Kindey Disease Symptoms

চুলকানি, সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগও হতে পারে কিডনির রোগের লক্ষণ, সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা

খসখসে ত্বক বা চুলকানি, র‌্যাশ এবং কিছু ক্ষেত্রে সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ দেখা দিতে থাকলে তা কিডনির সমস্যার কারণেও হতে পারে। নিছক চর্মরোগ ভেবে মলম লাগালে বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেয়ে ফেললেই মুশকিলে পড়বেন। তাতে অসুখ তো কমবেই না, আরও বেড়ে যাবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫ ১২:০২
Early warning signs of kidney illnesses that we should not overlook

সারা গায়ে চুলকানি, চামড়া শুকিয়ে যাওয়াও কিডনির অসুখের লক্ষণ? ছবি: ফ্রিপিক।

কিডনির অসুখ মানেই যে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসবে বা প্রস্রাবের রং বদলে যাবে, তা না-ও হতে পারে। এমন অনেক লক্ষণ দেখা দিতে থাকে, যেগুলি সাধারণ ভেবে এড়িয়েই যান অনেকে। যেমন, হঠাৎ করেই যদি দেখা যায় ত্বক শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে, সারা গায়ে চুলকানি হচ্ছে, অথবা সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ হলে যেমন আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে, তেমনই উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তা হলে কিন্তু সাবধান হতে হবে। নিছক চর্মরোগ ভেবে মলম লাগালে বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেয়ে ফেললেই মুশকিলে পড়বেন। তাতে অসুখ তো কমবেই না, আরও বেড়ে যাবে।

Advertisement

‘ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ়’ (সিকেডি) নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে বই কমেনি। কয়েক মাস আগেই, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) দেশের নানা জায়গায় সমীক্ষা চালিয়ে জানিয়েছিল, ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল অবধি দেশে কিডনির রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১১.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৬.৩৮ শতাংশ হয়েছে। আক্রান্তদের তালিকায় শিশুরাও রয়েছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর এ দেশে লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হন কিডনির রোগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় দেরিতে হয়, ফলে অসুখ বিপজ্জনক জায়গায় চলে যায়। রোগ নির্ণয়ে কেন এত দেরি হয়, তার কারণ হল সঠিক সময়ে রোগের লক্ষণ চিনতে না পারা। কিডনির রোগ হলে প্রস্রাবের সমস্যা ছাড়াও আর যে সব উপসর্গ প্রকাশ পেতে থাকে, সেগুলি নিয়ে সাবধান করেছেন চিকিৎসকেরা। তার মধ্যে কিছু লক্ষণ একেবারেই অজানা।

খসখসে ত্বক বা চুলকানি, র‌্যাশ এবং কিছু ক্ষেত্রে সোরিয়াসিসের মতো চর্মরোগ দেখা দিতে থাকলে, তা কিডনির সমস্যার কারণেও হতে পারে। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘প্রুরিটাস’। এক ধরনের চর্মরোগ, যা নানা কারণে হতে পারে। মূলত শরীরে প্রদাহ বেড়ে গেলে এবং বেশি মাত্রায় টক্সিন জমা হতে থাকলে, তখন এই সমস্যা দেখা দেয়। দেশের ‘ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন’-এর তথ্য জানাচ্ছে, কিডনির অসুখের সঙ্গে প্রুরিটাসের নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। কী রকম?

কিডনির অসুখের সঙ্গে চর্মরোগের কী সম্পর্ক?

কিডনি শরীরের ছাঁকনির কাজ করে। দূষিত পদার্থ বার করে দেয়। এই প্রক্রিয়া যদি ব্যাহত হয়, তা হলে শরীরে সেই সব দূষিত পদার্থ জমা হতে থাকবে। ফসফরাসের মাত্রা বেড়ে যাবে এবং ক্য়ালশিয়াম ও ভিটামিন ডি-র পরিমাণের তারতম্য হবে। এতে শরীরের কোষগুলিতে মারাত্মক রকম প্রদাহ শুরু হবে যার রেশ পড়বে ঘর্মগ্রন্থিতে। এই গ্রন্থি যদি শুকিয়ে যেতে থাকে, তা হলে ত্বকের রন্ধ্র থেকে ধুলোময়লা বার হতে না পেরে তা জমতে শুরু করবে। ফলত ত্বক শুকিয়ে যাবে, চামড়া খসখসে হয়ে যাবে এবং চুলকানি বাড়বে।

চিকিৎসা কী?

প্রুরিটাস হলে চিকিৎসকেরা শরীরের লক্ষণ দেখে পরীক্ষা করেন যে কিডনির রোগ হচ্ছে কি না। তা হলে হিমোডায়ালিসিস করার প্রয়োজন হয়। তবে তাতেও যে সব দূষিত পদার্থ শরীরে থেকে বার করা যায় তা নয়। চর্মরোগ নিরাময় করতে মলম ও খাওয়ার ওষুধ দেন চিকিৎসকেরা। রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে ‘লাইট থেরাপি’ করাতেও হতে পারে। শরীরে যে জায়গায় র‌্যাশ বা ঘা হচ্ছে, সেখানে নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো পাঠিয়ে তা নিরাময়ের চেষ্টা করা হয়। তবে যে চিকিৎসাই হোক না কেন, তা লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর পরই শুরু হলে নিরাময় খুব তাড়াতাড়ি হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন