Anxiety Attack Reducing Technique

হঠাৎ তীব্র আতঙ্কে শরীর অবশ! ‘অ্যাংজ়াইটি অ্যাটাক’ দ্রুত কমাতে হাতের বিশেষ খেলা কি কার্যকরী?

‘অ্যাংজ়াইটি অ্যাটাক’ বা ‘প্যানিক অ্যাটাক’। অদৃশ্য ঝড়ের মতো তাণ্ডব চালিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়। আর তার দাপট কখনও কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টাও চলে। ‘হ্যান্ড স্কেটিং’য়ে কাজ হতে পারে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৭:১৯
প্যানিক অ্যাটাক সামলানোর উপায় কী?

প্যানিক অ্যাটাক সামলানোর উপায় কী? ছবি: এআই।

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আপাত ভাবে খুব সাধারণ একটি মানসিক রোগ। ঘরে ঘরে এই অসুখে ভুগছে বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। কিন্তু এই রোগই যখন গুরুতর হয়ে যায়, তখন তার সঙ্গে মোকাবিলা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। সেই গুরুতর অবস্থাকে বলা হয় ‘অ্যাংজ়াইটি অ্যাটাক’ বা ‘প্যানিক অ্যাটাক’। অদৃশ্য ঝড়ের মতো তাণ্ডব চালিয়ে দিয়ে বেরিয়ে যায়। আর তার দাপট কখনও কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টাও চলে। এর ফলে স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাবও পড়তে পারে।

Advertisement

সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একাধিক বিশেষ প্রক্রিয়া জনপ্রিয় হয়েছে, ‘হ্যান্ড স্কেটিং’, ‘ফিঙ্গার স্কেটিং’। বলা হচ্ছে, মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই উদ্বেগ কমিয়ে মনকে শান্ত করতে পারে এই কৌশলগুলি। এ ছাড়াও আরও নানা ধরনের পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াগুলি আদপে কতখানি কার্যকরী?

হ্যান্ড স্কেটিং হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে দু’টি হাত হালকা ঘর্ষণের মাধ্যমে দোলাতে হবে। স্কেটিংকে দূর থেকে দেখতে যেমন লাগে, সে ভাবেই হবে হাতের চলন। আর ফিঙ্গার স্কেটিংয়ে হাওয়ায় আল্পনা আঁকতে হয়। হাতের আঙুল চালাতে হবে ছন্দ মেনে।

কিন্তু আদৌ কি এই পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত?

‘ফিঙ্গার স্কেটিং’ নিয়ে মনোবিদ আত্রেয়ী ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘আঙুল চালিয়ে হাওয়ায় আল্পনা আঁকা শুনে মনে হতে পারে শিশুদের খেলা। কিন্তু যখন তীব্র উৎকণ্ঠায় ভোগে মানুষ, প্রবল উদ্বেগের সময়ে কান-মাথা গরম হয়ে যায়, বুক ধড়ফড় করে, পেশি শক্ত হয়ে যায়, হৃৎস্পন্দন বে়ড়ে যায়, সে সময়ে শরীরকে ঠান্ডা করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেই সময়ে এই পদ্ধতি সাহায্য করতে পারে। এই কৌশলের মূলে রয়েছে ‘বাইল্যাটারাল স্টিমুলেশন’। মস্তিষ্কের দু’টি ভাগ, অর্থাৎ লেফট হেমিস্ফিয়ার আর রাইট হেমিস্ফিয়ার। যখনই আমরা হাতের আঙুল দিয়ে হাওয়ায় আঁকা শুরু করি, এই দু’টি হেমিস্ফিয়ারের মধ্যে সংযোগ ঘটে। তাতে আমাদের প্যারাসিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম খানিক প্রশমিত হয়। ফলে শরীর ঠান্ডা হয়, মনও শান্ত হয়।’’

‘হ্যান্ড স্কেটিং’ নিয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘হ্যান্ড স্কেটিং বিজ্ঞানসম্মত কোনও পদ্ধতি নয়। আমি বাতিল করে দিতে বলছি না। তবে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। হাওয়ায় কোনও কিছু কল্পনা করে হাত দিয়ে আঁকুন অথবা হাত ঘষে চলুন স্কেটিংয়ের মতো। বিষয়গুলির মধ্যে একটি মিল রয়েছে। তা হল মাইন্ডফুলনেস অনুশীলন। হাতের চলনটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু একটা বিশেষ পদ্ধতিতে হাত ঘষে ঘষে ডান দিক বাঁ দিক করতে বলা হয়। আর মনোযোগটা ওই কাজেই রাখতে বলেন। যখন প্যানিক অ্যাটাক হয়, খারাপ ভাবনাচিন্তা মাথায় ভিড় করতে থাকে। সেখান থেকে মনকে সরিয়ে নেওয়াটা খুব দরকার। হাতের ওই চলন সে ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। মন থেকে খারাপ ভাবনাগুলো ধীরে ধীরে সরিয়ে নিতে পারে এই পদ্ধতি। তার কারণ ওই একটিই, মনটাকে সরিয়ে নেওয়া। যদি হাতের এই কৌশলটি প্রয়োগ করতে করতে যদি খারাপ ভাবনাগুলিই মাথায় চলে, তাতে কোনও লাভ নেই। হ্যান্ড স্কেটিং সহজ হাতিয়ার হতে পারে, প্রবল উদ্বেগ থেকে মনকে যা খানিক শান্তি দিতে পারে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন