Hepatitis D

‘বি’ বা ‘সি’ নয়, আসল খলনায়ক হেপাটাইটিস ‘ডি’, লিভার ক্যানসারের কারণ খুঁজে পেল হু

পাঁচ রকম হেপাটাইটিসের ভাইরাসের মধ্যে এমন একটি ভাইরাস আছে যা লিভারের ক্যানসারের জন্যও দায়ী। সেটি লিভারে সেঁধোলে ক্যানসারের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যাবে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৫ ১২:৫১
WHO has recently classified hepatitis D as carcinogenic that can cause Liver Cancer

লিভার ক্যানসারের কারণ একটি ভাইরাস, সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ছবি: ফ্রিপিক।

হেপাটাইটিস নিয়ে বিশ্ব জুড়েই হইচই চলছে। লিভারের মারাত্মক অসুখ হেপাটাইটিস ভাইরাস ঘটিত রোগ। কিন্তু সমস্যা হল, আর পাঁচটা ভাইরাস ঘটিত রোগের চেয়ে এটি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। এক বার হেপাটাইটিসের জীবাণু শরীরে বাসা বাঁধলে, লিভারের দফারফা করে তবেই ছাড়বে। পাঁচ রকম হেপাটাইটিসের জীবাণুকে সামাল দিতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছেন গবেষকেরা। একটি খাবার থেকে ছড়ায়, তো অন্যটি দূষিত জল থেকে, কোনওটি আবার রক্ত, দেহরস এমনকি আক্রান্তের ব্যবহার করা জিনিসপত্রও থেকেও। এ হেন রোগ নিয়ে যখন গবেষকেরা মাথা ঘামাচ্ছেন, তখন প্রকাশ্যে এসেছে আরও একটি তথ্য। হেপাটাইটিস থেকে জন্ডিস হতে পারে, লিভারের জটিল রোগ হতে পারে, এই অবধি জানা ছিল। কিন্তু পাঁচ রকম হেপাটাইটিসের ভাইরাসের মধ্যে এমন একটি ভাইরাস আছে, যা লিভারের ক্যানসারের জন্যও দায়ী। সেটি লিভারে সেঁধোলে ক্যানসারের ঝুঁকি বহু গুণে বেড়ে যাবে।

Advertisement

হেপাটাইটিস নিয়ে গবেষণার মাঝেই এই তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হেপাটাইটিস-এ, বি, সি, ডি এবং ই-এর মধ্যে আসল খলনায়ক হল হেপাটাইটিস ডি। এর ভাইরাস শরীরে ঘাপটি মেরে থাকে। লিভারের কোষ ধ্বংস করতে থাকে। হেপাটাইটিস ডি হলে লিভারে ক্ষত বা সিরোসিস ও তার থেকে ক্যানসারের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

হেপাটাইটিস ডি আবার একা কাজ করে না। তার দোসর হয় হেপাটাইটিস বি। এই দুই ভাইরাস একসঙ্গে আক্রমণ করলে প্রথমে জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়, তার পর ধীরে ধীরে তা ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস ও শেষে ক্যানসারে গিয়ে পৌঁছয়। গত বছরের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ ভাইরাল হেপাটাইটিসের শিকার হয়েছে, যাঁদের মধ্যে অন্তত ২.৯৮ কোটিরই হেপাটাইটিস বি ও ডি ছিল।

জলবাহিত হেপাটাইটিস এ এবং ই ভাইরাস আক্রমণ করলে সঠিক চিকিৎসায় সম্পূর্ণ সারানো সম্ভব। বিরল কয়েকটি ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা গেলেও সঠিক চিকিৎসায় ভাল ফল পাওয়া যায়। হেপাটাইটিস বি ও সি-র ক্ষত্রে চিকিৎসকদের কপালে ভাঁজ পড়ে। হেপাটাইটস ডি-র ক্ষেত্রে ১০০ জন আক্রান্ত হলে ৯০ জনেরই ক্রনিক লিভারের রোগ ধরা পড়ে। এই অসুখ ৬ মাসের কম সময় স্থায়ী হলে তা অ্যাকিউট, আরও বেশি হলে ক্রনিক।

কী থেকে ছড়ায় হেপাটাইটিস ডি?

আক্রান্তের রক্ত ও দেহরস থেকেই মূলত ছড়ায় হেপাটাইটিস ডি। ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ ভাগ করে ব্যবহার করা, অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক, বা আক্রান্ত মায়ের থেকে শিশুর মধ্যেও ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস ডি। সালোঁতে আক্রন্তের ব্যবহার করা জিনিস ভাগ করে নিলে বা উল্কি আঁকার সময়ে শুদ্ধতার অভাবেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। আর সংক্রমণ ঘটলে জন্ডিসের লক্ষণ তো দেখা দেবেই, পাশাপাশি খাবার বিস্বাদ লাগবে, অরুচি হবে, জ্বরজ্বর ভাব থাকবে, পেটে ব্যথা, বমি ভাব থাকবে।

হেপাটাইটিস বি ও সি-এর যেমন টিকা আছে, হেপাটাইটিস ডি-এর তেমন নেই। সে ক্ষেত্রে রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই চিকিৎসা করিয়ে যেতে হবে। লিভারের রোগ যদি বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে যায়, তা হলে লিভার প্রতিস্থাপন করাতে হতে পারে।

Advertisement
আরও পড়ুন