3 of Diamond worker's family die

হিরের দোকানের কর্মচারীর অভাবের সংসার, বিষ খেলেন দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে

পুলিশ সূত্রে খবর, বিষপানের ঠিক আগে বিনু ফোন করেছিলেন ভাই প্রবীণকে। বলেছিলেন, তাঁদের অবর্তমানে দুই সন্তানের যেন দেখভাল করেন। এর পরেই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের ট্যাবলেট খান তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ১৫:৩৯
representational image

— প্রতীকী ছবি।

হিরে শিল্পে কর্মরত এক ব্যক্তির স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা। ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাতের সুরাতে। ২ সন্তান এবং স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। হিরে শিল্পে কর্মরত ৫৫ বছরের বিনু মোরদিয়া হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, অভাবের তাড়নায় চরম সিদ্ধান্ত নেন বিনু।

সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবির অন্যতম জনপ্রিয় গানের দু’টি লাইন ছিল, ‘হিরার খনির মজুর হয়ে কানাকড়ি নাই’। বাস্তবেও যেন সত্যি হয়ে উঠে এল সেই গানের লাইন। সুরাতে সংসারের অভাব ঘোচাতে না পেরে পরিবার নিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন হিরে শিল্পে কর্মরত বিনু।

Advertisement

স্ত্রী, ২ ছেলে এবং ২ মেয়েকে নিয়ে সংসার হিরে শিল্পী বিনুর। মাসে আয় মেরেকেটে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু অগ্নিমূল্যের বাজারে এই অর্থে ৬ জনের সংসার চালানো সহজ নয়। শত চেষ্টাতেও তাই পরিবারের অভাব ঘোচানো যায়নি। শেষ পর্যন্ত হতাশ হয়ে চরম সিদ্ধান্ত নেন বিনু।

২ সন্তানকে বাড়িতে রেখে ২ ছেলেমেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় তিনি চলে যান একটি নির্জন জায়গায়। সেখানে গিয়ে চার জনে মিলে বিষ পান করেন। এই ঘটনা আঁচ করতে পেরে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তড়িঘড়ি ৪ জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই পর পর মৃত্যু হয় ৫০ বছরের স্ত্রী সারদাবেন, বড় ছেলে ২০ বছরের কৃষ এবং ১৫ বছরের কন্যা সেনিতার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বিনু।

পুলিশের এসিপি পিকে পটেল জানিয়েছেন, সম্ভবত পারিবারিক অভাবের কারণেই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিনু। তিনি বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন আরও দুই সন্তানকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষপানের ঠিক আগে বিনু ফোন করেছিলেন সম্পর্কে তাঁর ১ ভাই প্রবীণকে। বলেছিলেন, তাঁদের অবর্তমানে তাঁদের ২ সন্তানের যেন দেখভাল করেন। এর পরেই একসঙ্গে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের ট্যাবলেট খান তাঁরা।

খবর পেয়ে ভাইকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন প্রবীণ। তিনি বলেন, ‘‘বিনুভাই আমাদের কিছুই বলতেন না। তাই ঠিক কী হয়েছে তা বুঝতে আমাদের সময় লেগেছে। শুনছি, আর্থিক অনটনের কথা। বিনুভাই আমাদের এক বারের জন্যও এ কথা বলেননি। আমরা জানতে পারলেই ওঁকে সাহায্য করতাম।’’

হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে বিনুর অপর এক ভাই দাবি করেছেন, হিরে শিল্পী হিসাবে কাজ করে বিনুর মাসে আয় ছিল ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। এই টাকায় ৬ জনের সংসার চালানো অত্যন্ত কঠিন। অনেক চেষ্টা করেও রোজগার না বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনু মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বলেও সেই ভাইয়ের দাবি।

Advertisement
আরও পড়ুন