Ranthambore National Park

হুডখোলা গাড়ি বিকল হয়ে গেল রণথম্ভৌর জঙ্গলে, ২০ জন যাত্রীকে ফেলে পলাতক গাইড! তার পর...

রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যানের মতো বিখ্যাত জঙ্গলে সাফারি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে বন বিভাগ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১৭:২৬
A guide abandons tourist as safari car breaks down in Ranthambore

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

হুডখোলা গাড়ি, তাতে সওয়ার ২০ জন পর্যটক। চারপাশে ঘন জঙ্গল। সেই জঙ্গলের কোথায় রয়েছে বাঘ, তা জানা নেই কারও! আচমকা জঙ্গলের মধ্যে থেমে যায় গাড়িটি। তখন সন্ধ্যা ৬টা। রাজস্থানের রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যানে আটকে পড়া গাড়িতে ২০ জন পর্যটককে ফেলে চম্পট দেন গাইড!

Advertisement

মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই, কারও সঙ্গে যোগাযোগ করার উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না কোনও পর্যটকই। এ দিকে অন্ধকার নেমে আসছে। কী ভাবে বিপদ থেকে মুক্তি মিলবে, সেই চিন্তায় পড়েন তাঁরা। বেশি আওয়াজ করাও যাবে না। সকলের মনে ভয়, আওয়াজ শুনে অতর্কিতে চলে আসতে পারে বাঘ। সঙ্গে থাকা সাত মাসের শিশু কেঁদে উঠলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন সকলে। বাবা-মা কোনও রকমে চুপ করাচ্ছেন তাকে। উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক, ভয়ে প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা জঙ্গলে অরক্ষিত অবস্থায় কাটালেন ২০ জন!

শনিবার সন্ধ্যায় রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যান ঘুরতে গিয়েছিলেন ওই পর্যটকেরা। অভিযোগ, জঙ্গলের মধ্যে গাড়ি যখন আটকে যায়, তখন ওই পর্যটকদের সঙ্গে থাকা গাইড সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান। অনেক ক্ষণ পর মুক্তির প্রথম সুযোগ আসে। ওই পথে অন্য একটি গাড়িকে দেখতে পান আটকে থাকা পর্যটকেরা। সেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে সাহায্য চাওয়া হয়। তবে ওই গাড়িতে এক জনের বেশি লোকের জায়গা নেই। অগত্যা সকলে মিলে ঠিক করে তাঁদের মধ্যে থেকে এক জনকে পাঠানো হয় সাহায্য চাওয়ার জন্য। তিনি যখন জাতীয় উদ্যানের মূল ফটকের সামনে পৌঁছোন তখন কয়েক জনকে দেখতে পান। অভিযোগ, তাঁদের কাছে গোটা ঘটনা জানিয়েও লাভ হয়নি। মেলেনি সাহায্য। চৌকিতে থাকা কর্মীরা জানিয়ে দেন, এটা তাঁদের কাজ নয়!

শেষ পর্যন্ত পৌনে ৮টা নাগাদ উদ্ধারকারী দল পৌঁছোয় ওই আটকে থাকা পর্যটকদের কাছে। নতুন গাড়িতে করে তাঁদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়। তবে ফেরার পথে প্রতি পদে পদে বিপদ ঘিরে রেখেছিল সকলকে। এক দিকে, অন্ধকার অন্য দিকে বিকল হয়ে যায় উদ্ধারকারী দলের গাড়ির হেডলাইটও। চালক এক হাতে স্টিয়ারিং এবং অন্য হাতে টর্চ জ্বালিয়ে কোনও রকমে পর্যটকদের জঙ্গল থেকে বার করে আনেন!

রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যানের মতো বিখ্যাত জঙ্গলে সাফারি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ওই জঙ্গল ৭০টি বাঘ এবং ১৩০টি চিতাবাঘের আবাসস্থল। বন বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, শনিবারের ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই চৌকিতে সে সময় একটি গাড়ি থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না। পরে একটি গাড়ি আসে, তবে সেটি উদ্ধারকাজে যেতে রাজি হয়নি। ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিন ক্যান্টারচালক এবং গাইডকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

রণথম্ভৌর জাতীয় উদ্যানে বর্তমানে পর্যটক এবং বনকর্মীদের ব্যবহারের জন্য ২৬৯টি জিপসি এবং ২৮৭টি ক্যান্টর রয়েছে। তবে প্রায় সব ক’টির অবস্থাই জরাজীর্ণ বলে অভিযোগ।

Advertisement
আরও পড়ুন