Alzheimer's Disease

অ্যালঝাইমার্স নির্মূল করার উপায় নিয়ে নতুন ভাবনা, মস্তিষ্কের ‘দুষ্ট’ প্রোটিনকে ঘায়েল করার ওষুধ আসছে

অ্যালঝাইমার্সের গতি শ্লথ করবে নতুন ওষুধ! এমনই দাবি গবেষকদের। মস্তিষ্কের ভিতরে মাথাচাড়া দেওয়া এক বিশেষ প্রোটিনকে ধরেবেঁধে রাখবে ওই ওষুধ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৮
Scientists have developed a promising new drug that seems to be effective to prevent Alzheimars disease

অ্যালঝাইমার্সের চিকিৎসায় নতুন পথের দিশা। ছবি: ফ্রিপিক।

স্মৃতির পাতা খালি হবে না। তার আগেই ‘দুষ্ট’ প্রোটিনকে কব্জা করে ফেলবে ‘এনইউ-৯’। এমন এক ওষুধ তৈরি হয়েছে, যা কি না অ্যালঝাইমার্স রোগের কারণ ওই প্রোটিনটিকেই সমূলে উৎখাত করবে বলে দাবি করা হয়েছে। অর্থাৎ, রোগ পাকাপোক্ত ভাবে থাবা গেড়ে বসার আগেই তার সম্ভাবনাটিকে বিনষ্ট করে দেবে।

Advertisement

আমেরিকার নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা ওষুধটি তৈরি করেছেন। ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে ওষুধটির কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এ বার মানুষের উপর পরীক্ষা শুরু হবে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, অ্যালঝাইমার্স রোগটিতে মস্তিষ্কে জিনের বিন্যাসে বদল আসে। এই বদলকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এক প্রকার অসম্ভব কাজ। তাই এর চিকিৎসাপদ্ধতিও জটিল।আসলে অ্যালঝাইমার্সে মস্তিষ্কের স্নায়ুর বিন্যাসে যে বদলটি আসে তার কারণ হল বিটা-অ্যামাইলয়েড অলিগোমার নামে এক ধরনের প্রোটিন। এই প্রোটিনটি মস্তিষ্কে অধিক মাত্রায় জমতে জমতে ‘প্লাক’ তৈরি করে। অ্যামাইলয়েড প্লাকের কারণে স্নায়ুতে জট পাকিয়ে যায়। ফলে স্নায়ু থেকে সঙ্কেত আদানপ্রদানে বাধা আসে। এতে মস্তিষ্কের কোষগুলিরও ক্ষয় হতে থাকে। তাতেই স্মৃতির পাতা ধূসর হয়ে যায়।

‘এনইউ-৯’ ওষুধটির কাজ হবে এই ‘প্লাক’ তৈরিতে বাধা দেওয়া। ওষুধটি এমন ভাবে তার জাল ছড়াবে, যাতে বিটা-অ্যামাইলয়েড প্রোটিনটি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। অ্যালঝাইমার্স রোগীর মস্তিষ্কের পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, প্রোটিনটি শুরুতে অল্প পরিমাণে তৈরি হয়। পরে স্নায়ুর জালে জড়িয়ে গিয়ে পরিমাণে বাড়তে শুরু করে। মস্তিষ্কের এক বিশেষ কোষ, যার নাম অ্য়ারিথ্রোসাইট, সেটি স্নায়ুর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রোটিনটি ওই কোষগুলিকে অধিক মাত্রায় সক্রিয় করে তোলে। অ্যারিথ্রোসাইট অতিরিক্ত মাত্রায় সক্রিয় হয়ে উঠলে মস্তিষ্কের ভিতরে প্রদাহ শুরু হয়। ফলে রোগী শুধু ভুলে যাওয়ার রোগে ভোগেন, তা-ই নয়, তাঁর আচার-আচরণেও বিস্তর বদল আসতে থাকে। মস্তিষ্কের অন্দরমহলে চলা এই পরিবর্তনটিকে থামিয়ে দেওয়াই হবে নতুন ওষুধের কাজ।

গবেষকেরা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে দেখেছেন, অ্যালঝাইমার্স রোগটি শুরুতে ধরা পড়ে যদি এই ওষুধের চিকিৎসা শুরু হয়, তা হলে প্রোটিনটি আর ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। ফলে রোগ ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। যদিও মানুষের উপর ওষুধটির পরীক্ষা এখনও শুরু হয়নি, সেটি হলে আরও বিস্তারিত ভাবে জানা যাবে।

Advertisement
আরও পড়ুন