Face Mask Detect Kidney Disease

মুখে মাস্ক পরলেই ধরা যাবে কিডনির রোগ! কম খরচে রোগ নির্ণয়ের উপায় খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা

রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। প্রস্রাবের নমুনাও পরীক্ষা করতে হবে না। শরীরে কিডনির রোগ বাসা বাঁধছে কি না, তা ধরা যাবে কেবল একটি মাস্ক পরলেই। নতুন উপায় আবিষ্কারের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৫ ১৬:৩৭
New study says a sensor in surgical mask can detect chronic kidney disease

মাস্ক কী ভাবে কিডনির রোগ ধরবে? ছবি: ফ্রিপিক।

মুখে মাস্ক পরলেই ধরা পড়বে ক্রনিক কিডনির রোগ? এমনও হয় নাকি। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, তেমনই এক পদ্ধতি আবিষ্কারের দাবি করেছেন আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা। সার্জিক্যাল ফেস-মাস্কই নাকি ধরতে পারবে কিডনির জটিল অসুখ। তার জন্য রক্ত বা প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা করার প্রয়োজন হবে না। কেবল শ্বাসপ্রশ্বাই যথেষ্ট। রোগীর শ্বাসেই লুকিয়ে রয়েছে যত রহস্য।

Advertisement

‘এসিএস সেন্সর’ নামক জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। ইতালীয় গবেষক কোরাডো ডি নাটালে এমন এক ধরনের সার্জিক্যাল মাস্ক বানিয়েছেন, যা দিয়ে কিছু ক্ষণ নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে। তার পর রোগীর শ্বাসের ধরন দেখে রোগ নির্ণয় করা যাবে।

মাস্ক কী ভাবে কিডনির রোগ ধরবে?

নাটালে বুঝিয়ে বললেন সেই পদ্ধতি। কিডনির অসুখ হলে রোগীর শ্বাসের সঙ্গে নাকি অ্যামোনিয়া বার হয়। কেবল অ্যামোনিয়া নয়, আরও নানা ধরনের গ্যাস ও রাসায়নিকও নাকি নির্গত হয়। মাস্কটি সেই সব রাসায়নিকের বিশ্লেষণ করে কিডনির রোগ হয়েছে কি না বা হলেও তা কোন পর্যায়ে রয়েছে, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারবে।

মাস্কটিতে ছোট্ট কয়েকটি রুপোর ইলেক্ট্রোড বসিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেই ইলেক্ট্রোডগুলিকে মুড়ে দিয়েছেন পলিমারের আস্তরণে। এই পলিমারের উপরেও কয়েক পোঁচ পরফাইরিনের স্তর বসিয়েছেন। এর কাজ হল শ্বাসের সঙ্গে যে রাসায়নিকগুলি বেরোচ্ছে, সেগুলিকে চিনে নেওয়া। এ বার ইলেক্ট্রোড যথাযথ তথ্য দিচ্ছে কি না, তা বুঝতে একটি ইলেক্ট্রোড রিডারও বসিয়েছেন সেই মাস্কে।

সার্জিক্যাল মাস্কে বসানো রয়েছে ইলেকট্রোড।

সার্জিক্যাল মাস্কে বসানো রয়েছে ইলেকট্রোড। ছবি: সংগৃহীত।

শতাধিক মানুষকে মাস্কটি পরিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ৮৪ শতাংশ ক্ষেত্রে মাস্কটি সঠিক ভাবে কাজ করছে। এমন অনেকের কিডনির রোগ শনাক্ত করা হয়েছে, যাঁরা রোগ সম্পর্কে আগে থেকে কিছুই জানতেন না। রোগ ধরা পড়ার পরে তাঁদের চিকিৎসাও শুরু হয়ে গিয়েছে।

নাটালে জানিয়েছেন, মাস্কটির আসল কাজ হল ‘মেটাবোলাইট’ চিহ্নিত করা। পাকস্থলীতে খাবার পাচনের সময়ে তা ভেঙে গিয়ে যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কণাগুলি বার হয়, সেগুলিকেই বলা মেটাবোলাইট। সেগুলি অ্যামাইনো অ্যাসিড, হরমোন, ভিটামিন, পাচিত খাবার বা শরীরে তৈরি কোনও রকম রাসায়নিক হতে পারে। কিডনির রোগ বা এমনই কোনও অসুখ হলে, শরীরে রাসায়নিকের মাত্রা বেড়ে যায়। যার মধ্যে কিডনির রোগ হলে অ্যামোনিয়া, ইথানল, প্রপানল ও অ্যাসিটোনের মতো রাসায়নিক তৈরি হয় শরীরে, যেগুলি শ্বাসের সঙ্গেও বার হয়। নতুন সার্জিক্যাল মাস্কটি এইসব রাসায়নিকগুলিকেই চিহ্নিত করবে। পাশাপাশি আরও কিছু গ্যাসও নির্গত হয় শ্বাসের সঙ্গে, সেগুলিকেও চিনবে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement
আরও পড়ুন