Symtoms of Bulimia

বুলিমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ! কী এই রোগ? উপসর্গই বা কী?

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন যে, তিনি বুলিমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই রোগের প্রধান উপসর্গ কী? ফতিমা ঠিক কী ভাবে বুঝলেন তাঁর শারীরিক সমস্যার কথা?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৫৮
ফাতিমা সানা শেখ।

ফাতিমা সানা শেখ। ছবি: সংগৃহীত।

অল্প বয়সেই বড় পর্দায় তাঁর অভিনয় নজর কেড়েছিল দর্শকের। ‘দঙ্গল’ ছবিতে প্রথম কাজ, তার পর বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতাদের সঙ্গে একের পর এক কাজ করে দর্শকের মন জয় করেছেন অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন যে, তিনি বুলিমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

Advertisement

‘দঙ্গল’ ছবিতে চরিত্রের প্রয়োজনে ফতিমাকে ওজন বৃদ্ধির জন্য দিনে ২৫০০-৩০০০ ক্যালোরির খাবার খেতে হত। ফতিমার কথায়, ‘‘ছবি শেষের পরেও অতিরিক্ত খাবার খেতেই থাকি। খাবার খাওয়া যেন আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে শুধুই খেতেই থাকতাম। তার পর আবার মনখারাপ হত। মনে হত, কেন এত বেশি খেলাম। একটা সময় বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কারণ, বেরোলেই খেতাম শুধু।’’ সেই সময় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের ভয়ে ফাতিমা শেষে উপোস করতে শুরু করেন। ফতিমা জানতেও পারেননি তিনি আসলে ইটিং ডিজ়অর্ডারে ভুগছেন। ইটিং ডিজ়অর্ডার মূলত দু’ধরনের— অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা আর বুলিমিয়া নার্ভোসা। ফতিমা বুলিমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

বুলিমিয়া কী?

বুলিমিয়ায় যাঁরা ভোগেন, তাঁরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনেকখানি খাবার খেয়ে নেন। খাবার খাওয়ার সময় কোনও রকম আত্মনিয়ন্ত্রণ থাকে না। হয়তো পনেরো মিনিটের মধ্যে কেউ একটা ফ্যামিলি পিৎজ়া শেষ করে ফেললেন বা একসঙ্গে ১০-১২টি আইসক্রিম খেয়ে নিলেন। এ ক্ষেত্রে সাধারণত উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতিই রোগীর আগ্রহ বাড়ে। খাওয়ার পরে আসবে এক ধরনের অপরাধবোধ, বেশি খেয়ে ফেলার জন্য। তখন বিভিন্ন উপায়ে তিনি চাইবেন এই অতিরিক্ত খাবার যাতে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে নানা রকম প্রবণতা দেখা যায়— কখনও গলায় আঙুল দিয়ে বমি করা, কখনও উপোস করা কখনও আবার মাত্রাতিরিক্ত শরীরচর্চা করা। একে বলা হয়, ‘কমপেনসেটরি বিহেভিয়র’।

কেউ যদি মাসে এক বার অনেকটা খেয়ে নানা ভাবে সেই ক্যালরি ঝরানোর চেষ্টা করেন, তাকে কিন্তু বুলিমিয়া বলা চলে না। দীর্ঘ দিন এমন আচরণ করতে করতে কোনও এক দিন ওজন কমানোর কথা মনে হলে তবেই তাকে বুলিমিয়ার পর্যায়ে ফেলা হবে। সপ্তাহে এক থেকে তিন বার এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তাকে মাইল্ড বলা হয়, দিনে এক বার পর্যন্ত হলে তাকে মডারেট বলা হয়, আর দিনে একাধিক বার হলে তাকে সিভিয়ার বা এক্সট্রিম বলা হয়।

বুলিমিয়ার ক্ষেত্রে ওজনের কিন্তু সে রকম তারতম্য হয় না। ওজন কমতে পারে, না-ও পারে, আবার বাড়তেও পারে। এখানেই অ্যানোরেক্সিয়া ও বুলিমিয়ার তফাৎ। অ্যানোরেক্সিয়ায় ওজন ভয়ঙ্কর কমে যায়। তাই অ্যানোরেক্সিয়ার রোগীদের দেখে রোগের বিষয় অনেকটা আন্দাজ করা যায়। কিন্তু বুলিমিয়া চট করে ধরা পরে না।

এই রোগের মূল থেরাপি হল— কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি। অর্থাৎ রোগীর চিন্তাভাবনাগুলোকে পরিবর্তন করা। তবে কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি কার্যকর হতে সময় লাগে। তাই রোগের মাত্রা দ্রুত কমানোর জন্য অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন