CellBot Technology

কঠিন ব্যামোয় ভুগছেন? কী চিকিৎসা করাবেন, কোন ওষুধ খাবেন বলে দেবে ‘সেলবট’, চ্যাটবটের সঙ্গে তফাত কোথায়?

চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে কোনও জটিল গবেষণা, নতুন আবিষ্কার, এমনকি ওষুধ বা প্রতিষেধক খোঁজাখুঁজিতেও সাহায্য করবে ‘সেলবট’। আপনার কঠিন ব্যাধির চিকিৎসাও বলে দেবে অবলীলায়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১৬:০২
CellBot is setting the stage for the next generation of AI-driven healthcare solutions

চ্যাটবট নয়, সেলবট, কী সেটি? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

জ্বর বা পেটখারাপ হলে কী ওষুধ খাবেন, তার উত্তর ঝটপট দিয়ে দিচ্ছে চ্যাটজিপিটি বা চ্যাটবট। কিন্তু সেই ওষুধটি কী ভাবে তৈরি হয়েছে বা দুরারোগ্য কোনও ব্যধি সারাতে গেলে চিকিৎসা ঠিক কেমন হতে হবে, সে সংক্রান্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারছে কি? রোজের সাধারণ কিছু সমস্যা বা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এখন অনেকেই চ্যাটবটের উপর ভরসা রাখছেন। কিন্তু যখনই বিষয়টি জটিল হবে তখন আর চ্যাটবটের সাধ্যে কুলিয়ে উঠবে না। সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতেই নতুন আরেক প্রযুক্তি এসেছে, যার নাম ‘সেলবট’। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে কোনও জটিল গবেষণা, নতুন আবিষ্কার, এমনকি ওষুধ বা প্রতিষেধক খোঁজাখুঁজিতেও সাহায্য করবে ‘সেলবট’। আপনার কঠিন ব্যাধির চিকিৎসা পদ্ধতিও বলে দেবে অবলীলায়।

Advertisement

আমেরিকর সেলস্টার্ট সংস্থার তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত বিশেষ এক রকম চ্যাটবট হল ‘সেলবট’। মূলত চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণামূলক কাজেই এর ব্যবহার হবে। নতুন ওষুধ তৈরির গবেষণায়, দুরারোগ্য ব্যধির চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষায়, এমনকি রোজের ব্যবহারের ওষুধপত্র নিয়েও কথা বলবে ‘সেলবট’। গবেষণা সংক্রান্ত কাজে সাহায্য করবে চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীদের। সংস্থার প্রযুক্তিবিদেরা জানিয়েছেন, কোন ওষুধ তৈরি করতে কী উপাদান লাগবে, তার খোঁজ পেতে বছরের পর বছর লেগে যায়। সেই কাজই চটজলদি করে দিতে পারবে ‘সেলবট’। আবার যিনি কঠিন ব্যামোয় ভুগছেন এবং কী চিকিৎসা করাবেন, কোন পথে এগোবেন তা বুঝতে পারছেন না, তাঁকেও সাহায্য করবে ‘সেলবট’। গবেষক থেকে সাধারণ মানুষ— চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোনও কাজে এআই নিয়ন্ত্রিত এই কম্পিউটার অ্যালগরিদ্‌মকে ব্যবহার করা যাবে বলেই দাবি করা হয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা আজ একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। উদ্বেগ, হতাশা, ঘুমের সমস্যা, এবং আত্মহত্যার প্রবণতা অপ্রতিহত। ভারতের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা (ন্যাশনাল মেন্টাল হেলথ সার্ভে) অনুযায়ী, প্রতি সাত জন ভারতীয়ের মধ্যে এক জন কোনও না কোনও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, অথচ মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা এখনও অনেকের নাগালের বাইরে। বেশির ভাগ মানুষ মানসিক সমস্যার কথা কাউকে বলতে লজ্জা বা ভয় পান। চিকিৎসকের কাছে যেতে দ্বিধা বোধ করেন, সময় পান না বা আর্থিক সামর্থ্য থাকে না। গ্রামীণ এলাকায় এই সমস্যা আরও প্রকট, কারণ সেখানে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসকদের অভাব খুব বেশি। এই সঙ্কট মোকাবিলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন নতুন সমাধান হিসেবে উঠে আসছে। এআই-ভিত্তিক চ্যাটবট, মানসিক অবস্থা বিশ্লেষণকারী সফ্‌টওয়্যার এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে মেশিন লার্নিং-এর ব্যবহার ধীরে ধীরে বদলে দিচ্ছে চিকিৎসার রীতি। সে কাজেও ‘সেলবট’-কে কাজে লাগানোর কথা ভাবছেন প্রযুক্তিবিদেরা।

এই অ্যালগোরিদ্‌মকে কাজে লাগিয়ে যে কোনও গবেষণার বিষয়ে জানা যাবে। পাবমেডের সঙ্গেও সংযুক্তি ঘটানো হবে এর। ফলে পাবমেড থেকে যে সব গবেষণাপত্র বেরিয়েছে, সেগুলি বিশ্লেষণ করেও তথ্য দিতে পারবে ‘সেলবট’। পাশাপাশি, ‘কগনিটিভ বিহেভেরিয়াল থেরাপি’ ও ‘ডিজিটাল থেরাপিস্ট’-এর কাজও করবে। আপাতত ইউরোপে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের কিছু হাসপাতাল ও গবেষণাকেন্দ্রে ‘সেলবট’ ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী দিনে জনসাধারণের জন্যও এর দরজা খুলে যাবে বলেই জানা গিয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন