Gene Testing For Cancer

ক্যানসারের ঠিকুজি-কোষ্ঠী বার করে আয়ত্তে আনার কৌশল আসবে হাতের মুঠোয়, কোন পরীক্ষায় তা সম্ভব?

ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, জিনের পরীক্ষাতেই ক্যানসারের ঠিকুজি-কোষ্ঠী বার করা সম্ভব। কোন পথে চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে গেলে আরোগ্য হতে পারে, সে বিষয়ে স্বচ্ছ চিন্তাভাবনাও তৈরি হবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১০:১১
Learn why genetic mutation testing should be the first step in cancer diagnosis

ক্যানসারের চিকিৎসা হবে, শরীরের ক্ষতিও হবে না। ছবি: ফ্রিপিক।

পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে পরবর্তী প্রজন্মেরও তা হতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হয়। মা-বাবা বা খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, যাঁর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, তাঁদের কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক ভাবে ভয় থেকে যায়। অনেকে ভাবেন, যে তাঁরাও কোনও না কোনও সময়ে মারণরোগের কবলে পড়তে পারেন। তাই ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না, হলেও তা কতটা ছড়াবে, কী ধরনের ক্যানসার হতে পারে, খুঁটিনাটি সব তথ্যই চলে আসবে হাতের মুঠোয়। শুধু তা-ই নয়, মারণ রোগকে বাগে আনতে কোন ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতির প্রয়োজন, তা-ও বুঝতে পারবেন চিকিৎসকেরা। একটি বিশেষ পরীক্ষায় তা সম্ভব।

Advertisement

ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, জিনের পরীক্ষাতেই ক্যানসারের ঠিকুজি-কোষ্ঠী বার করা সম্ভব। কোন পথে চিকিৎসা এগিয়ে নিয়ে গেলে আরোগ্য হতে পারে, সে বিষয়ে স্বচ্ছ চিন্তাভাবনাও তৈরি হবে। জিনের ওই পরীক্ষার নাম ‘মিউটেশন টেস্টিং’। এই পরীক্ষা নিয়েই বিশ্ব জুড়ে গবেষণা চলছে।

কী এই মিউটেশন টেস্টিং’?

কোষের ডিএনএ-এর রাসায়নিক বদল বা মিউটেশন হলে ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তখন কোষে অস্বাভাবিক ও অনিয়মিত বিভাজন শুরু হয়। তাই কোষের অন্দরে রাসায়নিক বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে কি না, তার আভাস আগে থেকে পাওয়া সম্ভবই নয়। শুধুমাত্র জিনগত পরীক্ষায় সে অসাধ্যসাধন হতে পারে। ‘মিউটেশন টেস্টিং’ সে কাজই করবে।

‘মিউটেশন টেস্টিং’ হল ক্যানসার কোষের জিনে ঘটে যাওয়া অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা ত্রুটিগুলিকে খুঁজে বার করার একটি প্রক্রিয়া। জিনগত বদলই ক্যানসার কোষকে বাকি কোষগুলির থেকে আলাদা করে। সেই কোষটিকে চিনে নিতেই মিউটেশন টেস্ট করবেন গবেষকেরা।

মিউটেশন টেস্টের জন্য নির্দিষ্ট কিছু বায়োমার্কার ব্যবহার করা হতে পারে, যা দিয়ে ক্যানসার কোষকে আলাদা করে চেনা যাবে। তা ছাড়া কোষের নমুনা নিয়ে তার জিনগত উপাদান আলাদা করে পরীক্ষা করে দেখা হবে যে, সেখানে জিনের বিন্যাসে কিছু অদলবদল হয়েছে কি না। যদি পরিবর্তন দেখা যায়, তা হলে সতর্ক হতে হবে। আবার রক্তের নমুনা নিয়েও পরীক্ষা করা যাবে। বিশেষ রকম মার্কার ব্যবহার করে দেখা হবে, রক্তের মধ্যে ক্যানসার কোষের প্রোটিন রয়েছে কি না বা ক্যানসার কোষের ডিএনএ রক্তে মিশে রয়েছে কি না। লিউকেমিয়া বা কিছু লিম্ফোমার মতো রক্তের ক্যানসারের ক্ষেত্রে অস্থি-মজ্জার নমুনা নিয়েও মিউটেশন টেস্টিং করা যেতে পারে।

গবেষকেরা দাবি করেছেন, জিনগত পরীক্ষা করলে ধরা পড়বে কোন কোন জিনে বদল হচ্ছে। ঠিক সেই জায়গার কোষগুলিকে ধ্বংস করতে কী ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তা বোঝা যাবে। এতে যেমন ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার আগেই তাকে আয়ত্তে আনা সম্ভব হবে, তেমনই শরীরের সুস্থ কোষগুলি অক্ষত থাকবে। মিউটেশন টেস্টিং সর্ব স্তরে সফল হলে আগামী দিনে কর্কট রোগে মৃত্যুর হার কমবে বলেই আশা গবেষকদের।

Advertisement
আরও পড়ুন