Male Birth Control Pill

পুরুষদের জন্মনিরোধক বড়ি ৯৯ শতাংশ সফল! আসবে খুব তাড়াতাড়ি, পুরুষত্বের ক্ষতি হবে না বলেই দাবি

বাজারে খুব তাড়াতাড়ি আসতে চলেছে ‘মেল কনট্রাসেপটিভ পিল’। গবেষকেরা জানিয়েছেন, সাময়িক ভাবে শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ করে জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে ওষুধটি, এতে পুরুষত্বের কোনও ক্ষতি হবে না।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৪৫
In a new study, a new male contraceptive pill was found to be effective in humans

পুরুষের জন্মনিরোধক বড়ি আসতে চলেছে, গবেষণায় বিজ্ঞানীরা। ছবি: ফ্রিপিক।

এত দিন ‘জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি’ বা ‘কনট্রাসেপটিভ পিল’ খাওয়ার দায় ছিল শুধুমাত্র মেয়েদেরই। সেই নিয়মে বোধ হয় এ বার একটু বদল ঘটতে চলেছে। বাজারে খুব তাড়াতাড়ি আসতে চলেছে ‘মেল কনট্রাসেপটিভ পিল’। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য আর শরীরে ছুরি-কাঁচি চালাতে হবে না। একটি ওষুধেই কাজ হবে বলে দাবি। ওষুধ খেলে পৌরুষ কমে যাবে কি না, সে নিয়েও চিন্তা ছিল। গবেষকেরা জানিয়েছেন, সাময়িক ভাবে শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ করে জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে ওষুধটি, এতে পুরুষত্বের কোনও ক্ষতি হবে না।

Advertisement

অসুরক্ষিত যৌনমিলনের পর সন্তানধারণের ঝুঁকি এড়াতে মহিলারা সঙ্গমের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গর্ভনিরোধক ওষুধ খান। এই ধরনের ওষুধ খেলে গর্ভধারণের ঝুঁকি প্রায় ৯০ শতাংশ কমে যায়। এ বার পুরুষদের জন্যও তেমন ব্যবস্থা হচ্ছে। নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ইওরচয়েস থেরাপিউটিক্স নামে একটি বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি যৌথ ভাবে পুরুষদের জন্মনিরোধক বড়ি নিয়ে গবেষণা করছে। জানা গিয়েছে, পুরুষ ইঁদুর ও বাঁদরের উপর পরীক্ষা সফল হওয়ার পরে নিউ ইয়র্কের অনেক মানুষের শরীরেই ওষুধটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য যে পুরুষেরা ভ্যাসেক্টমির সাহায্য নিচ্ছিলেন, তাঁরা এই পিলটি খেয়ে উপকৃত হয়েছেন বলে দাবি। মানুষের শরীরেও পরীক্ষা ৯৯ শতাংশ সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিউ ইয়র্কের বিজ্ঞানীরা। এই গবেষণার খবর ‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।

ওষুধটির নাম ‘ওয়াইসিটি-৫২৯’। কোনও রকম হরমোন দিয়ে ওষুধটি তৈরি করা হয়নি। তাই এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলেই দাবি করেছেন গবেষকেরা। গবেষণাগারে ইঁদুর ও বাঁদরের উপর তিন পর্যায়ের ট্রায়াল করে দেখা গিয়েছে, ইঁদুরকে ওষুধ খাওয়ানোর পর থেকে চার সপ্তাহের মধ্যেই জন্ম নিয়ন্ত্রণ হয়েছে আর বাঁদরের ক্ষেত্রে কাজ হয়েছে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ির কাজ হল, সাময়িক ভাবে তাঁর ঔরসের তেজ কমিয়ে দেওয়া। অর্থাৎ, শুক্রাণুর উৎপাদন সাময়িক ভাবে কমিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করে দেওয়া। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করলে আবার দিন কয়েকের মধ্যেই স্বাভাবিক ভাবে শুক্রাণু উৎপাদন হবে। কাজেই, ওষুধ খেলে পুরুষত্বের কোনও ক্ষতি হবে না বলেই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

একটা সময় ছিল যখন জন্মনিয়ন্ত্রণের দায় বর্তাত শুধুমাত্র নারীর উপর। সময় পাল্টানোর সঙ্গে বদলেছে দৃষ্টিভঙ্গিও। ভ্যাসেক্টমি বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে সমাজের নানা স্তরে। তবে পুরুষের জন্মনিরোধক বড়ি এলে সমাজে তার কী প্রভাব পড়বে, সে নিয়ে আগেও নানা তর্কবিতর্ক হয়েছে। অধিকাংশই ভেবেছেন যে, মহিলাদের মতো তাঁরাও যদি জন্মনিরোধক বড়ি খাওয়া শুরু করেন, তা হলে পুরুষত্বই হয়তো থাকবে না। গবেষকেরা জানিয়েছেন, তেমন কিছুই হবে না। বরং জন্ম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি যৌনরোগ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে ওষুধটি। সব ঠিক থাকলে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী আবিষ্কারই হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন