China on Pentagon Report

ভারতকে সতর্ক করা মার্কিন রিপোর্ট খারিজ করে পাল্টা বার্তা দিল চিন! অরুণাচলে নজর এবং পাকিস্তান-প্রীতি নিয়ে কী যুক্তি

পেন্টাগনের রিপোর্টে ভারত-চিন সম্পর্ক এবং চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে একাধিক দাবি করা হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসে সেই রিপোর্ট পেশের পর বিরোধিতা করে বিবৃতি দিল বেজিং।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:০১
(বাঁ দিক থেকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

(বাঁ দিক থেকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভারতের অরুণাচল প্রদেশের দিকে চিনের নজর এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে একটি রিপোর্ট পেশ করেছিল পেন্টাগন। বৃহস্পতিবার সেই রিপোর্ট খারিজ করে দিয়ে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে চিন। মার্কিন রিপোর্টের বিরোধিতা করা হয়েছে। বার্তা দেওয়া হয়েছে ভারতকেও। দাবি, ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত পরিস্থিতি আপাতত একেবারেই স্থিতিশীল।

Advertisement

পেন্টাগনের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ভারতের সঙ্গে সীমান্তের উত্তেজনা কমিয়ে আসলে ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে দুর্বল করতে চাইছে চিন। সেই সঙ্গে সামরিক এবং গোয়েন্দা তৎপরতার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতা সমানতালে বেড়ে চলেছে, যা ভারতের পক্ষে উদ্বেগের। এ ছাড়াও রিপোর্টে বলা হয়, আগামী কয়েক বছরে যে সমস্ত লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বেজিং, তার মধ্যে অন্যতম ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের দখলে আনা। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন চিনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র লিন জিয়ান। তিনি বলেন, ‘‘চিনের প্রতিরক্ষা নীতিকে বিকৃত করেছে পেন্টাগনের রিপোর্ট। অন্য দেশের সঙ্গে চিনের সম্পর্কে তা বিরোধের বীজ বপন করছে। এ ভাবে আসলে সামরিক আধিপত্য বজায় রাখার অজুহাত খুঁজছে আমেরিকা।’’

বেজিংয়ের বক্তব্য, কৌশলগত ভাবে এবং দূরদর্শিতার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করে চলে চিন। কথোপকথন আরও জোরদার করতে, পারস্পরিক ভরসা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এবং যাবতীয় বিরোধ মেটাতে তারা প্রস্তুত। ভারতের সঙ্গে স্থিতিশীল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চায় চিন। দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতিও আপাতত স্থিতিশীল। এ বিষয়ে অন্য যে কোনও দেশের ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্যের বিরোধিতা করছে বেজিং।

মার্কিন রিপোর্টে চিন-পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতার একাধিক নজির উল্লেখ করা হয়েছে। কী ভাবে দিনের পর দিন পাকিস্তান সামরিক সরঞ্জাম কিনে চলেছে চিনের কাছ থেকে, যুদ্ধবিমান, সশস্ত্র ড্রোন এবং আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কী ভাবে ইসলামাবাদে সরবরাহ করেছে বেজিং, তা বিশদে দেখানো হয়েছে। চিন-ভারত সীমান্ত সংঘর্ষ এবং তাতে বর্তমান স্থিতিশীলতার অন্য কারণ ব্যাখ্যা করেছে পেন্টাগন। দাবি, ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে যখন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়েছিল ভারত এবং চিন, তখনই কাজ়ানে ব্রিক্‌স সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মুখোমুখি হন। সম্পর্ক শোধরানোর জন্য তখন তাই একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছিল। আদতে চিনের লক্ষ্য যে ভিন্ন, মার্কিন রিপোর্টে তার ইঙ্গিত রয়েছে। ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত পেন্টাগনের রিপোর্ট নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে চিন প্রতিবাদ করল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প কুর্সিতে বসার পর ভারতের সঙ্গে নানা কারণে আমেরিকার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। রাশিয়ার খনিজ তেল কেনায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। পরিবর্তে চিনের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠতা কিছুটা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে পেন্টাগনের রিপোর্টের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন