রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এ বার জামিন অযোগ্য ধারায় পরোয়ানা জারি হল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ‘খুনের মামলায়’ অভিযুক্ত বলে বিপাকে পড়েন রাহুল। সাত বছর পুরনো সেই মানহানি মামলায় ঝাড়খণ্ডের চাইবাসার এমপি-এমএলএ আদালত রাহুলকে আগামী ২৬ জুন সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
২০১৮ সালের ২৮ মার্চ কংগ্রেসের এক বৈঠকে রাহুলের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সূত্রপাত। সেই বৈঠকে কংগ্রেস নেতা সরাসরি শাহকে নিশানা করেছিলেন। সেই সময় শাহ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ছিলেন। রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, এক জন খুনের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি কী ভাবে বিজেপির সভাপতি হতে পারেন? কংগ্রেস নেতার এই মন্তব্যের পরেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মামলাকারী বিজেপি নেতা প্রতাপ কাঠিয়ারের অভিযোগ, রাহুলের মন্তব্য সকল বিজেপি কর্মীর ভাবাবেগে আঘাত করে। মানহানি হয়। চাইবাসার ‘চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট’ (সিজেএম)-এর এজলাসে ২০১৮ সালে ৯ জুলাই অভিযোগ দায়ের হয়।
তবে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালে মানহানি মামলাটি রাঁচীর এমপি-এমএলএ আদালতে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে এত দিন পর আবার মামলাটিকে চাইবাসার এমপি-এমএলএ আদালত ফেরৎ পাঠানো হল। সেই মামলার শুনানিতেই রাহুলের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় পরোয়ানা জারি করল আদালত। পাঠানো হয়েছে সমনও।
শাহের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ অতীতেও উঠেছিল রাহুলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ২০১৮ সালে কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে শাহের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা বিজয় মিশ্র রাহুলের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগে সুলতানপুর আদালতে মামলা করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আদালত রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে ব্যক্তিগত হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ তা পালন না করায় ২৬ জুলাই হাজিরার ‘শেষ সুযোগ’ দিয়েছে সুলতানপুর আদালত। ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটের প্রচারের সময়ও কর্নাটক বিজেপির তরফে রাহুলের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদী’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে গত বছরের ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা দু’বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। গুজরাতের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদীর দায়ের করা ওই ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী রাহুলের লোকসভার সাংসদ পদও বাতিল করা হয়েছিল। এর পর গুজরাত হাই কোর্ট সাজা বহাল রাখলেও গত বছরের ৪ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আরএস গবই এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চ সুরাত আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। ফলে জেলযাত্রা থেকে রেহাইয়ের পাশাপাশি সাংসদ পদও ফিরে পান রাহুল।