Malaria Vaccine

বিশ্বে প্রথম তৈরি ম্যালেরিয়া টিকার দাম কমছে, দেওয়া হবে এ দেশের শিশুদেরও, খরচ কত পড়বে?

ভারতের প্রতিষেধক নির্মাতা সংস্থা ভারত বায়োটেক ঘোষণা করেছে যে, ম্যালেরিয়ার টিকার দাম কমছে। কম দামে আসবে এ দেশেও। একটি ডোজ়ের দাম কত পড়বে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫ ১১:০৩
Bharat Biotech announce price reduction for the world\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s first malaria vaccine

ম্যালেরিয়ার টিকা কবে আসবে এ দেশে,দাম কত পড়বে? ফাইল চিত্র।

অবশেষে আশার কথা শোনা গেল। ম্যালেরিয়ার প্রথম প্রতিষেধক আবিষ্কারের কথা ঘোষণা হয় ২০২১ সালে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র অনুমোদন পেয়ে টিকা বেশ কিছু দেশে এলেও, এ দেশের বাজারে আসেনি। টিকার দাম কত হবে তা নিয়ে নানা আলোচনাও চলে দীর্ঘ সময় ধরে। এত দিন পরে টিকার নির্মাতা সংস্থা ‘গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন’ এবং ভারতের প্রতিষেধক নির্মাতা সংস্থা ভারত বায়োটেক ঘোষণা করেছে যে, ম্যালেরিয়ার টিকার দাম কমছে। কম দামে আসবে এ দেশেও। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষ থেকে এ দেশের শিশুদেরও দেওয়া শুরু হতে পারে।

Advertisement

হু-র দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ফি বছর বিশ্বে গড়ে ১০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়ায়। বর্ষার সময় আসছে। ম্যালেরিয়ার উৎপাত শুরু হবে এ দেশেও। জেলায় জেলায় প্রতি বছরই ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। যদিও ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হার অনেক কমেছে, তবে রোগ নির্মূল করা যায়নি। জমা জল, জায়গায় জায়গায় জমে থাকা আবর্জনা স্তূপ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মশার বংশবৃদ্ধি হয়েই চলেছে। তাই গবেষকেরা মনে করছেন, যদি আগে থেকেই টিকা দিয়ে রাখা যায়, তা হলে রোগের তীব্রতা অনেকটাই কমতে পারে। মশা বাহিত রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধশক্তিও তৈরি হবে শরীরে।

প্রতিষেধকটি নাম ‘আরটিএস, এস’ বা ‘মসকিউরিক্স’। ব্রিটিশ ওষুধ সংস্থা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন-এর বানানো ম্যালেরিয়ার এই টিকা ৬ সপ্তাহ থেকে ১৭ মাসের শিশুদেরও দেওয়া যাবে বলে খবর। এই টিকা লিভারের সংক্রমণও রুখতে পারবে বলে দাবি। ম্যালেরিয়ার এই টিকা প্রথম বানানো হয়েছিল ৩৪ বছর আগে। ১৯৮৭ সালে। কিন্তু সেই টিকাকে এত দিন হু স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি। ২০১৯ সালে হু-র তত্ত্বাবধানে আফ্রিকার দেশগুলিতে শিশুদের এই টিকা দিয়ে সাফল্য পাওয়ার পরে, ২০২১ সালে টিকাটিকে অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মসকিউরিক্স টিকা বস্তুত ০.৫ মিলিলিটারের একটি ইঞ্জেকশন, যা কাঁধে বা ঊরুতে দেওয়া হয়। পর পর তিন মাসে শিশুদের এই টিকা দেওয়া হয় তিন বার। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া টিকাটি দেওয়া হয় না। এ দেশে প্রতিষেধকটি তৈরি ও বিক্রির দায়িত্ব ভারত বায়োটেকের। তারা জানিয়েছে, ৪০০ টাকারও কম দামে এ দেশে টিকাটি বিক্রি করা হবে। তবে শিশুদের কোন বয়স থেকে দেওয়া হবে, কাদের দেওয়া যাবে না, সে বিষয়ে সরকারি কোনও তথ্য এখনও অবধি পাওয়া যায়নি।

পরীক্ষাগারে কিংবা পরীক্ষামূলক ভাবে কোনও টিকার সাফল্য আর কার্যক্ষেত্রে সেটির প্রয়োগের মধ্যে অনেক পাথর্ক্য থাকে। প্রকৃত ভাবে জনস্বাস্থ্য প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে আরও কিছু পথ পেরোতে হয় বলেই মত চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের। শুধু টিকাতেই যে ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রমণকে রুখে দেওয়া যাবে তা নয়। যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে টিকাকরণ অন্যতম বড় হাতিয়ার ঠিকই, তবে মশা নিধন, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, মশারির ব্যবহার, রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া— এ সবও জরুরি বলেই মত চিকিৎসকের।

Advertisement
আরও পড়ুন