট তৈরি করে দেওয়া হয়। বিদ্যা জানাচ্ছেন, তাঁর এখনকার চেহারা ওই ডায়েটেরই ফল। তিনি বলছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন কেরিয়ারের শুরুর দিন থেকে আমি যুদ্ধ করে আসছি আমার ওজনের সঙ্গে। এই হয়তো কড়া ডায়েট করে, প্রচুর পরিশ্রম করে, শরীরচর্চা করে রোগা হলাম। তার পরে যেই একটু রাশ আলগা হল, দেখলাম মোটা হতে শুরু করেছি। কিন্তু সেটা তো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। এত তাড়াতাড়ি মেদ শরীরে ফিরে আসতে পারে না। শেষে ওই অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি ডায়েট করে আমার ওজন ঝরল। আর বিশ্বাস করুন গত এক বছর আমি সে রকম কঠোর কোনও শরীরচর্চাই করিনি।’’

রোগা হওয়ার পর নানা রকম পোশাক এবং লুক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন বিদ্যা।

রোগা হওয়ার পর নানা রকম পোশাক এবং লুক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন বিদ্যা।

অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি ডায়েট কী?

এ প্রশ্নের উত্তর জানার আগে জানতে হবে ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ কী? প্রদাহ হল একটি শারীরিক বিক্রিয়া যা শরীরের জন্য যেমন জরুরি, তেমনই অতিমাত্রায় হলে শরীরের নানা ক্ষতিও হতে পারে। পুষ্টিবিদ গুঞ্জন তানেজা খানিক ব্যাখ্যা করে বলছেন, ‘‘রোগের সঙ্গে লড়াই করার যে ক্ষমতা, তার জন্য প্রদাহ জরুরি। আবার সেই প্রদাহই যখন বেড়ে যায়, তখন তা ক্যানসারের মতো জটিল অসুখেরও কারণ হতে পারে।’’ তাই প্রদাহকে নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। আর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি ডায়েট সেই কাজটিই করে।

এই ধরনের ডায়েটের বিশেষত্ব কী?

অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি ডায়েটে সেই সব খাবার সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়, যা প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন প্রক্রিয়াজাত খাবার, ময়দা-চিনির মতো অতি পরিশোধিত খাবার ইত্যাদি। তার বদলে রাখা হয় সেই সমস্ত খাবার যা প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। যেমন তাজা ফলমূল, শাকসব্জি, ডাল, মাছ, বাদাম, দই, ছানা, ওটস, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি। ভারতীয় রান্নাঘরে থাকা বেশ কিছু মশলা যেমন, হলুদ, আদা, রসুনও কমাতে পারে প্রদাহ।

প্রদাহনাশক চা

পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, একটি বিশেষ চা-ও শরীরের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে কাজে দিতে পারে। তার জন্য লাগবে— ১ টেবিল চামচ কুচনো আদা, ১ টেবিল চামচ কুচনো কাঁচা হলুদ, এক চিমটে গোলমরিচ, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস আর চাইলে এর সঙ্গে ভাল মধু মেশাতে পারেন এক চা চামচ। প্রতি দিন নিয়ম করে এই চা রাতে ঘুমোনোর আগে খেতে পারলে অথবা সকালে খালি পেটে খেলে তা প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন