Gestational Diabetes

মায়ের ডায়াবিটিস থাকলে সন্তানেরও হতে পারে? অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?

হবু মায়ের রক্তে যদি শর্করা বাড়তে থাকে এবং গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবিটিস ধরা পড়ে, তা হলে গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে। কী কী শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্মাতে পারে শিশু?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ১২:৩০
Worried about rising blood sugar levels during pregnancy, Here\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s how to control gestational diabetes

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সুগার বাড়লে কী বিপদ হতে পারে? ফাইল চিত্র।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মায়ের যদি ডায়াবিটিস ধরা পড়ে, তা হলে কি সন্তানেরও হতে পারে? এই প্রশ্ন অনেক হবু মায়েরই। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শরীরে হরমোনের ওঠানামা হয়। শারীরিক ও মানসিক অনেক বদল আসে। ওই সময়ে হবু মা কী খাচ্ছেন, তাঁর নেশা করার অভ্যাস আছে কি না, রোজের যাপন পদ্ধতি কেমন, এই সব কিছুই কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যদি মায়ের রক্তে শর্করা বাড়তে থাকে এবং গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিস ধরা পড়ে, তা হলে গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি হতে পারে। নানা রকম শারীরিক সমস্যা নিয়ে জন্মাতে পারে শিশু।

Advertisement

গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিস ভাল লক্ষণ নয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘জেস্টেশনাল ডায়াবিটিস’। হবু মায়ের সুগার বেশি থাকলে গর্ভস্থ সন্তানের নানা রকম জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ মায়ের থেকে শিশুর রক্তেও অতিরিক্ত শর্করা পৌঁছে যায়। তাই গর্ভধারণের আগে রক্তে শর্করার মাত্রা কত, তা পরীক্ষা করানো যেমন জরুরি, তেমনই গর্ভাবস্থায় ডায়াবিটিস ধরা পড়লে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়ও জেনে নিতে হবে।

মায়ের ডায়াবিটিস থাকলে সন্তানের কী কী সমস্যা হতে পারে?

মায়ের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে তা প্ল্যাসেন্টা নিয়ে পৌঁছোয় শিশুর শরীরে। শিশুর অগ্ন্যাশয় এই অতিরিক্ত শর্করা ভেঙে দেওয়ার জন্য আরও বেশি ইনসুলিন তৈরি করে। ফলে এই অতিরিক্ত শর্করা ও ইনসুলিনের কারণে শিশুর শরীরে মেদ জমা হতে থাকে। জন্মানোর পরে শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল এই বিষয়ে বলেন, “মায়ের রক্তে সুগার খুব বেড়ে গেলে শিশু খুব বেশি ওজন নিয়ে জন্মাবে। দেখা যায়, চার থেকে সাড়ে চার কেজি অবধি ওজন হয় সদ্যোজাতের। সে ক্ষেত্রে প্রসবকালীন সময়ে জটিলতা আসতে পারে। আবার ‘আইইউজিআর’ হতে পারে, অর্থাৎ, শিশুর আকার ও ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম হতে পারে। ”

হবু মায়ের সুগার বেশি হয়ে গেলে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয়। না হলে, প্রসবের পরে সদ্যোজাতের রক্তে শর্করা আচমকা কমে যেতে পারে। একে বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, গর্ভকালীন ডায়াবিটিস থাকলে পরবর্তী সময়ে শিশুর স্থূলত্ব ও টাইপ ২ ডায়াবিটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আবার পলিসাইথেমিয়া হতে পারে শিশুর, সে ক্ষেত্রে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ কমে যায়। তার জন্যও নানা রোগ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে শিশুর জন্ডিস, শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি, কিছু গবেষণায় অটিজ়ম বা অন্যান্য স্নায়বিক সমস্যা ঝুঁকির কথাও বলা হয়েছে।

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?

আগে থেকে ডায়াবিটিস থাকলে ফাস্টিং ও পিপি সুগার ও থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি। আর আগে থেকে ডায়াবিটিস না থাকলে রক্তচাপ, ইসিজি, ইউরিয়া-ক্রিয়েটিনিন ও ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স টেস্ট, পিপি সুগার সুবই পরীক্ষা করাতে হবে। সুগারের গতিবিধির দিকে নজর রাখতে হয় নিয়মিত। জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হলে রোজ সকাল–দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়ার পর গ্লুকোমিটার যন্ত্রে সুগার মেপে দেখা হয়৷ ডায়াবিটিস থাকলে প্রথম ৪ সপ্তাহের মধ্যে ভ্রূণের সবচেয়ে ক্ষতি হয়। সে জন্য রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।

ওজন বশে রাখাও খুব জরুরি। গর্ভাবস্থায় সাধারণত ১০–১২ কেজির মতো ওজন বাড়ার কথা। কিন্তু হবু মায়ের ওজন যদি আগে থেকেই খুব বেশি থাকে, তা হলে খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মদ্যপান, ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। সব রকম প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় বন্ধ রাখতে হবে। দিনে ৩০ মিনিট করে হলেও ব্যায়াম করতে হবে। সেই সঙ্গে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন