World Health Organization

মদ, মিষ্টি পানীয়ের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব, দাম বাড়তে পারে তামাকজাত পণ্যেরও, পরামর্শ দিল কে?

অস্বাস্থ্যকর এই সব পানীয়ের উপর করের হার খুবই কম। বিশ্বের অনেক দেশেই মিষ্টি জাতীয় পানীয় ও অ্যালকোহলের উপরে কোনও করই ধার্য নেই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১১:৫৬
WHO calls for 50 Percent price increase on sugary drinks, alcohol and tobacco by

তামাক, মিষ্টি যুক্ত পানীয় ও মদের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিল কে? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মিষ্টি যুক্ত সব রকম পানীয়ের উপর ৫০ শতাংশ কর বৃদ্ধি পেতে পারে। ছাড় পাবে না মদ ও তামাকজাত পণ্যও। আগামী দশ বছরের মধ্যে দাম বৃদ্ধির করার প্রস্তাব দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।

Advertisement

অস্বাস্থ্যকর এই সব পানীয়ের উপর করের হার খুবই কম। বিশ্বের অনেক দেশেই মিষ্টি যুক্ত পানীয় ও অ্যালকোহলের উপরে কোনও করই ধার্য নেই। হু জানাচ্ছে, অত্যন্ত সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় মিষ্টি যুক্ত পানীয়, তামাক ও মদ্যপানের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ফলে বিশ্ব জুড়েই ডায়াবিটিস ও ক্যানসারের প্রকোপ দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারই সমীক্ষা জানাচ্ছে, বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর ৩০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মদ্যপানের কারণে। ৮০ লক্ষেরও বেশি মৃত্যুর কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যার মধ্যে মিষ্টি যুক্ত পানীয় ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের নাম তালিকায় প্রথমেই রয়েছে। অসংক্রামক রোগের প্রকোপ গত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার মধ্যে অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিসের মতো রোগ রয়েছে। তাই করের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে এই সংক্রান্ত রোগভোগে মৃত্যুর হার হ্রাস পাবে বলেই আশা প্রকাশ করেছে হু।

চিনি পুষ্টিহীন ক্যালোরি। খেলে ওজন বাড়ে। ডায়াবিটিস থাকলে বাড়ে তার প্রকোপ। এ ছাড়াও মাত্রাছাড়া খেলে হার্ট ও লিভার জখম হয়, হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে, কোলেস্টেরল–ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ে, বাড়ে কিছু ক্যানসারের আশঙ্কাও। ‘নেচার’ বিজ্ঞানপত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে নানা রোগে প্রতি বছর প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসেব মতো পুরুষদের দিনে ৯ চামচ ও মহিলাদের ৬ চামচের বেশি চিনি খাওয়া বারণ। কিন্তু অত্যধিক মিষ্টি দেওয়া পানীয়, সোডা, মদেও চিনির মাত্রা বেশি। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্তই চিনি ঢোকে শরীরে, যা বিষক্রিয়ার কারণ হয়ে ওঠে।

এমনকি লো-ফ্যাট খাবারেও কিন্তু চিনির মাত্রা বেশি। খাবারকে প্রসেস করে অতিরিক্ত ফ্যাট বার করে নিলে, তার স্বাদ–গন্ধ চলে যায় তলানিতে। সে সব ফেরত আনতে তখন তাতে মেশানো হয় হোয়াইট সুগার, ব্রাউন সুগার, হাই ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ। ফলে খাবার থেকে ফ্যাট বেরিয়ে গেলেও, ক্যালোরি কমে না। বরং পুষ্টি কমে যায়। লো–ফ্যাট খাবার খেলে তাড়াতাড়ি খিদে পায়। ফলে ওজন বাড়ে। ভিটামিন এ, ডি, ই, কে–র অভাব হতে পারে। কোলেস্টেরলের হিসেবে গোলমাল হতে পারে। বাড়তে পারে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা। আর যে হারে হার্টের রোগ, ডায়াবিটিস, স্থূলত্ব বেড়ে চলেছে, তাতে আগামী দশ বছরে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলেই মনে করছে হু। সে কারণেই কর বৃদ্ধির প্রস্তাব, যাতে এই সব পানীয় ও খাবার বেশি না খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়। মানুষের মধ্যে এই সচেতনতা বাড়লে ক্যানসার, ডায়াবিটিস, হার্ট এবং স্থূলত্বের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

Advertisement
আরও পড়ুন