Blood Cancer Treatment

রক্তের ক্যানসারও নির্মূল হবে! টিউমার কোষ ধ্বংস করবে ‘ট্রোজ়ান হর্স’, নতুন ওষুধের পরীক্ষা শুরু হল

রক্তের ক্যানসারের সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপ হল মাল্টিপল মায়েলোমা। খুব দ্রুত ক্যানসার কোষ বিভাজিত হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। মায়েলোমা ধরা পড়লে তার নিরাময় খুব কঠিন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর প্রাণ সংশয়ের ঝুঁকি থাকে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৫ ১২:৪৭
Worlds first trojan horse Medicine to treat blood cancer without harming healthy tissue

রক্তের ক্যানসার নির্মূল করতে নতুন ওষুধ আসছে। ছবি: ফ্রিপিক।

রক্তের ক্যানসার ধরা পড়লে রোগীর আতঙ্কের শেষ থাকে না। মৃত্যুভয় গ্রাস করে সর্ব ক্ষণ। রক্তের ক্যানসার এত দ্রুত ছড়াতে থাকে যে, রোগীকে বাঁচানোর আর সময় পাওয়া যায় না বেশির ভাগ সময়েই। ভারতে ২০২৪-এ মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ‘কার টি-সেল থেরাপি’ দিয়ে রক্তের ক্যানসারের রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন। তাতে সাফল্যও পাওয়া গিয়েছিল। তবে ওই থেরাপি ব্যায়সাপেক্ষ এবং অত্যন্ত জটিল। তাই এ বার আরও এক ধরনের থেরাপি নিয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের চিকিৎসকেরা এমন এক ওষুধ তৈরির দাবি করেছেন, যা রক্তের ক্যানসারও নিরাময় করতে পারবে বলা হয়েছে।

Advertisement

ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্‌থ সার্ভিসের (এনএইচএস) তত্ত্বাবধানে ওষুধটি তৈরি করেছেন ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেল্‌থ অ্যান্ড কেয়ার এক্সেলেন্স’ –এর চিকিৎসকেরা। নতুন ওষুধটির নাম ‘বেলান্টামাব ম্যাফোডোটিন’, যাকে ‘ট্রোজ়ান হর্স’ নামে ডাকা হচ্ছে। এটি আসলে অ্যান্টিবডি থেরাপি, যাতে শরীরে মোনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ঢুকিয়ে ক্যানসার কোষগুলির বিভাজন ও বৃদ্ধি থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকেও (ইমিউন কোষ) সক্রিয় করে তোলা হবে। রেডিয়োথেরাপি বা কেমোথেরাপিতে যেমন ক্যানসার কোষ নষ্ট করতে গিয়ে তার চারপাশে থাকা সুস্থ কোষগুলিও নষ্ট হয়ে যায়, অ্য়ান্টিবডি থেরাপিতে তা হবে না। পুরোটাই হবে ‘টার্গেট থেরাপি’, যাতে একেবারে নিশানা করে শুধুমাত্র ক্যানসার কোষগুলিকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

রক্তের ক্যানসারের নানা ধরন হয়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপ হল মাল্টিপল মায়েলোমা। রক্তে প্লাজ়মা কোষ যখন অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়ে চলে তখন এই রোগ দেখা দেয়। এর ফলে শরীরের একাধিক অঙ্গ প্রভাবিত হয়। সেই সূত্রেই মায়েলোমা অসুখটির সঙ্গে ‘মাল্টিপল’ কথাটি যোগ করা হয়েছে। রোগটি কী ভাবে বা কেন হয়, সেই বিষয়ে এখনও ঠিক ভাবে কিছু জানা না গেলেও বলা হয়, জিনগত পরিবর্তনের (জেনেটিক মিউটেশন) একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।

রক্তের ক্যানসারের নানা ধরন হয়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপ হল মাল্টিপল মায়েলোমা। রক্তে প্লাজ়মা কোষ যখন অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়ে চলে তখন এই রোগ দেখা দেয়। এর ফলে শরীরের একাধিক অঙ্গ প্রভাবিত হয়। সেই সূত্রেই মায়েলোমা অসুখটির সঙ্গে ‘মাল্টিপল’ কথাটি যোগ করা হয়েছে। রোগটি কী ভাবে বা কেন হয়, সেই বিষয়ে এখনও ঠিক ভাবে কিছু জানা না গেলেও বলা হয়, জিনগত পরিবর্তনের (জেনেটিক মিউটেশন) একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।

কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?

মাল্টিপল মায়েলোমা-য় কয়েকটি লক্ষণ সাধারণত দেখা যায়। ক্লান্তি ভাব, রক্তাল্পতা, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে থাকা। অনেক সময়েই রক্তাল্পতার কারণে সাধারণ মানুষ কুলেখাড়ার রস বা ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ আয়রন ট্যাবলেট কিনে খান। কিন্তু সব ক্ষেত্রে যে রক্তে আয়রনের মাত্রা কমে গিয়ে রক্তাল্পতা হয়, তা নয়। ক্যানসারের কারণে রক্তের কোষগুলি নষ্ট হয়েও রক্তাল্পতার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

তা ছাড়া কোমরে, শিরদাঁড়ার আশপাশে এমনকি পাঁজরের দিকেও ব্যথা হয়, হাত পা ঝিনঝিন করার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। রোগীকে বার বার সংক্রমণে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। ক্রিয়েটিনিন-এর মাত্রা বেড়ে যায়, কিডনিতে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

এই রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রথমেই কিছু রক্তপরীক্ষা এবং বোন ম্যারো টেস্ট করা হয়। এই পরীক্ষায় যদি প্লাজ়মা কোষ দশ শতাংশের বেশি থাকে অথবা টিস্যু বায়পসি করে যদি প্লাজ়মা কোষের ক্লাস্টার পাওয়া যায়, তা হলে প্রাথমিক ভাবে ধরে নেওয়া হয়, রোগীর মাল্টিপল মায়েলোমা হয়েছে। এই রোগের চিকিৎসা খুব জটিল, অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনেরও দরকার হয়। সে ক্ষেত্রে নতুন ওষুধটি যদি ক্যানসার নিরাময় করতে সক্ষম হয়, তা হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন বলেই আশা রাখছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement
আরও পড়ুন