Mercury Pollution

দিল্লির বাতাস ভরে উঠেছে বিষাক্ত পারদে, শ্বাসের সঙ্গে ঢুকছে অহরহ, শরীরের কতটা ক্ষতি হতে পারে?

দিল্লির বাতাসে শুধু প্লাস্টিক নয়, ছড়িয়ে পড়ছে পারদও। কতটা বিপজ্জনক হতে পারে এই দূষণ?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৩
New study says, toxic metal mercury found in the Delhi’s air, how harmful is this for human health

বাতাসে বিষাক্ত পারদ, কতটা ক্ষতি হবে শরীরের? ফাইল চিত্র।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) কিংবা পরিবেশ নিয়ে গবেষণারত দেশের একাধিক সংস্থা বলছে, বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা ও বিষাক্ত গ্যাসের নিরিখে দিল্লি দেশের মধ্যে প্রথম। প্রতি মুহূর্তে বাতাসে মিশছে কার্বন-ডাই অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইডের মতো গ্যাস। রাস্তায় বেরোলেই নাক-মুখ জ্বালা করে বেশির ভাগ সময়েই। হাঁপানি বা সিওপিডির রোগীদের কষ্ট আরও বেশি। কয়েক মাস আগেই জানা গিয়েছে, দিল্লির বাতাসে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব রয়েছে। যা শ্বাসের সঙ্গে ঢুকছে শরীরে। সম্প্রতি পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিয়োরোলজির সমীক্ষা জানিয়েছে, কেবল গ্রিন হাউস গ্যাস বা প্লাস্টিক নয়, দিল্লির বাতাস ভরে উঠেছে বিষাক্ত পারদেও।

Advertisement

২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল অবধি সমীক্ষার রিপোর্ট জানিয়েছেন গবেষকেরা। ‘এয়ার কোয়ালিটি অ্যাটমসফিয়ার অ্যান্ড হেল্‌থ’ জার্নালে সে খবর প্রকাশিতও হয়েছে। সমীক্ষার ফল জানাচ্ছে, দিল্লিতে প্রতি ঘন মিটার বাতাসে পারদের মাত্রা ৬.৯ ন্যানোগ্রাম। উত্তরোত্তর তা বেড়ে চলেছে। পারদের উৎস হল যানবাহনের ধোঁয়া, জীবাশ্ম পোড়া ধোঁয়া এবং কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস।

রাজ্য পরিবেশ দফতরের কর্তারাই বলছেন, এ শহরের দূষণের সব থেকে বড় উৎস গাড়ি থেকে হওয়া দূষণ। কারণ, ডিজেলের মতো জ্বালানি পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইডের মতো দূষিত গ্যাস বেরোয়। তার উপরে গাড়ির ইঞ্জিন পুরনো হলে কিংবা রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো না হলে সেই দূষণের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে খেতের আগাছা পোড়ানো রয়েছেই। পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের চাষিরা খেতের আগাছা পুড়িয়ে ফসলের জমি তৈরি করে থাকেন। সেই আগাছা পোড়ানো ধোঁয়ার চাদর দিল্লির আকাশে দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। আগে শীতের শুরুতে দেখা গেলেও, এখন প্রায় সারা বছরই ধোঁয়াশার চাদর ঘিরে থাকে দিল্লিতে। এই ধোঁয়াতেই মিশে থাকে পারদ।

কার্বন বা সালফারের মতো পারদও মানব শরীরের জন্য বিপজ্জনক। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ধরে শ্বাসের সঙ্গে পারদ ঢুকে রক্তে মিশলে তা স্নায়ুতন্ত্রের উপর বড় প্রভাব ফেলবে। এর ফলে স্মৃতিনাশ বা ডিমেনশিয়ার প্রকোপ অনেক বেড়ে যাবে। দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হবে, চোখের সংক্রমণ জনিত নানা অসুখও মাথাচাড়া দিতে থাকবে। পারদ কিডনি এবং ফুসফুসের কোষ নষ্ট করে। এতে হাঁপানি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়বে। পারদের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে হার্টে। রক্তে পারদ জমতে থাকলে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা দেখা দেবে, যা থেকে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়বে। অন্তঃসত্ত্বাদের শরীরে পারদের আধিক্য ঘটলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে সদ্যোজাতের জটিল স্নায়বিক রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।

Advertisement
আরও পড়ুন